ভারতের মরুভূমি প্রধান রাজ্য রাজস্থান। প্রাচীনকাল থেকেই এ রাজ্যটি ধর্মীয় সহাবস্থানের জন্য আলোচিত। এখানকার সন্ত কবীরের দোঁহা- ‘কৃষ্ণ-করিম এক হ্যায় নাম ধরায়া দোয়ে, কাশী-কাবা এক হ্যায় এক রাম রহিম…’ মানুষের মুখে মুখে।
এই রাজস্থানের যোধপুরের ভোপালগড়ের বাগোরিয়া গ্রামে এখনো দেবী দুর্গার আরাধনা করেন মুসলিমরা। প্রায় ৬০০ বছর আগে এর প্রচলন শুরু হয়েছে।
এর পর বাবরি থেকে দাদরি অনেক কিছু ঘটে গেলেও বাগোরিয়ার মুসলিম পুজারীরা নিষ্ঠা নিয়ে দেবী বন্দনা ও নামাজ একই সঙ্গে করে চলেছেন।
লোকমুখে জানা গেছে, ৬০০ বছর আগে সিন্ধ প্রদেশ (পাকিস্তান) থেকে মধ্য ভারতে আসতে গিয়ে এক ব্যবসায়ী মরুভূমির মধ্যে বিপদে পড়েছিলেন। পানি ও খাদ্যের অভাবে মরতে বসা সেই সিন্ধি ব্যবসায়ীকে দেবী দুর্গা দেখা দিয়েছিলেন। তার আশীর্বাদে প্রাণ বেঁচেছিল সবার।
পরে দেবীর জন্য একটি মন্দির তৈরি করান ওই ব্যবসায়ী। শুরু হয় দুর্গা বন্দনা। বংশ পরম্পরায় তা চলে এসেছে। এখনও এ রীতি ধরে রেখেছেন বংশের ১৩তম প্রজন্ম জামালউদ্দিন খানের পরিবার। দেশটিতে সাম্প্রদায়িকতার ভয়াবহতাকে ঠেকিয়ে তিনি এখনও এই রীতি আঁকড়ে ধরে আছেন।
বাগোরিয়া গ্রামের দুর্গা মন্দির একটি পাহাড়ের ওপরে অবস্থিত। চারশ’ সিঁড়ি ভেঙে দর্শনার্থীরা মন্দিরে প্রবেশ করেন। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত জামালউদ্দিন খান। আসে পাশের সব গ্রামের বাসিন্দারা তার কাছে অসুর বধের কাহিনী শুনতে আসেন।
মন্দিরের পাশেই রয়েছে মসজিদ। দুর্গা আরতির মতো সেখানেও নিয়মিত নামাজ হয়।
জামালউদ্দিনের ছেলে মেহেরউদ্দিন খান বলেন, রমজানের সময় একমাস রোজা রাখা যেমন রীতি, তেমনই নবরাত্রির সময় নয় দিন উপবাসও পালন করা হয়। যুগ যুগ ধরে এই নিয়ম চলে আসেছে। ধর্মীয় উসকানি এই নিয়মকে ভাঙতে পারেনি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.