আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের প্রথম দিনে নজিরবিহীন নিরাপত্তায় ঢাকা ছিল সম্মেলনস্থল ও আশপাশের এলাকা। পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা ও তার চারপাশের সড়কে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়। ওই সড়কগুলোতে যান চলাচল সীমিত করা হয়। পুরো এলাকাকে নিয়ে আসা হয় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায়। শেরাটন, হোটেল, দোয়েল চত্বর, কাটাবন ও মৎস্য ভবনের সামনের সড়কে পুলিশের ব্যারিকেড বসানো হয়। যানবাহনগুলোকে বিকল্প পথে ঘুরিয়ে দেয়া হয়। ওই সড়কে শুধু সিএনজি, মোটরসাইকেল এবং প্রটোকলের গাড়িগুলোকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। তবে শাহবাগের শিশুপার্ক থেকে মৎস্য ভবন পর্যন্ত পুরো সড়কটি ছিল যানবাহনমুক্ত। ওই সড়কটি শুধু প্রধানমন্ত্রী এবং সম্মেলনে যোগদানকারী বিদেশি অতিথিদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। সড়কটিতে কোনো পথচারী ঢুকতে দেয়া হয়নি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরের চারপাশে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের ক্ষেত্রে ছবির হাট, টিএসসি এবং বাংলা একাডেমির সামনের গেট দিয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। ভেতর থেকে বাইরে বের হওয়ার সময় ওই গেটেই বাঁশ দিয়ে ঘিরে আলাদা পথ দিয়ে বের হওয়ার ব্যবস্থা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। উদ্যানের মধ্যে প্রবেশের সময় নেতাকর্মীদের মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে ব্যাগ ও শরীর তল্লাশি চালায়। বসানো হয় আর্চওয়ে। নারীদের ক্ষেত্রে নারী পুলিশের সদস্যরা তাদের আলাদাভাবে তল্লাশি করেন। শৃঙ্খলার স্বার্থে ডেলিগেট কাউন্সিলরদের লাইনে দাঁড় করিয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। এলিট ফোর্স র্যাব-৩ এর পক্ষ থেকে মাঠের মধ্যে তিনটি ওয়াচ টাওয়ার বসানো ছিল। র্যাবের সদস্যরা সেখান থেকে চারপাশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এছাড়াও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন গোয়েন্দা সদস্যদের তৎপর হতে দেখা গেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে একটি কেন্দ্র খোলা হয়। ওই কেন্দ্র থেকে উদ্যানের চারপাশসহ আশপাশের রাস্তায় বসানো ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ধারণকৃত ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়। সেখানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এ বিষয়ে রমনা জোনের পুলিশের সহকারী কমিশনার শিবলী নোমান সাংবাদিকদের জানান, সম্মেলনকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। তিনি জানান, প্রথম দিন কোনো সন্দেহভাজন কাউকে আটক করা হয়নি। তবে কয়েকজন যুবককে পুলিশের সন্দেহ হলে তাদের ব্যাগ ও দেহতল্লাশি করা হয়। পরে তাদের নাম ও ঠিকানা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, ডেলিগেটদের যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে আশপাশের রাস্তাগুলোতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.