হবিগঞ্জের আলোচিত স্কুলছাত্র তৌকির হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলায় অপর ৮ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। গতকাল দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- রনি, হেলাল উদ্দিন তুর্কি, আকতার মিয়া, সাদ্দাম ও নিয়াজ। এর মাঝে আকতার ও নিয়াজ ছাড়া বাকি ৩ জন ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, হবিগঞ্জ শহরের ইনাতাবাদ এলাকার বাসিন্দা আবদুল বারিকের ছেলে হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র কায়সার আহমেদ তৌকিরের কাছে আসামিদের কয়েকজন বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করতো। অনেক সময় তারা টাকা ছিনিয়েও নিতো। ২০০৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঈদ উপলক্ষে বাণিজ্যিক এলাকার একটি মার্কেটে কেনাকাটা করতে যায় তৌকির। এ সময় আসামিদের কয়েকজন তার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করে। সে ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে বিষয়টি তার বাবাকে জানায়। তিনি তাদের অভিভাবকদের বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেন। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ২৪শে সেপ্টেম্বর বিকালে তার সহপাঠী নিয়াজ মোবাইল ফোনে তাকে হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের গেটে যেতে বলে। বন্ধুর ফোন পেয়ে সে রিকশাযোগে বিদ্যালয়ের কাছে তিনকোণা পুকুরপাড় এলাকায় পৌঁছলে রনি ও হেলাল উদ্দিন তুর্কি তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। তাদেরকে সহযোগিতা করে আক্তার মিয়া। এসে তৌকির গুরুতর আহত হলে তাকে প্রথমে সদর আধুনিক হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাকে ঢাকায় নেয়ার পথে রাত ৮টার দিকে সে মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আবদুল বারিক বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তদন্তকালে এজাহারভুক্ত জিয়াউর রহমান নামে একজনকে বাদ দিয়ে আরো দুইজনকে সংযুক্ত করে মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। তাদের মাঝে রনি, তুর্কি ও সাদ্দাম ঘটনার পর থেকেই পলাতক আছে। অপর আসামি ইদু মিয়া, আক্তার মিয়া, মোশাররফ, নিয়াজ, উজ্জ্বল, শাহনুর, আবদুল গফুর, নানু মিয়া, টিটু ওরফে তাহির আলী ও রিপন আহমেদ বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেন। পরে তারা জামিনে মুক্তি পান। রায় ঘোষণার সময় পলাতক ৩ জন ছাড়া বাকিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.