দিনের মাত্র দ্বিতীয় বলে ব্যাট হাতে সাকিব আল হাসানের আউট হওয়ার ধরন দেখে মন খারাপ হয়েছিল ভক্তদের। তবে দিনশেষে সেরা নৈপুণ্যটা বাঁ-হাতি স্পিনার সাকিব আল হাসানেরই। গতকাল দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের বল হাতে পাঁচ উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। এতে ৩১ ওভারের লম্বা স্পেলে সাকিব খরচ করেন ৭৯ রান। ৪৩ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে সাকিবের এটি ১৫তম পাঁচ উইকেট শিকার। ২০০৭ চট্টগ্রামে সাকিব আল হাসানের টেস্ট অভিষেক। আর চট্টগ্রামেই বল হাতে সাকিব পূর্ণ করলেন এক ম্যাজিক্যাল ফিগার। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে ১৫০ উইকেটের ল্যান্ডমার্ক স্পর্শ করলেন সাকিব আল হাসান। গতকাল ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম উইকেট তুলে নিয়ে এ অভিজাত তালিকায় নাম ওঠে বাঁ-হাতি এ স্পিনারের। চট্টগ্রামে টেস্টে প্রথম ইনিংসে দুই উইকেট নেন সাকিব। এতে ক্যারিয়ারে ১৪৯ উইকেট শিকার নিয়ে গতকাল বল হাতে ক্রিজে যান সাকিব আল হাসান। ইংল্যান্ড ইনিংসের ৯.২তম ওভারে সাকিবের সোজা বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন ইংল্যান্ডের ওয়ানডাউন ব্যাটসম্যান জো রুট। সাকিবের স্পিন ভেলকিতে এদিন পরে উইকেট খোয়ান বাংলাদেশ সফরে ইংল্যান্ডের ইনফর্ম ব্যাটসম্যান বেন ডাকেট, প্রথম ইনিংসে সফরকারীদের সর্বোচ্চ রানের তারকা মঈন আলী, দ্বিতীয় ইনিংসে টাইগারদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠা বেন স্টোকস ও টেইলএন্ডার আদিল রশিদ। ২০০৭ সালের ১৮ই মে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক সাকিব আল হাসানের। অভিষেকে অবশ্য উইকেটের দেখা পাননি সাকিব। ভারতের বিপক্ষে ওই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ১৩ ওভারের স্পেলে ২৯ রানে উইকেটশূন্য থাকেন এ বাঁ-হাতি স্পিনার। আর টেস্টে নিজের প্রথম উইকেটের জন্য তিন ম্যাচ অপেক্ষা করতে হয় সাকিবকে। একই বছর ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরের দুই টেস্টে যথাক্রমে ১৯ ও ১৬ ওভার বল করেন সাকিব। সাকিব প্রথম টেস্ট উইকেটের স্বাদ নেন নিউজিল্যান্ড সফরে। ২০১২ সালের জানুয়ারিতে ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯ ওভারের স্পেলে ৪৪ রানে দুই উইকেট নেন সাকিব। ব্যক্তিগত ৪২ রানে সাকিব এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন কিউই ওপেনার ক্রেইগ কামিংকে। পরে সাকিব কিউই অধিনায়ক স্টেফেন ফ্লেমিংকে সাজঘরে ফেরান ব্যক্তিগত ৮৭ রানে। সাকিব আল হাসানের টেস্ট ক্যারিয়ারে ১০০ উইকেট পূর্ণ হয় দেশের মাটিতেই। ২০১২ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে এ ল্যান্ডমার্ক স্পর্শ করেন সাকিব। খুলনায় ওই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৫২ ওভারের লম্বা স্পেলে ১৫১ রানে চার উইকেট নেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে মাঠে নামার আগে ৪২ ম্যাচের ক্যারিয়ারে সাকিব আল হাসান ইনিংসে পাঁচ উইকেটের কৃতিত্ব দেখান ১৪ বার। তবে গত দুই বছরে পাঁচ উইকেটের ঘটনা ছিল না সাকিবের। আর সাকিবের সর্বশেষ এমন ঘটনাটি আলাদা তাৎপর্যের। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনা টেস্টের উভয় ইনিংসে পাঁচ উইকেটের কৃতিত্ব দেখান সাকিব আল হাসান। সাকিবের ক্যারিয়ারের সেরা ম্যাচ ফিগার ওটাই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৪১ ওভারের স্পেলে ৮০ রানে পাঁচ উইকেট নেন সাকিব। আর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮ ওভারের স্পেলে ৪৪ রানে পাঁচ উইকেট শিকার ছিল সাকিবের। সাকিবের ম্যাচে ১০ উইকেটের একমাত্র ঘটনাও ওটাই। টেস্টে বাংলাদেশের বল হাতে ১০০ উইকেটের কীর্তি রয়েছে আর কেবল মোহাম্মদ রফিকের। ক্যারিয়ারে সাবেক এ বাঁ-হাতি স্পিনারের শিকার কাঁটায় কাঁটায় ১০০। টেস্টে বাংলাদেশের সর্বাধিক উইকেট বোলার ম্যাচ উই সেরা গড় সাল সাকিব আল হাসান ৪৩* ১৫৪* ৭/৩৬ ৩২.৭৮ ২০০৭-১৬ মোহাম্মদ রফিক ৩৩ ১০০ ৬/৭৭ ৪০.৭৬ ২০০০-০৮ মাশরাফি বিন মুর্তজা ৩৬ ৭৮ ৪/৬০ ৪১.৫২ ২০০১-০৯ শাহাদাত হোসেন রাজিব ৩৮ ৭২ ৬/২৭ ৫১.৮১ ২০০৫-১৫ এনামুল হক জুনিয়র ১৫ ৪৪ ৭/৯৫ ৪০.৬১ ২০০৩-১৩
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.