খুব ছোটবেলা থেকে অভিনয়ের সঙ্গে সখ্য জনপ্রিয় অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টির। মঞ্চেই কাজ শুরু করেছিলেন। সেখানে যে যাত্রা শুরু হয় এখনও চলছে। তবে এখন আর মঞ্চে নয়। টিভিপর্দায় সরব তুষ্টি। এরই মধ্যে অভিজ্ঞ অভিনেত্রীদের তালিকায়ও নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন। নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও রয়েছে তার বিচরণ। বর্তমানে একাধিক ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করছেন তুষ্টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑ ‘অলসপুর’, ‘স্বর্নলতা’, ‘এক চিলতে পাখি’, ‘নীড় খোঁজে গাঙচিল’, ‘টিপু সুলতান’, ‘প্রহেলিকা’, ও ‘একি কা-’। একজন অভিনেত্রী হিসেবে সব ধরনের নাটকেই অভিনয় করেন তুষ্টি। তবে সারা বছর ধারাবাহিকে কাজ করেন বলে খ- নাটকের প্রতি বরাবরই আলাদা গুরুত্ব থাকে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ ব্যাপারে তুষ্টি বলেন, একজন অভিনয় শিল্পী হিসেবে সব ধরনের নাটকেই অভিনয় করতে হয়। খ- বা ধারাবাহিক নিয়ে আলাদা বিশেষ কোন পছন্দের জায়গা নেই। তবে একখ-ের নাটকের প্রতি সবসময় অন্যরকম গুরুত্ব থাকে। কারণ ধারাবাহিক তো সারা বছরই করা হয়। খ- নাটকে কাজ কম করি। অভিনয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পথচলা। এ সময়ে এসে অর্জিত হয়েছে অনেক অভিজ্ঞতা। সেটার আলোকে বর্তমান সময়ের নাটক নিয়ে তুষ্টি বলেন, আসলে নাটকের মান নিয়ে কথা বলার জন্য অনেক অভিজ্ঞ মানুষ আছেন। তারা আমার চেয়ে ভালো বলতে পারবেন। আমি না হয় এ বিষয়ে কথা না বলি। তবে এটা ঠিক যে অতিমাত্রায় বিজ্ঞাপনের কারণে দর্শক বিদেশী চ্যানেলে ঝুঁকছেন। সে সঙ্গে নাটকের মানও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এর কারণ আমার কাছে বাজেট একটা সমস্যা বলে মনে হয়। তবে আমাদের নাটকের হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসবে এমনটাই বিশ্বাস আমার। দুর্দিন তো সবসময় থাকে না। সুদিন অবশ্যই ফিরে আসবে। অভিনয়ের পাশপাশি শিক্ষকতা করছেন তুষ্টি। রাজধানীর বিএএফ শাহীন স্কুলে অনেকদিন ধরেই এ পেশায় নিয়জিত রয়েছেন তিনি। পাশপাশি দেশের কল্যাণে, দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে নাম লিখিয়েছেন রাজনীতিতেও। গত বছর ‘ইয়াং অ্যাকটিভ’ নামের ওই রাজনৈতিক দলটির কাজ শুরু করেছেন তুষ্টি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিনয় কিংবা শিক্ষকতা আমার নিজের পরিচয় বহন করে। সেখানে আমি নিজের সম্মানবোধ খুঁজে পাই। দর্শক আমার অভিনয় দেখে আমাকে ভালোবাসেন। একইভাবে আমার কলেজের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা আমাকে আমার কাজের জন্য যথেষ্ট সম্মান করেন। এ সম্মান এবং ভালোবাসার জায়গাটার ব্যাপ্তি আরও বাড়াতে, দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে আমি রাজনীতিতে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছি। আর আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। সে জায়গা থেকেও আমার দেশের প্রতি দেশের মানুষের প্রতি কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আশা করি আমার শুভাকাঙ্খীরা আমার পাশে থাকবেন, আমাকে সহযোগিতা করবেন। ‘ইয়াং অ্যাকটিভ’ দলটি নিয়ে যেন আমি এগিয়ে যেতে পারি সেজন্য সবাই দোয়া করবেন। রাজনীতির পাশাপাশি চলতি বছরে ‘মানুষ ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংগঠন চালু করেছেন তুষ্টি। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্যই এই সংগঠন থেকে কাজ করছেন তিনি। তুষ্টি শুধু এখানে একা নন। তার সঙ্গে রয়েছে আরও একদল তরুণ-তরুণী। ‘মানুষ ফাউন্ডেশন’ সম্পর্কে তুষ্টি বলেন, দেশে ও জাতির কল্যাণে রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছে। সে সঙ্গে এ ফাউন্ডেশনটিও স্থাপন করেছি মানুষের জন্যই। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমরা বেশকিছু কাজ সম্পন্ন করেছি। এই শীতেও দেশের শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করছি। আর তাছাড়া শিশুদের জন্য তো কোনো না কোনো কাজ করবই। নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তুষ্টির। গতবছর রুহুল আমিনের পরিচালনায় ‘হাছন রাজা’ নামের একটি চলচ্চিত্রের কাজ শেষ করেছেন তিনি। এর মধ্যে অনেক সময়ই পার হয়ে গেছে। কিন্তু ছবিটি মুক্তির মিছিলে যোগ দেয়নি। অবশ্য তুষ্টি সম্প্রতি জানতে পেরেছেন সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরুতেই প্রেক্ষাগৃহে দেখা মিলবে ‘হাছন রাজা’র।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.