শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নয়, গোটা দেশের দৃষ্টি এখন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক পদের দিকে। এ পদে কে আসছেন? সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কি হ্যাটট্রিক করছেন? না অন্য কেউ? তেমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি না হলে, এ প্রশ্নের জবাব আজ রোববার রাতের মধ্যেই চূড়ান্ত হওয়ার কথা। সে পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে সবাইকে।
তবে গত দুই দিনের পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে গণভবন সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন সাধারণ সম্পাদক পদে জাতীয় নেতাদের উত্তরাধিকারীদের মধ্য থেকে কেউ বসতে পারেন। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর।
বুধবার গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের পর খবর ছড়িয়ে পড়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন। এ সংবাদের ওপর ভিত্তি করে দলটির অনেক নেতা ওবায়দুল কাদেরের ধানমণ্ডির বাসায় গিয়ে অগ্রিম অভিনন্দন জানান। এ নেতার নিকটজনদের দাবি ছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে (ওবায়দুল কাদের) গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছেন। এ খবরে ওবায়দুল কাদেরকে বৃহস্পতিবার দিনভর ফুরফুরে দেখা যায় বলে নিশ্চিত করেন তার ঘনিষ্ঠরা।
গণভবন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আসলে বুধবার রাতে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা কিছু বিষয় নিয়ে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ বিষয়টি দলে আশরাফের প্রতিপক্ষরা ভিন্নভাবে প্রকাশ করেন। তারাই প্রচার করেন, সৈয়দ আশরাফকে বাদ দিয়ে সাধারণ সম্পাদক করা হচ্ছে ওবায়দুল কাদেরকে।
তবে সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন এবং ওবায়দুল কাদেরের নাম আসায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ঐতিহ্যবাহী এ দলটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরকে নির্বাচিত করা হলে তা হবে ক্ষতিকর- এমন নেতিবাচক মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অবশ্য এ নেতার সমর্থকরা তাকে স্বাগত জানিয়েও স্ট্যাটাস দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
পরের দিন বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বিদেশী অতিথিদের সম্মানে অনুষ্ঠিত নৈশভোজ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, সম্মেলনে নেতৃত্বে কারা আসছেন তা শুধু দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকই জানেন। নতুন চমক কি আছে তা শুধু তিনি ও দলীয় সভাপতি ছাড়া আর কেউ জানেন না। পত্রিকায় নতুন নেতৃত্ব নিয়ে যে খবর বের হয়েছে তা অনুমাননির্ভর। সব জল্পনা-কল্পনা ভুয়া প্রমাণিত হবে। আর নতুন চমকের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
শনিবার সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সৈয়দ আশরাফ আগামী দিনের নেতৃত্ব প্রসঙ্গে বলেন, শেখ হাসিনা আমাদের শেষ ভরসা। আর এখানে আছেন আরও একজন শেষ ভরসা। তিনিই নেতৃত্ব এগিয়ে নিয়ে যাবেন। জয় এসেছে, তার বন্ধুরা আসবে, সহপাঠীরা আসবে দেশটা তারাই এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমাদের বয়স হয়েছে। খুব বেশি কিছু দেয়ারও নেই, শক্তিও নেই। নতুনদের আসার সুযোগ করে দিতে হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.