জার্মানির হারৎস অঞ্চলে ত্রিশে এপ্রিলের রাতটিতে বলে ভালপুর্গিস নাইট৷ এদিন মানুষজন ডাইনি সাজে৷ ইউরোপে এ ধরনের আরো অনেক আজগুবি উৎসব আছে৷
সপ্তদশ শতাব্দী থেকে নাকি ডাইনিরা হারৎস অঞ্চলের বনে-পাহাড়ে আগুন জ্বালিয়ে ‘শয়তানের সঙ্গে মোচ্ছব করে থাকে’৷ ত্রিশে এপ্রিল হাজার হাজার অতিথি আসেন ব্রকেন পাহাড়ের বিশটি স্থানে ভালপুর্গিস নিশি উদযাপন দেখতে৷ কেন্দ্রীয় স্থলটি হলো হারৎস পর্বতমালার ডাইনি নাচের অঙ্গণ, যেখানে প্রাচীন জার্মান উপজাতিরা তাদের নিজস্ব পরব পালন করত৷
এ হলো সেই জগৎবিখ্যাত টমেটো যুদ্ধ! ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে টন টন পাকা টমেটো ছুঁড়ে মারার এই খেলায় যোগ দিতে সারা বিশ্ব থেকে আসেন অতিথিরা, বিশেষ করে তরুণ জনতা৷ লা টোমাটিনোর অকুস্থল হলো দক্ষিণ স্পেনের বুনিওল শহর৷ একত্রিশে আগস্ট তারিখে এখানে প্রতিবছরই চলে টমেটো যুদ্ধ৷ একমাত্র নিয়ম হলো, টমেটো ছোঁড়ার আগে টিপে একটু নরম করে নিতে হয়, যাতে কারো চোট না লাগে৷
কথাটার মানে হলো, লেবুর উৎসব৷ প্রতিবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দক্ষিণ ফ্রান্সের কোৎ দ’আজুর উপকূলের মঁতঁ শহরটিতে একশ টনের বেশি লেবু জাতীয় ফল ব্যবহার করে সুবিশাল সব ভাষ্কর্য, এমনকি ভবন সৃষ্টি করা হয়৷ রবিবার দিনটিতে সমুদ্রের ধারের বড় রাস্তা ধরে শোভাযাত্রা৷ লেবু পরবের সূচনা ১৯২৯ সালে, যখন মঁতঁ ইউরোপে লেবু জাতীয় ফলের সবচেয়ে বড় আড়ত ছিল৷
ইংল্যান্ডের গ্লস্টারশায়ার কাউন্টিতে ডাবল গ্লস্টার চিজের একটি চাকতি কুপার্স হিল নামের একটি পাহাড়ের ঢাল দিয়ে গড়িয়ে দেওয়া হয়৷ প্রতিযোগীদের কাজ হলো, সেই ঘুরন্ত পনিরের চাকতিটিকে ধরার চেষ্টা করা৷ কাজটা সহজ নয়, কেননা গড়ানো চিজের চাকতির গতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যেতে পারে! নয়তো যে প্রথম ঢালের নীচে পৌঁছবে, জিত তারই৷
ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে এই আজব প্রথাটিকে৷ লা মের্সে বার্সেলোনার বৃহত্তম স্ট্রিট ফেস্টিভ্যাল বা মুক্তমেলা, বসে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে৷ আসল আকর্ষণ হলো মানুষের উপর মানুষ চড়ে বেশ কয়েক তলা উঁচু সব ‘কাস্তেল’, মানে ক্যাসল বা দুর্গ তৈরি করা৷ এই কাটালান প্রথাটির সূচনা অষ্টাদশ শতকে৷
প্রতিযোগিতাটির পুরো নাম হলো ‘দূরপাল্লার হাতব্যাগ ছোঁড়া বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ’৷ স্থান জার্মানির রুর অঞ্চলের বট্রপ শহর৷ চার রকম ভাবে হাতব্যাগটা ছোঁড়া যায়৷ দূরত্ব ছাড়াও ছোঁড়ার কায়দা, হাত-পা নাড়া ও মুখব্যাদান, মেক-আপ ও পায়ের জুতো, সব কিছু বিবেচনা করে তবেই বিজয়ী নির্ধারন করা হয়৷
উত্তর ইটালির ইভ্রেয়া শহরে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে এই কমলালেবুর যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়৷ এটা নাকি মধ্যযুগের এক ঐতিহাসিক বিদ্রোহের প্রতীক৷ তিন দিন ধরে প্রতিযোগীদের বিভিন্ন দল শোভাযাত্রার ‘ফ্লোট’ থেকে দর্শকদের দিকে কমলালেবু ছোঁড়েন৷
প্রতিবছর ফ্লোরেন্স শহরের সান্তা ত্রোচে গির্জার সামনের চত্বরটি একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়৷ কালসিও স্তোরিকো বা ঐতিহাসিক ফুটবল নামের খেলাটির একমাত্র নিয়ম হলো, যে করে হোক বল গোলে ঢোকাও! নয়তো মাথা দিয়ে গুঁতোনো, ঘুষি মারা, গলা টিপে ধরা, সবই অ্যালাউড৷ কোনো খেলোয়াড় যে চোট পান না, সেটাই আশ্চর্য৷ ম্যাচ চলে পঞ্চাশ মিনিট ধরে; প্লেয়াররা পরেন ষোড়শ শতাব্দীর মল্লবীরদের পোশাক৷ ফাইনাল খেলা হয় ২৪শে জুন৷
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.