আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের সমাপনী দিনে গতকাল নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অভিনন্দন জানান দলের কাউন্সিলররা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাততালি দিয়ে এবং ওবায়দুল কাদের ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম হাতে হাত ধরে অভিনন্দনের জবাব দেন l
টানা অষ্টমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এদিকে অনেক গুঞ্জন, আলোচনা ও নাটকীয়তার পর সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন এল। নতুন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ওবায়দুল কাদের। ঘোষিত আংশিক কেন্দ্রীয় কমিটিতে আরও কিছু পরিবর্তন এসেছে। সভাপতি নির্বাচিত হয়েই শেখ হাসিনা ঘোষণা করলেন, ২০১৯ সালে পরবর্তী জাতীয় সংসদের নির্বাচন হবে। এ জন্য এখন থেকেই মানুষের ঘরে ঘরে যেতে হবে।
গত শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হয় দুই দিনব্যাপী আওয়ামী লীগের বর্ণিল জাতীয় সম্মেলন। গতকাল রোববার বিকেলে ছিল সম্মেলনের শেষ পর্ব অর্থাৎ নেতৃত্ব নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা। এতে সভাপতি পদে শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদের একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। টানা দুবারের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সভাপতিমণ্ডলীতে স্থান দেওয়া হয়েছে। ১৯ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীর ১৪ জন, ৪ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ পদে নেতাদের নাম ঘোষণা করা হয়। সব মিলিয়ে ২০তম জাতীয় সম্মেলনে ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ২১টি পদে নেতা নির্বাচন করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়। সভাপতি নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘৩৫ বছর ধরে একটা দলের সভাপতি আমি। এত দিন একটা পদে থাকা উচিত নয়। একদিন তো আমাকে বিদায় নিতেই হবে। আপনারা আবারও আমাকে সেই কঠিন দায়িত্বই অর্পণ করেছেন এবং আমি সেটা গ্রহণও করেছি। আমি এই দায়িত্ব সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনে সচেষ্ট থাকব।’ ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি কখনোই চাইব না, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠুক। আমি চাই, আমাদের দল নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবারও জনগণকে সেবা করার সুযোগ লাভ করুক।’ তিনি নেতাদের নিজ নিজ এলাকার হতদরিদ্র জনগণের তালিকা পাঠানোর জন্য আবারও আহ্বান জানান। সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সে (আশরাফ) আমার ছোট ভাই। দুই টার্ম আমার সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছে। শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে মন-প্রাণ দিয়ে সংগঠন ও দেশকে ভালোবেসেছে। সে-ই সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করেছে। কাদেরও ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করছে। আশা করছি, দল আরও শক্তিশালী হবে।’ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে গতকালের কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয় সকাল সাড়ে নয়টায়। শুরুতে দলীয় প্রধান বক্তব্য দেন। এরপর ৪১টি জেলার সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদকের যেকোনো একজনকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তবে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সাংসদ হলে তাঁকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। শেখ হাসিনা বলেন, সাংসদেরা সংসদে বলার সুযোগ পান। কাউন্সিলরদের বক্তব্য দেওয়ার সময় সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও সৈয়দ আশরাফও মঞ্চে ছিলেন। মন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ নেতারা এবং প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ও কাউন্সিলরদের সারিতে বসা ছিলেন।
কাউন্সিলরদের অনেকে দলের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে শেখ হাসিনাকে আজীবন দলের সভাপতি করার দাবি করেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজীবন সভাপতি থাকা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। আমি আমার ছোট ছোট সন্তানদের স্নেহ থেকে বঞ্চিত করে এসেছিলাম। আপনারা আমাকে বারবার দলের সভাপতি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী হয়েছি। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আমাকে নেতা-কর্মীরা মানবঢাল করে বাঁচিয়েছে। বারবার আমার জীবন বাঁচিয়েছেন আপনারা। যে সম্মান আমাকে দিয়েছেন, তা ভোলার নয়। এই সম্মান থাকতে থাকতে বিদায় নেওয়া ভালো।’ এসব কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রীর গলা ধরে আসে। সঙ্গে সঙ্গেই কাউন্সিল কক্ষ ও এর বাইরে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা ‘না’, ‘না’ ধ্বনি তোলেন।
এরপর আগের কমিটির সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা কাউন্সিলরদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা ১৯৮১ সাল থেকে বারবার নির্বাচিত করেছেন। আমাকে যে গুরুদায়িত্ব দিয়েছেন, মনে হয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করেছি। এরপরও যদি কোনো ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকে, কাউকে আঘাত দিয়ে থাকলে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।’
নেতা নির্বাচন যেভাবে হলো: বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে আগের কমিটি ভেঙে দেন দলীয় প্রধান। নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের কাছে দায়িত্ব দিয়ে শেখ হাসিনাসহ নেতারা কাউন্সিলর আসনে বসেন। কমিশনের অন্য দুই সদস্য মসিউর রহমান ও রাশিদুল আলম।
ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন কাউন্সিলরদের জানান, এবারের সম্মেলনে কাউন্সিলর ৬ হাজার ৫৭০ জন। কাউন্সিলরদের মধ্য থেকে কাউকে সভাপতি পদে প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করার আহ্বান জানান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে কাউন্সিলররা শেখ হাসিনার নাম ধরে স্লোগান দিতে থাকেন। সাজেদা চৌধুরী তখন সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চলে গেছেন। তিনি তাঁর কন্যাকে রেখে গেছেন। তিনি আমাদের পথ দেখাচ্ছেন।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার তিনবার জানতে চান, আর কোনো প্রার্থী আছে কি? তখন সবাই ‘নাই নাই’ চিৎকার করতে থাকেন। সভাপতি পদে শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানান গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন। এরপর কাউন্সিলরদের অনুমোদন চাইলে সবাই ‘হ্যাঁ’ বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার সভাপতি পদে শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত ঘোষণা করে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রস্তাব আহ্বান করেন। এ সময় সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করেন। এই প্রস্তাবে সমর্থন করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। আর কোনো প্রার্থী না থাকায় কাদেরকেই নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাউন্সিলরদের কাছে জানতে চান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে গেছেন। বাকি কমিটির সদস্যদের নির্বাচনের দায়িত্ব সভাপতিকে দেবেন কি না। তখন কাউন্সিলররা সভাপতিকে দায়িত্ব দেন।
শেখ হাসিনা সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ পদে নেতাদের নাম ঘোষণা করেন।
আবেগের বন্ধন : আওয়ামী লীগের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের হাতে হাত রেখে অনুভূতি প্রকাশ করেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ যেন একসঙ্গে পথচলার অভিব্যক্তি ও আবেগের বন্ধন l
যাঁরা এলেন, যাঁরা বাদ পড়লেন:
সভাপতিমণ্ডলীতে যে ১৪ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে সাতজন আগের কমিটিতে ছিলেন। তাঁরা হলেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্ল্যাহ, সাহারা খাতুন ও মোশাররফ হোসেন। নতুন যুক্ত হয়েছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, রমেশ চন্দ্র সেন, আব্দুর রাজ্জাক, ফারুক খান, আবদুল মান্নান খান ও পীযূষ ভট্টাচার্য।
২০১৩ সালের নভেম্বরে ‘নির্বাচনকালীন সর্বদলীয়’ সরকার গঠনের সময় মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে ৩০ জন বাদ পড়েন। তাঁদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক, ফারুক খান ও আবদুল মান্নান খান ছিলেন। ২০১৪ সালে গঠিত নতুন সরকারে তাঁদের আর নেওয়া হয়নি। জায়গা পাননি আগের মন্ত্রী রমেশ সেনও।
মান্নান খান প্রতিমন্ত্রী থেকে বাদ পড়ার পর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে পরাজিত হন। এরপর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে কয়েকবার হাজিরা দিতে হয় তাঁকে। দীর্ঘদিন ধরেই মান্নান খান আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিন্তু মন্ত্রিত্ব ও সাংসদ পদ হারানোর পর দপ্তরের দায়িত্বও অনানুষ্ঠানিকভাবে হারান তিনি। আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইটে দপ্তর সম্পাদক হিসেবে মান্নান খানের পাশাপাশি আবদুস সোবহান গোলাপের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। কার্যত দপ্তর চালাতেন আবদুস সোবহান। অবশ্য এবারের সম্মেলনে শোকপ্রস্তাব পাঠ করার সুযোগ পান মান্নান খান।
আব্দুর রাজ্জাক খাদ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় খাদ্য বিভাগে নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তিনি সমালোচিত হন। আর ফারুক খান বাণিজ্যমন্ত্রী থাকাকালে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সমালোচনায় পড়েছিলেন।
আর পীযূষ ভট্টাচার্য যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে সাংসদ হন। রাজনৈতিকভাবে এতটা পরিচিত নন। তিনি সভাপতিমণ্ডলীতে স্থান পাওয়ায় দলের নেতা ও কাউন্সিলররাও কিছুটা বিস্মিত। তাঁর ভাই স্বপন ভট্টাচার্য যশোর-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন।
দিনাজপুরের সাবেক সাংসদ সতীশ চন্দ্র রায় বয়সের কারণে বাদ পড়েছেন সভাপতিমণ্ডলী থেকে। তাঁর বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ রয়েছে। নূহ-উল-আলম লেনিন বাদ পড়তে পারেন এমন একটা গুঞ্জন ছিল। কিন্তু কেন বাদ পড়লেন, তা নেতা-কর্মীদের কাছে পরিষ্কার নয়। আবদুল মান্নান খানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের পরও তাঁকে পদোন্নতি দেওয়ার ফলে লেনিনের বাদ পড়াটা দলে আলোচিত। দলের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নূহ-উল-আলম লেনিনকে গণজাগরণ মঞ্চের পেছনের কুশীলব মনে করতেন। এ জন্য দলীয় ফোরামে তাঁকে পরোক্ষভাবে সমালোচনাও করেন কেউ কেউ। তাঁর বাদ পড়ার পেছনে এটা কারণ হতে পারে।
সভাপতিমণ্ডলীর তিনটি পদ এখনো ফাঁকা আছে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন এসেছেন সাবেক ছাত্রনেতা আবদুর রহমান। সদ্য সাবেক কমিটির তিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি ও জাহাঙ্গীর কবির নানক স্বপদেই আছেন। আগের কমিটির কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমানকেও স্বপদে বহাল রাখা হয়।
গুঞ্জন, বিপরীত আলোচনা, অতঃপর কাদেরের পদ পাওয়া: সাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ আশরাফের স্থলে ওবায়দুল কাদের আসছেন—এই গুঞ্জনটা শুরু হয় গত বুধবার রাত থেকেই। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ওবায়দুল কাদের নিজে গণমাধ্যমকে জানান, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা তাঁকে সাধারণ সম্পাদকের পদের জন্য প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আকাশে চাঁদ উঠলে সবাই দেখতে পাবে।’ এ কথা বলার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক রসাত্মক আলোচনা শুরু হয়। শুক্রবার দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ গণমাধ্যমে বলেন, সকল জল্পনাকল্পনা ভুয়া প্রমাণিত হবে। এই দুই নেতা গত কয়েক দিন একাধিকবার দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাদা আলাদা সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেন বলে জানা যায়। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। কেউ সৈয়দ আশরাফকে দলের সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে যাওয়ার অনুরোধ করে স্ট্যাটাস দেন। অনেকে ওবায়দুল কাদেরকে সমর্থন করেন। আবার কেউ কেউ এই দুজনের বাইরে অন্য কাউকে সাধারণ সম্পাদক করার দাবি তোলেন। এই আলোচনায় দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন কাউন্সিলররাও। একাধিক কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বললে দুই নেতার পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য পাওয়া যায়। তবে শনিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাউন্সিলররা সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যের সময় করতালি দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। একাধিক কাউন্সিলর বলেন, আসলে দলীয় সভাপতি যাঁকে চাইবেন, তিনিই সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন। এ বিষয়ে তাঁদের মাথাব্যথার কিছু নেই। একাধিক কাউন্সিলর নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কাউন্সিলরদের একটা অংশ ওবায়দুল কাদেরের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পক্ষে ছিল না। এ জন্য তাঁর নাম ঘোষণার সময় তাৎক্ষণিকভাবে অনেকে উচ্ছ্বাস দেখাননি। আবার বিরোধিতাও করেননি। অবশ্য কমিটি ঘোষণার পর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের বাইরে শেখ হাসিনার পাশাপাশি ওবায়দুল কাদেরের নামেও স্লোগান শোনা যায়।
আরও যেসব অনুমোদন: সম্মেলনে সংশোধিত ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়। ঘোষণাপত্র উপকমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম কিছু পরিবর্তন উল্লেখ করে ৪০ পৃষ্ঠার ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করেন। একইভাবে গঠনতন্ত্র উপপরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক পরিবর্তিত গঠনতন্ত্র অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করেন। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা প্রয়োজনীয় সংশোধনের সুযোগ রেখে অনুমোদনের আহ্বান করলে কাউন্সিলররা তা পাস করেন। কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান ১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকার দলীয় বাজেট উপস্থাপন করলে তা পাস হয়। এরপর দলীয় প্রধান বলেন, আগের ঘোষণাপত্রের অনেক কিছুই বাস্তবায়ন হয়ে গেছে। এ জন্য নতুন করে কিছু লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের আয়-ব্যয়ের হিসাব খুব স্বচ্ছ। প্রতিবছর নিরীক্ষা করা হয়।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য গঠিত সংসদীয় বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই বোর্ড কাউন্সিলররা অনুমোদন করেন। সংসদীয় বোর্ডের সদস্যসংখ্যা ১১। আর স্থানীয় সরকার বোর্ডের সদস্য ১৮ জন। এই দুই বোর্ডেই দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া জ্যেষ্ঠ নেতারা রয়েছেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.