প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বকে জানতে জ্ঞান অর্জনের জন্য শিক্ষার্থীদের বেশি করে বই পড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, একমাত্র সাহিত্য চর্চার মধ্যদিয়েই তারা ভুল পথে যাওয়া থেকে বিরত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েরা আজকে বিপথে (সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-মাদকাশক্তি) চলে যাচ্ছে- তাদের সেই ভুল পথ থেকে বিরত রাখা যায় কেবলমাত্র সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে।’
তিনি বলেন ‘লেখাপড়া, সংস্কৃতি চর্চা যত বেশি হবে ততই তারা ভালো পথে চলে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা এবং এখানে যারা উপস্থিত সকলকে এই আহ্বানই জানাবো— সকলে বই পড়বে। …বই পড়ার ভেতর যে আনন্দ, বই পড়লে যেমন জ্ঞান অর্জন করা যায়, তেমনি অনেক কিছুই ভুলে থাকা যায়।’
বুধবার রাজধানীর বাংলা একাডেমীতে অমর একুশে উপলক্ষে মাসব্যাপী গ্রন্থমেলার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
একই সময় তিনি ৪ দিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন-২০১৭’ উদ্বোধন করেন এবং ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৬’ বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
সরকার প্রধান বলেন, এটা ঠিক আমাদের যা কছু অর্জন সববিছুই রক্ত দিয়ে করতে হয়েছে। বিনারক্ত পাতে কোনকিছুই পাইনি।
তিনি বলেন, আজকে আমরা স্বাধীন জাতি, আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার থেকে শুরু করে বাঙালি জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে যে মর্যাদার আসন, সে আসনও আমাদের বহু ত্যাগ-তীতিক্ষার মধ্যদিয়ে অর্জন করতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ’৭৫-এর বিয়োগান্তক অধ্যায় স্মরণ করে বলেন, আমরা সমগ্র বিশ্বে একবার মর্যাদা পেয়েছিলাম ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্যদিয়ে। যা ভুলুণ্ঠিত হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে।
শেখ হাসিনা বলেন, তখন আমরা খুনী জাতি হিসেবে বিশ্বে পরিচিত হয়েছিলাম। আজকে সেই খুনীদের আমরা বিচার করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি ও করছি এবং আমাদের জাতীয় পতাকাকে সমুন্নত করে বিশ্ব সভায় আবারো একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছি। আর্থ-সমাজিকভাবে আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার দিক থেকেও আমরা পিছিয়ে নেই, এগিয়ে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
স্বাগত বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেন সংস্কৃতি সচিব বেগম আকতারী মমতাজ, প্রকাশকদের পক্ষে বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমির ফেলো মফিদুল হক।
অনুষ্ঠান উপস্থিত বিদেশি অতিথিদের মধ্যে বক্তৃতা করেন- চীনের রবীন্দ্র সাহিত্য বিশারদ অধ্যাপক ড. ইউ চেন, অস্ট্রিয়ার কবি মেনফ্রেড কোবো, পুয়ের্তোরিকোর মিঁজ লুস মারিয়া লোপেজ, জার্মানীর লেখক ও প্রকাশক টবিয়াস বুর্কহাডর্, ভারতের অধ্যাপক চিন্ময় গুহ প্রমুখ।