পাকিস্তানের ইসলামাবাদের নীল চোখের চা-ওয়ালা আরশাদ খানের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর কয়েক দিন ধরে ইন্টারনেট মেতেছিল নেপালি সবজিওয়ালিকে নিয়ে। মেয়েটির দারুণ সৌন্দর্য ও আপাত সরলতার প্রশংসা করে টুইটার ব্যবহারকারীরা তার ছবি ভাইরাল করলেও তার নামটি ছিল অজানা।
বলা হচ্ছে, দূর থেকে ওই মেয়েটির ছবি তুলেছিলেন এক পর্যটক।
অবশেষে জানা গেছে, মেয়েটির পরিচয়। তার নাম কুসুম শ্রেষ্ঠা, বয়স ১৮।
তখন পর্যন্ত অজ্ঞাত পরিচয় নেপালি এই মেয়েটি স্থানীয় এক বাজারে সবজি বিক্রি করছেন ও সবজি বহন করছেন- ইন্টারনেটে এমন ছবি ছড়িয়ে পড়ে।
তার সবজি বহনের ছবি টুইটারে পোস্টের পর ‘মিট দ্য#নেপালি #তরকারিওয়ালি#এবং #সবজিওয়ালি’ নামে টুইটারে নেপালের সবজিওয়ালির ছবি ট্রেন্ডিং হিসেবে পোস্ট হতে থাকে।
কুসুম শ্রেষ্ঠার পরিবার থাকে কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ৫৫ মাইল দূরে, গোর্খা এলাকার শহর বাগলিংয়ে।
কুসুম শ্রেষ্ঠা জানান, তিনি চিতওয়ান জেলার একটি কলেজে পড়েন এবং ছুটির দিনে পরিবারকে সাহায্যের জন্য সবজি বেচার কাজ করেন।
কলেজের ছুটিতে ওই সবজি বিক্রির কাজের সময় তার ছবিগুলো তোলা হয়েছিল।
যেসব ছবি ইন্টারনেট মাত করেছিল, তার একটি ছিল তিনি একটি ঝুড়িতে সবজি নিয়ে যাচ্ছেন- মুখে হাসি।
আরেকটি ছবিতে তিনি বাজারে সবজি বিক্রির সময় মোবাইলে কথা বলছেন।
ফটোগ্রাফার রূপচন্দ্র মহারজান নেপালি একটি ব্লগসাইট, গুন্ডরুক পোস্টকে জানিয়েছেন, গোর্খা এবং চিতওয়ানের মাঝামাঝি একটি ব্রিজ থেকে কুসুম শ্রেষ্ঠার ছবিগুলো তোলা হয়েছে।
রূপচন্দ্র মহারজান যে কোম্পানির হয়ে কাজ করেন, সেই কোম্পানিটি স্থানীয় ত্রিশুলি নদীতে র্যাফটিংয়ের আয়োজন করে থাকে।
ইন্টারনেটে খ্যাতি পাওয়া এই তরুণী জানান, ছবি ভাইরাল হওয়ার কাহিনী তিনি প্রথম তার এক বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধু বলল, তুমি কি সেই মেয়ে যার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে? আমি তখনও কিছুই জানতাম না।’
কুসুম শ্রেষ্ঠা আরও বলেন, ‘তারপর ওই ছবিগুলো আমাকে পাঠানোর পর আমার মনে হল আরে এগুলো তো আমারই ছবি। ওটা আমার সবজি বেচার দিন ছিল। রূপচন্দ্র আমার ছবি তুলেছিল, তবে তোলার সময় আমি জানতাম না যে সে ছবি তুলছে।’
ইন্টারনেটে এভাবে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ায় রীতিমতো অবাক হয়ে গেছেন কুসুম শ্রেষ্ঠা।
পাকিস্তানের চা-ওয়ালার মতো তিনিও যদি মডেলিংয়ের প্রস্তাব পান, তাহলে কি করবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে কুসুম শ্রেষ্ঠ বলেন, ‘হ্যাঁ, করব।’
কুসুম শ্রেষ্ঠার বাবা নারায়ণ শ্রেষ্ঠা নেপালের এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, তার মেয়ের ছবি ইন্টারনেটে জনপ্রিয় হওয়ার খবর তিনি শুনেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের মতো লাজুক মেয়ে এমন পাবলিসিটি পাবে, তা কেউ ভাবতে পারেনি। সে খুব কম কথা বলে।’
কুসুম শ্রেষ্ঠা ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়ছেন এবং পড়া শেষে তিনি নার্সের প্রশিক্ষণ নিতে চান।
মেয়ে নার্স হতে চায় বলে নিশ্চিত করেন তার বাবাও।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.