শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সকল সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের আগামী ছয় মাসের মধ্যে নীতিমালার বিধান অনুসারে এই মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে নীতিমালার বিধানগুলো বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, ২০১৪ সালে গৃহকর্মীদের জন্য নীতিমালা প্রণয়নে রুল জারি করা হয়েছিল। এরপর সরকার ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা-২০১৫’ প্রণয়ন করে। যা ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
যেখানে বলা হয়েছে, সব সিটি কর্পোরেশনকে গৃহকর্মীদের একটি তালিকা করতে হবে। এছাড়া প্রত্যেক মাসের ৭ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ, শ্রম আইন অনুসরণ, ১২ বছরের কম বয়সী শিশুকে হালকা কাজে নিয়োগের ক্ষেত্রে অভিভাবকের সঙ্গে আলোচনা, বেতনসহ ছুটি ভোগ, চিকিৎসার ব্যবস্থা, দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার দেয়া হয়।
নির্যাতিত গহকর্মীর অভিযোগ সংশ্লিষ্ট থানা যাতে গ্রহণ করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া, যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয়ে মামলা পরিচালনা ও খারাপ আচরণের কারণে গৃহকর্মী কাজ ছেড়ে চলে গেলে থানায় অবহিতকরণ ও গৃহকর্মীদের সহায়তার জন্য হেল্প লাইন চালুর কথাও নীতিমালায় বলা হয়।
এর আগে ২০১৪ সালের ১ জুলাই গৃহকর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আইন প্রণয়নে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে গৃহকর্মীদের নিরাপত্তা ও অধিকার সংক্রান্ত পলিসি এবং শিশুশ্রম নীতিমালা কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় আইন তৈরির পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, আইন, শ্রম ও নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এ সময় চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সেই রুলের শুনানি শেষে আদালত এই রায় দেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর ‘গৃহকর্মী শিশুরা ঘরের ভেতরে, আইনের বাইরে’ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। সেই প্রতিবেদন যুক্ত করে ২০১৪ সালের ১২ জুন গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এ রিট দায়ের করে।