স্মার্টফোনটা যখন পানিতে পড়ে গেল, জোয়ানা ও’কনেল ঠিক তাই করলেন যা আর দশ জন মানুষ করত। দ্রুত ব্যাক কভার খুলে ব্যাটারি বের করলেন, পানি ঝরিয়ে শুকানোর চেষ্টা করলেন। শত চেষ্টার পরও অবশ্য স্মার্টফোনটির পর্দায় আলোর দেখা পাননি। জোয়ানার ভাষ্যমতে, ‘প্রথম ২৪ ঘণ্টা আমার কাছে মনে হয়েছে এখন কী হবে আমার!’ পরের ছয় সপ্তাহ অবশ্য তিনি স্মার্টফোন ছাড়াই ছিলেন। কোনো লঙ্কাকাণ্ড বাধেনি, মাথায় আকাশও ভেঙে পড়েনি। তিনি দিব্যি ভালো ছিলেন। বিশ্বজুড়ে ২০০ কোটির বেশি মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করে। উন্নত দেশগুলোতে অর্ধেকের বেশি মানুষ তাদের দৈনন্দিন কাজের জন্য ফোনের ওপর নির্ভরশীল। ২০১৫ সালে প্রকাশিত একদল সাইকোলজিস্টের গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দিনে মানুষ গড়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করে, প্রায় ৮৫ বার স্মার্টফোনের পর্দা সচল করে। জোয়ানা ও’কনেল ঠিক তাদেরই একজন ছিলেন। তবে স্মার্টফোনবিহীন ছয় সপ্তাহের অভিজ্ঞতা, ডিজিটাল যন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন তিনি। ব্রিটিশ লেখক জোয়ানা তাঁর সে ছয় সপ্তাহের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান-এ। জোয়ানা বলেন, স্মার্টফোন ছাড়া এই ছয় সপ্তাহ তাঁর ঘুম ভালো হয়েছে। কারণ, ঘুমের সময় তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেননি। মুঠোফোন হারিয়ে গেলে অনেকে ভড়কে যান কীভাবে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন এই ভেবে। কিন্তু জোয়ানার অভিজ্ঞতা কিছুটা ভিন্ন। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়নি বলে তিনি কাজে আরও বেশি মনোযোগী হতে পেরেছেন। ওই ছয় সপ্তাহে কোনো ই-মেইল, ফোনকল বা এসএমএস আসেনি। কিন্তু তিনি পরে ভেবে দেখেন এতে তাঁর কোনো কাজ থেমে থাকেনি। জোয়ানা বলেন, ‘আমি ভেবে দেখেছি মুঠোফোনের অভাবে কোনো কিছুই থেমে থাকে না। এসব কিছুই খুব বেশি জরুরি না। স্মার্টফোন না থাকার আরেকটা সুফল হলো এতে খরচ কম হয়। একে তো ফোনের বিল কম আসে। দ্বিতীয়ত অনেক ধরনের বিজ্ঞাপন থেকে দূরে থাকায় অতিরিক্ত খরচ কম হয়।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.