আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে মঞ্চ তৈরির কাজ
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে ১৪টি ধারা-উপধারায় সংযোজন-বিয়োজন হচ্ছে। দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সংখ্যা বাড়তে পারে। এর সংখ্যা ৮১ থেকে ৮৩-এর মধ্যে থাকবে। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মতো জেলা-উপজেলা কমিটির সব নেতাও পদাধিকারবলে পরবর্তী সম্মেলনে কাউন্সিলরের মর্যাদা পেতে যাচ্ছেন। সংশোধনীগুলো অন্তর্ভুক্ত করে খসড়া গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হয়েছে, যা আলোচনা সাপেক্ষে আজ বুধবার অনুষ্ঠেয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে চূড়ান্ত করা হবে। আসন্ন সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটে গঠনতন্ত্রটি অনুমোদন দেয়া হবে। আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলন।
গত সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এর সদস্য সংখ্যা ৮১ করার প্রস্তাব দেয়া হয়। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন প্রেসিডিয়ামের ৪টি এবং পরবর্তীকালে নির্বাহী সদস্য ২টি বাড়ানোর নির্দেশ দেন। দেশে একটি বিভাগ বৃদ্ধি পাওয়ায় একটি সাংগঠনিক সম্পাদক পদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে। পরবর্তীকালে সাংগঠনিক সম্পাদকের অনুপাতে একটি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। মোট ৮টি পদ বাড়িয়ে ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ করার প্রস্তাব রেখে খসড়া গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। কিন্তু দলের সভাপতি পরবর্তীকালে একাধিক আলোচনায় প্রয়োজনে নির্বাহী সদস্যের আরও দুটি পদ বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন, যা আজকের আলোচনায় উঠতে পারে। এ বিষয়ে কার্যনির্বাহী সংসদ একমত হলে এর সদস্য সংখ্যা দাঁড়াবে ৮৩। বর্তমানে ৭৩ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী সংসদ কাজ করছে।
এদিকে যুদ্ধাপরাধী এবং ১৫ আগস্টের খুনিদের উত্তরাধিকাররা কেউ আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায়ের সদস্য হতে পারবে না মর্মে একটি ধারা খসড়া গঠনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে গঠনতন্ত্রের ২৭ নম্বর ধারায় একটি উপধারা সংযোজন করা হচ্ছে। এখানে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের কথা উল্লেখ থাকবে। এই বোর্ড হবে ১৯ সদস্যবিশিষ্ট। আর ৪৬-এর ঠ ধারায় জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে স্থানীয় সরকার নির্বাচন শব্দটি যোগ করা হচ্ছে। বর্তমান গঠনতন্ত্রের ৫-এর ৩ ধারায় সদস্য পদের মেয়াদ বৈশাখ থেকে চৈত্র মাসের পরিবর্তে জানুয়ারি-ডিসেম্বর মাস করার সিদ্ধান্ত খসড়া গঠনতন্ত্রে উল্লেখ থাকছে।
দলের প্রাথমিক সদস্য, কাউন্সিলর, এমপি এবং মন্ত্রীদের চাঁদার বিধান সংবলিত ধারাগুলোয় চাঁদা বাড়ানোর বিষয়টি উল্লেখ থাকবে। গঠনতন্ত্রে ৪৭ ধারায় কাউন্সিলরদের ১০০ টাকার পরিবর্তে ২০০ টাকা, ৪৮ ধারায় প্রাথমিক সদস্যদের চাঁদা আগে ১০ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে। ২৮-এর ঙ ধারায় বর্ণিত এমপিদের ৫০০ টাকার স্থলে হবে ২০০০ টাকা চাঁদা নির্ধারণ করা হতে পারে।
আর ৪৯ ধারায় বর্তমান সদস্যদের চাঁদার টাকা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা এবং ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলের আগে অডিট করে তা সম্মেলনে জমা দেয়ার পরিবর্তে প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এনবিআরে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল ও নির্বাচন কমিশনে জমা ও খরচ দাখিলের বিষয় উল্লেখ থাকবে। বর্তমান গঠনতন্ত্রের ৫০ ধারায় বর্ণিত ‘নির্বাচন পরিচালনা কমিশন’ শব্দের স্থলে এখন থেকে ‘কাউন্সিল অধিবেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিশন’ শব্দটি ব্যবহার করার সুপারিশ থাকছে।
উল্লেখ্য, গঠনতন্ত্রের সংযোজন-বিয়োজন নিয়ে কাজ করছে সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত গঠনতন্ত্র উপকমিটি। এ কমিটি দলের আজকের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে খসড়া গঠনতন্ত্র উপস্থাপন করবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.