নোভাক জকোভিচকে সরিয়ে টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে এলেন বৃটেনের অ্যান্ডি মারে। শনিবার রাতে কানাডার মাইলস রাওনিচ সেমিফাইনাল থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলে মারে প্যারিস মাস্টার্স টেনিসের ফাইনালে ওঠেন আর এরই সঙ্গে তার শীর্ষস্থানও নিশ্চিত হয়। গতকাল ফাইনালে তার প্রতিপক্ষ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের জন ইসনার। প্রায় সাড়ে ১১ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ারে স্কটল্যান্ডের এ তারকা ৭৯৮টি ম্যাচ খেলেছেন। এ সময়ে তিনি জিতেছেন ৪২ শিরোপা যার তিনটি গ্রান্ড স্লাম আর দুটি অলিম্পিক স্বর্ণ। গত বছর বৃটেনকে ডেভিস কাপ জেতাতে ভূমিকা রাখেন তিনি। খেলোয়াড়ি জীবনের এ সেরা অর্জনের পর মারে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, আমি আজ নিজেকে অনেক গর্বিত মনে করছি। তবে সত্যি বলতে আমি কখনও ভাবিনি আমি এক নম্বর খেলোয়াড় হতে পারবো। এটা আমার দীর্ঘ পরিশ্রমের ফল এবং জীবনের কঠিনতম অর্জন। তবে এটাই জীবনের সেরা ঘটনা নয়।’ তিনি আরো বলেন, ২০১৬তে আমার কাছে পিতা হওয়াটাই সবচেয়ে বেশি আনন্দের ঘটনা। এটা জীবনে অনেক পরিবর্তন আনে।’ মারে তার পেশাদার জীবনে উইম্বলডন জেতাটাই বেশি গুরুত্বের বলে মনে করেন। আজ ইন্টারন্যাশনাল টেনিস অ্যাসোসিয়েশন আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন র্যাঙ্কিং ঘোষণা করবে। প্রথমবার র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ওঠা খেলোয়াড়দের মধ্যে মারে হলেন দ্বিতীয় বয়োজ্যেষ্ঠ। তার বয়স এখন ২৯। আর এর আগে ১৯৭৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার জন নিউকম্বে যখন প্রথম এক নম্বর হন তখন তার বয়স ছিল ৩০ বছর। মারে দুই থেকে এক নম্বরে ওঠার মাঝখানে সবচেয়ে বেশি সময় অবস্থানকারী খেলোয়াড়ও। তিনি প্রথম র্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে ওঠেন ২০০৯ সালে। সার্বিয়ান তারকা জকোভিচ গত ১২২ সপ্তাহ ধরে র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর স্থান দখল করে ছিলেন। অথচ বছরটায় তারও মন্দ শুরু ছিল না। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের পর জুনে ফরাসি ওপেনের ফাইনালে তিনি হারান মারেকে। আর এখন সেই মারে জকোভিচকে স্থানচ্যুত করলেন। শুক্রবার প্যারিস মাস্টার্সেরই কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে গেলে মারের শীর্ষস্থানে ওঠার পথ পরিষ্কার হয়। তবে মারে মাত্র পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন জকোভিচের চেয়ে। আগামী সপ্তাহেই মারে তার স্থান হারাতে পারেন জকোভিচের কাছে যদি লন্ডনে অনুষ্ঠেয় এটিপি ওয়ার্ল্ড ট্যুরের ফাইনালে ভালো করতে না পারেন। তবে মারে বলেন, এখন আমাকে নতুন করে লক্ষ্য ঠিক করতে হবে যাতে এখানে বেশিদিন অবস্থান করা যায়। ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক টেনিসে র্যাঙ্কিং পদ্ধতি প্রবর্তনের পর এর আগে মাত্র ২৫ জন এক নম্বর স্থানে উঠতে পেরেছেন। তবে তার আগে বৃটেনের কেউ এ স্থানে পৌঁছতে পারেননি। তার এ অর্জনের পর রজার ফেদেরার, মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা থেকে শুরু করে সাবেক ও বর্তমান অনেক টেনিস তারকা তাকে অভিনন্দন জানান। ২০১৬ বছরটা দারুণ কাটালেন মারে। উইম্বলডন শিরোপা ছাড়া অলিম্পিক স্বর্ণপদক জয় করেন তিনি এবার। এছাড়া ১২ ইভেন্টে অংশ নিয়ে ১১টিরই ফাইনালে খেলেন তিনি। এ বছর তিনি জিতেছেন তার নিজের সর্বোচ্চ ৭৩ ম্যাচ। মারের এ জায়গায় আসার পথে রজার ফেদেরার ও রাফায়েল নাদাল যথাক্রমে ১৭ ও ১৪টি গ্রান্ড স্লাম শিরোপা জেতেন। ১৯৮৪ সালের পর অন্তত সাতজন খেলোয়াড় র্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বর স্থানে পৌঁছার পরও শীর্ষস্থানে উঠতে ব্যর্থ হন। এরা হলেন, মাইকেল স্টিক, গোরান ইভানিসেভিচ, মাইকেল চ্যাং, পিটার কোর্ডা, অ্যালেক্স কোরেশিয়া, ম্যাগনাস নরম্যান ও টমি হাস।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.