প্রায় ১৫ মাস পর চট্টগ্রামে টেস্ট খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ দল। পাঁচ দিন দারুণ লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ২২ রানে হেরে যায় দল। এত ভালো খেলার পরও এমন হারের প্রভাব নিশ্চয় কিছুটা হলেও থাকবে ঢাকা টেস্টে। অবশ্য দলের সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবাল মনে করেন ঢাকায় চট্টগ্রাম টেস্টের কোনো প্রভাবই পড়বে না। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না সেই ম্যাচের প্রভাব থাকা উচিত। এত দিন পর যদি ভালো না খেলতাম তাহলে এর প্রভাব থাকতো। আমার মনে হয়, এই ম্যাচে আমরা আরও ভালোভাবে প্রস্তুত থাকবো ও আত্মবিশ্বাসটাও থাকবে।’ টেস্টের সহ-অধিনায়ক বলেন, ‘দর্শক থেকে শুরু করে মিডিয়া সবাই বলছে আমরা অনেক ভালো খেলেছি, অনেক ভালো করেছি কিন্তু আমি মনে করি এসব ভুলেই আমাদের ঢাকা টেস্টে মাঠে নামতে হবে। কারণ, আমরা যদি জিততাম তাহলে অবশ্যই একটা অন্য রকম কথা ছিল। হেরে গেছি, খারাপ লাগছে। আর একটা কথা হলো আমাদের টেস্টের রেকর্ডও তেমন না যে জিতবোই তা বলতে পারবো। আসল কথা হলো, অল্পতেই আমাদের খুশি হলে চলবে না। অল্পতে খুশি হলে আমরা এগিয়ে যেতে পারবো না। আমাদের প্রত্যেক ক্রিকেটার যারা মাঠে নামি তাদের প্রত্যেকের লক্ষ্য থাকে ভালো খেলা। চট্টগ্রামে আমরা পাঁচ দিন লড়াই করেছি এটা ভাল দিক। আমাদের প্রথম লক্ষ্য থাকবে সেটা করা। এরপর জয় বা ড্রর চিন্তা।’ গতকাল দলের প্রধান কোচ হাথুরুসিংহে থেকে শুরু করে নির্বাচক ও ক্রিকেটারদের চোখ ছিল মিরপুর শেরেবাংলা মাঠের উইকেটের দিকে। অনেকেই আশা করছেন চট্টগ্রামের মতো উইকেট হলে এখানেও ইংল্যান্ডের সঙ্গে দারুণ লড়াই হবে। প্রথম টেস্টের মতো উইকেট চান কি না! জানতে চাইলে তামিম বলেন, ‘দেখেন উইকেটের বিষয়টা সম্পূর্ণ টিম ম্যানেজমেন্টের বিষয়। উইকেট নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সেই আলোচনা বা কেমন উইকেট চাই তা সবার সামনে বলে দেয়া কোনোভাবেই ঠিক হবে না।’ তবে তিনি আরও বলেন, ‘যখন আমাদের এখানে খেলা হয় তখন উইকেট নিয়ে কথা আসে। দেখেন ইংল্যান্ডে গিয়ে তো আমরা স্পিন উইকেট আশা করি না। সেখানে সিমিং কন্ডিশন এটাই সবার জানা। বাংলাদেশ বা ভারতে যখনই খেলে তখনই উইকেট নিয়ে আলোচনা হয়। আমার মনে হয় ঘরের সুবিধা বলে একটা কথা আছে। সেটা সব দলই নেবে। আর সেই সুবিধা নিয়ে আমাদের দল হিসেবে উইকেটে যা করা উচিত তাই করতে হবে।’ অন্যদিকে উইকেটের সুবিধা নিয়ে না ভেবে নিজেদের খেলাটাই আসল বলে মনে করে তামিম ইকবাল। কারণ, চট্টগ্রামে দল মনের মতো উইকেট পেলেও সেখানে জয় পেয়েছে ইংল্যান্ডই। এ বিষয়ে দলের সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে তামিম বলেন, ‘আসলে উইকেট নিয়ে আমাদের এত ভাবার কিছু নেই। চট্টগ্রামে আমরা যেমন চেয়েছিলাম তেমন উইকেটই পেয়েছি। কিন্তু তাতে কী হয়েছে? আমরা তো জিততে পারিনি। আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত উইকেট যেমনই হোক না কেন আমরা টসে জিতি বা না জিতি আমাদের মাঠে খেলতে হবে। দেখা গেল, উইকেট আমাদের মনের মতো হয়েছে কিন্তু আমরা সেখানে আমাদের পরিকল্পনা মতো ব্যাটিং বা বোলিং করতে পারলাম না। তাতে তো সুবিধা নেবে প্রতিপক্ষ। তাই আমি আবারও বলছি টস বা উইকেট নিয়ে না ভেবে আমাদের অবশ্য নিজেদের কাজটা করতে হবে ব্যাট-বল হতে।’ বাংলাদেশ দলের করণীয় নিয়ে তামিম বলেন, ‘আমাদের ব্যাট হাতে নেমে চিন্তা করতে হবে সেট হয়ে বেশি সময় খেলে আসা। এটি সত্যি যে চট্টগ্রাম টেস্টে ৩০/৪০ রান করা মানে ৬০/৭০ রানের সমান। কিন্তু আমরা এই ৩০/৩৫ রানকে আরও একটু বেশি করতে পারলে আমরা আরও ভালো অবস্থানে থাকতাম। আর তাই ভালো খেলা ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নেই।’ উইকেট ও বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স ছাড়া আলোচনায় ছিল ডিআরএস পদ্ধতির বিতর্ক। তবে এই নিয়েও ভাবতে চান না তামিম। তিনি বলেন, ‘আসলে ডিআরএসটা আমি নিজেও ভালো বুঝি না। এটি একটি পদ্ধতি যা অনেকটাই ভাগ্যনির্ভর। এখানে প্রতিপক্ষ যেমন সুবিধা পেয়েছে আমরাও পেয়েছি। আমি বলতে চাচ্ছি এই সব নিয়ে না ভেবে। মাঠে আমাদের পারফরম্যানন্স ঠিক রাখতে হবে। আমাদের ভুলে যেতে হবে চট্টগ্রাম টেস্টে কী করেছিলাম। কারণ, আমরা ভালো খেলেছি, এটি কিন্তু কোথাও লেখা থাকবে না। আমরা হেরেছি সেটাই রেকর্ডে লেখা থাকবে।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.