নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে সবাইকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে উপস্থিত সাংসদ শামীম ওসমানসহ নারায়ণগঞ্জের নেতারাও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে গণভবনে আইভী, শামীম ওসমানসহ নারায়ণগঞ্জের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত চারজন নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দল সেলিনা হায়াৎ আইভীকে মনোনয়ন দিয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা পার্টির সভাপতির কাছে সবাই অঙ্গীকার করেছি, ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সবাই ঐক্যবদ্ধ। সবাই এ ব্যাপারে সমর্থন দিয়েছে। নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে দ্বিমতের কোনো অবকাশ নেই। দল করলে দলের নিয়ম-শৃঙ্খলা সবাইকে মানতে হবে।’ বৈঠক সূত্র জানায়, আইভীর মনোনয়ন দেওয়ার বিরোধিতা করে শামীম ওসমান বলেন যে, আইভী জয় বাংলা স্লোগানকে অপমান করেছেন। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে গালিগালাজ করেছেন। এ বিষয়ে পত্রিকার কপি দেখানোরও চেষ্টা করেন তিনি। এর জবাবে আইভী বলেন, তিনি বলেছেন যে জয় বাংলা আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগান না। এটা সর্বজনীন এবং সব মানুষের। দলীয় প্রধানকে গালি দেওয়ার জবাব দিতে গিয়ে তিনি কিছুটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, তাঁর বাবা আলী আহাম্মদ চুনকা বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করেছেন। তিনি নিজে শেখ হাসিনার আশীর্বাদ নিয়ে রাজনীতিতে এসেছেন। দলীয় প্রধানকে গালি দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করতে পারলে তিনি নির্বাচন করবেন না। এই অপবাদ তিনি বহন করতে পারবেন না। বৈঠক সূত্র জানায়, দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা এই পর্যায়ে শামীম ওসমানকে তিরস্কার করেন এবং আইভীর পক্ষাবলম্বন করে বক্তব্য দেন। বৈঠক সূত্র আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী আইভীর মনোনয়নের যৌক্তিকতা বোঝাতে গিয়ে বলেন, ফুটবল খেলায় গোল করতে হলে স্ট্রাইকার দরকার হয়। তিনি সব দিক থেকে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন আইভী হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের স্ট্রাইকার। সব বিবেচনা করেই তিনি মনোনয়ন দিয়েছেন। তাঁকে জয়ী করার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল রাত সোয়া আটটার দিকে বৈঠক শুরু হয়। আইভী ও শামীম ওসমান ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাসহ প্রায় ২৫-৩০ জন অংশ নেন। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।