যৌতুকের জন্য কোনো নারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এমন বিধান রেখে ‘যৌতুক নিরোধ আইন-২০১৭’ এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন করলো মন্ত্রিসভা।
সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষ মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগের আইন ও অধ্যাদেশগুলো সমন্বয় করে নতুন আইনটি করা হচ্ছে। এ আইনে যৌতুকের জন্য কোনো নারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, খসড়ায় যৌতুকের জন্য আত্মহত্যার প্ররোচনায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হলেও শেষ মুহূর্তে শাস্তি কমিয়ে আনা হয়।
শফিউল আলম বলেন, আইনে যৌতুকের জন্য নারীকে মারাত্মক জখম করার শাস্তি হিসেবে আসামির কারাদণ্ডের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তের ক্ষতি বিবেচনায় অর্থদণ্ডসহ আমৃত্যু ভরণপোষণের বিধান রাখা হয়েছে। আর সাধারণ জখমের জন্য আসামির অনধিক ৩ বছর কিন্তু কমপক্ষে ১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।
১৯৮০ সালে করা বিদ্যমান যৌতুক নিরোধ আইনে তা দাবি ও লেনদেনের জন্য শাস্তির বিধান থাকলেও নির্যাতন বা আত্মহত্যার প্ররোচনার জন্য শাস্তির কথা বলা নেই।
প্রস্তাবিত খসড়া সংশোধনীতে অর্থদণ্ড নির্দিষ্ট করার পাশাপাশি কারাদণ্ডের মেয়াদও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করা হলে তার শাস্তির বিষয়ে খসড়ায় নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কোনো স্বামী, স্বামীর পিতা-মাতা, অভিভাবক, আত্মীয় বা স্বামীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি যৌতুকের জন্য কোনো নারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এ ছাড়া প্রস্তাবিত খসড়ায় যৌতুকের জন্য নির্যাতনের বিষয়ে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে। যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, মারাত্মক জখম করলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীন কারাদণ্ড ও সর্বনিম্ম ১২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার কথা বলা হয়েছে।