আওয়ামী লীগের আসন্ন ২০তম কাউন্সিলের মঞ্চ তৈরি ও সাজসজ্জার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। সম্মেলনকে ঘিরে প্রতিদিনই সিনিয়র নেতারা সম্মেলনস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন করছেন। ওদিকে দলের নেতাকর্মী বিদেশি ও অন্যান্য অতিথিদের জন্য ৫০ হাজার লোকের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত খাদ্য উপ-কমিটির নেতৃবৃন্দ। তারা আরো জানিয়েছেন সম্মেলনে খাবার নিয়ে কোনো ধরনের কার্পণ্যতা ও খাবারের যাতে কমতি না হয় সে জন্য দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। গতকাল ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্মেলনের খাদ্য উপ-কমিটির বৈঠকে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান কমিটির আহ্বায়ক, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি জানান, আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এখন ৫০ হাজার লোকের খাবারের আয়োজন করা হচ্ছে। ২২শে অক্টোবর সম্মেলনে উদ্বোধনী দিনে দুপুর ও রাত এবং সম্মেলনের সমাপনী দিনে দুপুর বেলাসহ ২ দিনে তিনবেলা খাবারের আয়োজন থাকবে। সম্মেলনে খাবারের জন্য ১৫টি বুথ থাকবে। প্রতিটি বুথে ২০ জন পুলিশ থাকবে। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীরাও দায়িত্ব পালন করবেন। তবে, বিদেশিদের জন্য আলাদা কোনো খাবারের ব্যবস্থা বা বুথ থাকবে না বলে জানান তিনি। মায়া বলেন, সম্মেলনে প্রথমে ২৫ হাজার লোকের খাবারের আয়োজনের কথা থাকলেও সময়ের প্রয়োজনে চাহিদার হিসেবে অনেক কিছুর পরিবর্তন করতে হচ্ছে। আমাদের টার্গেট-এখন আমরা ৫০ হাজার লোকের খাবারের ব্যবস্থা করবো। তিনি বলেন, খাবারে যেন কোনো কৃপণতা না করি এবং সবাই যেন খাবার পায় সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। খাদ্য উপ-কমিটির সদস্য সচিব ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, সম্মেলনে খাবারের বিষয়ে আগে যে হিসাব ছিল তা পরিবর্তন করা হয়েছে। ৪৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার লোকের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। খাবারের ব্যাপারে যেন কোনোরকম কার্পণ্য না হয়, খাবারে কোনো কমতি যাতে না হয় এবং নেতাকর্মীরা যাতে ঠিকভাবে খাবার পায় সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) দৃষ্টি রাখতে বলেছেন। বৈঠকে আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তিবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনকে সামনে রেখে চাঁদাবাজি করলে কঠোর শাস্তি আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে কেউ যদি চাঁদাবাজি বা তার বাইরে অন্য কিছু করে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত দপ্তর উপ-কমিটির আহ্বায়ক ওবায়দুল কাদের। আগামী ২২ ও ২৩শে অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের দলের জাতীয় সম্মেলনে যে ব্যয় করা হচ্ছে তা দলীয় তহবিল থেকে। আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে এই ব্যয় করা হচ্ছে এবং হবে। এর বাইরে কেউ যদি সম্মেলনকে সামনে রেখে চাঁদাবাজি করলে সেটার বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় কমিটির সভায় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাজেট পাস হয়েছে। সেখানে সম্ভাব্য যে বাজেট পাস হয়েছে এই বাজেটের মধ্যেই আমাদের সব ব্যয় সীমিত থাকবে। সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত বিভিন্ন উপ-কমিটি তাদের স্ব স্ব বাজেট প্রস্তাব করতে পারে কিন্তু পাস করার এখতিয়ার তাদের নেই। এজন্য জাতীয় কমিটিতে যে বাজেট পাস হয়েছে এর মধ্যেই তাদের ব্যয় সীমিত করতে হবে। সেতুমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি নির্ধারিত বাজেটেই সবকিছু করা সম্ভব হবে। এটা আমরা প্রমাণ করবো। এ জন্যই এই সম্মেলনকে বলছি ব্যতিক্রমী। আমরা আমাদের বাজেটের মধ্যেই একটা সুশৃঙ্খল, কালারফুল সুন্দর এবং স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ জাতীয় সম্মেলনে উপহার দেব। সম্মেলনের চমক কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, চমকটা কি ঠিক আমি বুঝতে পারছি না। এটা হলো সিদ্ধান্তের বিষয়। চমকের কোনো বিষয় নয়। আওয়ামী লীগের সম্মেলনের একটা ঐতিহ্য আছে। এই যে ডিজিটাল বাংলাদেশ; টেকনোলজির সঙ্গে ট্র্যাডিশনের সমন্বয় ঘটবে। প্রবীণের অভিজ্ঞতার সঙ্গে নবীনের রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে একটা শক্তিশালী টিমওয়ার্ক গড়ে তুলবো বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর যানজট ভোগান্তি কমাতে কি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে একটা রোডম্যাপ আছে। আমাদেরও প্ল্যান আছে। যাতে করে জনদুর্ভোগ সহনশীল পর্যায়ে থাকে। ওইসময় এত মানুষ ঢাকায় আসবে আর আমরা একেবারেই যানজট মুক্ত পরিবেশে সম্মেলন করবো- এটা বললে হয়তো শুনতেও ভালো লাগে না। তবে সম্মেলনের কারণে যানজট যতটা সম্ভব সহনশীল পর্যায়ে থাকে সে ব্যাপারে আমাদের চেষ্টা আছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.