সপ্তম দেশ হিসেবে ৪০০ টেস্টের মাইলফলক স্পর্শ করলো পাকিস্তান। আর তাদের ল্যান্ডমার্কের ম্যাচটির বিশেষত্ব অন্যখানেও। এটি ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় দিবারাত্রির টেস্ট ম্যাচ। নিজেদের ৪০০তম টেস্টে দুবাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামে তারা। পাকিস্তানের চেয়ে বেশি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা ইংল্যান্ড (৯৭৬), অস্ট্রেলিয়া (৭৯১), ওয়েস্ট ইন্ডিজ (৫১৬), ভারত (৫০২), নিউজিল্যান্ড (৪১৫) ও দক্ষিণ আফ্রিকার (৪০২)। তবে অন্য পরিসংখ্যানে ভারত নিউজিল্যান্ডকে পেছনে রেখেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের টেস্ট অভিষেক ১৯৫২ সালে। নিজেদের ৩৯৯ টেস্টে পাকিস্তান জয় দেখেছে ১২৮ বার। শুরুর ৩৯৯ টেস্টে ভারতের জয় ৮৭টি আর নিউজিল্যান্ডের ৮০। ১৯৫৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত পাকিস্তান সবচেয়ে বেশি ৮১টি টেস্ট খেলেছে ইংল্যান্ডের সঙ্গে। প্রতিবেশী দেশ ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলেছে তারা সমান ৫৯টি টেস্ট। ১২৮টি জয় দেখেছে তারা ৩৯৯ ম্যাচে। এ সময় অস্ট্রেলিয়া ১৭৬, ইংল্যান্ড ১৬০, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪৬ ও দক্ষিণ আফ্রিকা ১৪৪টি জয় দেখেছিল। পাকিস্তান প্রতিপক্ষ মাঠে জয় দেখেছে ৫৭টি। এমন তালিকায় এশিয়ান দলগুলো থেকে অনেকটাই এগিয়ে তারা। অ্যাওয়ে টেস্টে পাকিস্তানের হারজিতের অনুপাত ০.৬৭৮ (৫৭ জয় ৮৪ হার)। পাকিস্তানের চেয়ে শ্রেয় অনুপাত কেবল অস্ট্রেলিয়া (১.২০৩), ইংল্যান্ড ০.৮৭৭) ও দক্ষিণ আফ্রিকার (০.৮২৫)। আর ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়া বাকি সব টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের হারের চেয়ে জয়ের সংখ্যাটা বেশি। সফল অধিনায়ক ২.৩৩ হারজিতের অনুপাত নিয়ে টেস্টে পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক জাভেদ মিঁয়াদাদ। কমপক্ষে ১৫ ম্যাচে অধিনায়কদের মধ্যে মুশতাক মোহাম্মদের নাম তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। ১৯ ম্যাচে ৪ হারের বিপরীতে অধিনায়ক মুশতাক মোহাম্মদ জয় দেখেছেন ৮ বার। তবে পাকিস্তানের অ্যাওয়ে ম্যাচে সবচেয়ে সফল মিসবাহ উল হক। মিসবাহর নেতৃত্বে প্রতিপক্ষ মাঠে ১১টি জয় দেখেছে পাকিস্তান। অধিনায়ক সেলিম মালিক ও ওয়াসিম আকরামের এমন জয় ৬টি করে। আর ইমরান খান, ইনজামাম উল হক ও ওয়াকার ইউনুসের নেতৃত্বে ৫টি করে জয় দেখেছে পাকিস্তান। পেস-রত্ন টেস্টে ৩৫০ উইকেটের কৃতিত্ব রয়েছে পাকিস্তানের তিনজন ফাস্ট বোলারের। তাদের প্রত্যেকের গড় ২৪.০০-এর কম। টেস্ট ইতিহাসে এমন কৃতিত্ব রয়েছে মাত্রই ১০ জন পেস বোলারের। কোনো দেশের টেস্ট ইতিহাসে দুই-এর বেশি পেসারের এমন রেকর্ড নেই। পাকিস্তানের মোট উইকেটের ৬০% শিকার পেস বোলারদের। উইকেট প্রতি তাদের রানের গড় ৩০.৪৭। স্পিনারদের এমন গড়টা ৩৩.২০। ভালো-মন্দ ৫০ টেস্টের স্পেলে পাকিস্তানের সেরা স্মৃতিটা ১৯৯০ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত সময়ের। এ সময় ৫০ ম্যাচে ১২ হারের বিপরীতে তারা জয় কুড়ায় ২৪টি। আর পাকিস্তানের বাজে স্মৃতিটা ২০০৪ থেকে ২০১০ পর্যন্ত সময়ের। এ সময় ৫০ ম্যাচে ২৩টি হার দেখে তারা। টানা সর্বাধিক ৬ জয়ের রেকর্ড রয়েছে তাদের। ২০০১ সালের মে থেকে পরের বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইংল্যান্ড (১), বাংলাদেশ (৩) ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের (১) বিপক্ষে এমন কৃতিত্ব দেখায় পাকিস্তান। বিপরীত রেকর্ডে ১৯৯৯ সালের নভেম্বর থেকে পরের বছর মার্চ পর্যন্ত টানা পাঁচ হারের ভোগান্তি রয়েছে পাকদের। ১৯৮৬ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৮৮ সালের এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১৬ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড রয়েছে পাকিস্তানের। এ সময় তারা দেখে ৪টি জয় ও ১২টি ড্র। সেরার সেরা
পাকিস্তানের টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ১৭ বার ম্যাচসেরার পুরস্কারের কৃতিত্বটা পেস লিজেন্ড ওয়াসিম আকরামের। আর সর্বাধিক ৮বার সিরিজ সেরা পুরস্কারের গৌরব লিজেন্ডারি ক্রিকেটার ইমরান খানের। আকরাম ১২ বার ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন প্রতিপক্ষ মাঠে। অ্যাওয়ে ম্যাচে ৬ বার এ পুরস্কারের গৌরব রয়েছে ইমরান খান ও ইউনুস খানের। ইতিহাসে আকরামের চেয়ে বেশি বার এমন কৃতিত্ব রয়েছে কেবল দক্ষিণ আফ্রিকার অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিস (২৩) ও শ্রীলঙ্কার স্পিন লিজেন্ড মুত্তিয়া মুরলিধরনের। অস্ট্রেলিয়ার লেগস্পিন গ্রেট শেন ওয়ার্নও ক্যারিয়ারে ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন ১৭ বার। টেস্ট ইতিহাসে ইমরান খানের চেয়ে বেশিবার সিরিজ সেরা পুরস্কার দেখেছেন কেবল মুরলিধরন (১১) ও জ্যাক ক্যালিস (৯)। নিউজিল্যান্ডের পেস লিজেন্ড রিচার্ড হ্যাডলি ও অজি স্পিনার শেন ওয়ার্নও ক্যারিয়ারে এ পুরস্কার জেতেন ৮ বার। পাকিস্তানের সারসংক্ষেপ প্রতিপক্ষ ম্যাচ জয় হার ড্র জয়:হার সাল অস্ট্রেলিয়া ৫৯ ১৪ ২৮ ১৭ ০.৫০ ১৯৫৬-১৪ বাংলাদেশ ১০ ৯ ০ ১ – ২০০১-১৫ ইংল্যান্ড ৮১ ২০ ২৪ ৩৭ ০.৮৩ ১৯৫৪-১৬ ভারত ৫৯ ১২ ৯ ৩৮ ১.৩৩ ১৯৫২-২০০৭ নিউজিল্যান্ড ৫৩ ২৪ ৮ ২১ ৩.০০ ১৯৫৫-১৪ দক্ষিণ আফ্রিকা ২৩ ৪ ১২ ৭ ০.৩৩ ১৯৯৫-১৩ শ্রীলঙ্কা ৫১ ১৯ ১৪ ১৮ ১.৩৫ ১৯৮২-১৫ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪৬ ১৬ ১৫ ১৫ ১.০৬ ১৯৫৮-১৬ জিম্বাবুয়ে ১৭ ১০ ৩ ৪ ৩.৩০ ১৯৯৩-১৩
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.