বাংলাদেশ এখনও জঙ্গি হামলার হুমকিতে রয়েছে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক নতুন রিপোর্টে বলা হয়েছে। তবে দেশটিতে নির্দিষ্টভাবে আমেরিকানরা না হলেও পশ্চিমা নাগরিকরা জঙ্গি টার্গেটে রয়েছেন। তাদের সতর্কতার সঙ্গে বাংলাদেশে অবস্থান ও যাতায়াতের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, আইএস বাংলাদেশে ‘বিদেশী, পর্যটক, কূটনীতিক, গার্মেন্ট ক্রেতা, মিশনারিজ এবং ক্রীড়া দলের’ ওপর হামলা চালাতে অব্যাহত চেষ্টা হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ব্যুরো অব ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বাংলাদেশ বিষয়ে ‘ক্রাইম অ্যান্ড সেফটি-২০১৭’ প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ঢাকা একটি উচ্চ হুমকির অবস্থানে রয়েছে বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র।
সন্ত্রাসবাদের হুমকির বিষয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশী গ্রুপগুলোর মধ্যে কিছু ব্যক্তি রয়েছে, যাদের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসী গ্রুপ আল কায়দা ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট (একিউআইএস) ও আইএসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। বিভিন্ন টার্গেটের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে হামলার ঘটনায় আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো হামলার দায়িত্ব স্বীকারের মতো ঘটনার কারণে বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদের একটি প্রকৃত ও বিশ্বাসযোগ্য হুমকিতে রয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে সহিংস আক্রমণের শিকার হয়েছে।
এর মধ্যে দুই বিদেশী নাগরিক হত্যা এবং নিরাপত্তা বাহিনী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর বোমা হামলা ও অন্যান্য আক্রমণ হয়েছে। ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারির হামলা এ সময়কার মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক আক্রমণ। যাতে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রসহ বিশজন বিদেশী নিহত হন। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে আল কায়দা এবং তার অভ্যন্তরীণ সহযোগী আনসার-আল ইসলাম প্রধানত ঢাকায় সংঘটিত সাতটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা স্বীকার করেছে।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ‘২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে আল কায়দা আনুষ্ঠানিকভাবে তার শাখা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়ার আগে আনসারউল্লাহর মতো গোষ্ঠী ধর্মনিরপেক্ষ লেখক, ধর্মবিষয়ক সমালোচকদের আল কায়দার পক্ষে হত্যা করেছিল। ২০১৫ সালের মাঝামাঝি আনসারউল্লাহ নিজেদের আল কায়দার বাংলাদেশী শাখা হিসেবে পরিচিতি দেয়া শুরু করে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, আইএস ২০১৫ সালের নভেম্বরে দাবিক সংখ্যায় বাংলাদেশে তাদের অবস্থানের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে। সাময়িকীতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্যভাবে চিত্রিত হয়।
খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য একটি স্ট্র্যাটেজিক অপারেশন ঘাঁটি হিসেবে দেখা হয়েছে এবং ভারতেও আক্রমণ পরিচালনার জন্য সহায়ক ভূখণ্ড হিসেবেই তারা বাংলাদেশকে দেখে। আইএসের কাছে ভারত একটি প্রতীকী এবং গুরুত্বপূর্ণ টার্গেট। ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও নির্গমন দুটোই নৈরাজ্যিক হতে পারে বলে আশংকা করা হয়েছে। এ মূল্যায়নের ভিত্তিতে বাংলাদেশে উগ্রপন্থীদের সহিংসতার বিষয়ে মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.