মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের প্রায় সব দেশের প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে বিরোধীদলীয় নেতারা তাঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও একটি অভিনন্দনপত্র লিখেছেন ট্রাম্পের উদ্দেশে। যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে যাওয়ার আগেই সেটা ফাঁস করা হলো এখানে! কাল্পনিক এই অভিনন্দনপত্রটি লিখেছেন হুমায়ূন হানিফ
হে অগ্রনায়ক
সমগ্র আমেরিকার নয়নের মণি, উন্নয়নের অগ্রদূত, জনগণের বন্ধু, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কান্ডারি, আপসহীন ও সংগ্রামী নেতা, দুর্দিনের বন্ধু, তীব্র প্রতিবাদী তরুণ বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, আকর্ষণীয় রূপের অধিকারী শ্রদ্ধেয় ডোনাল ট্রাম্প সাহেব, একজন নারী প্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে দুনির্বার লড়াই করিয়া ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জনের জন্য জাতীয় পার্টির পক্ষ হইতে আপনাকে জানাই উষ্ণ অভিনন্দন।
নিন্দুকেরা যে যা-ই বলুক না কেন, জাতীয় পার্টি মনে-প্রাণে আপনাকেই আমেরিকার ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে দেখিতে চাহিয়াছিল। আমাদের এই পবিত্র ইচ্ছা পূরণ হওয়ায় আমরা যারপরনাই আনন্দিত। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে আপনি ক্ষমতার শীর্ষে আরোহণ করিয়া বিশ্ববাসীকে তাক লাগাইয়া দিয়াছেন।
হে নারীবান্ধব আপনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হইয়াছেন শুনিয়া আমরা এক মিনিট ধরিয়া চিৎকারের মাধ্যমে আনন্দ প্রকাশ করিয়াছি। যদিও আশপাশের কতিপয় সুশীল ইহা লইয়া ঝামেলা পাকাইবার তালে ছিল। তবে আমরা ইহাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে ধরিয়াছি। রাজনীতির ভাষায়, পৃথিবীর সকল ঘটনাই তো বিচ্ছিন্ন। এইখানে সুসজ্জিত বলিয়া কোনো ঘটনা নাই।
আপনি হয়তো আমাদের বর্তমান অবস্থার কথা জানিয়া থাকিবেন। প্রধান বিরোধী দলে থাকিবার পরও সরকারের নিকট হইতে আমরা দীর্ঘদিন শ্বশুরবাড়িতে বসবাসরত ঘরজামাইয়ের মতো ব্যবহার পাইতেছি। না আছে অধিকার, না আছে বিরুদ্ধাচরণের ক্ষমতা!
হে সুবিবেচক
দেশে আগত বিদেশি অথিতিরা আমাদের সহিত এরূপ অবান্ধব আচরণ করিয়া যাইতেছে। এই তো সেদিন চীনের সম্মানিত প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সাহেব বাংলাদেশে আসিয়া ঘুরিয়া গেলেন। কতজনের সহিত সাক্ষাৎও করিলেন। প্রধান বিরোধী দল হইবার পরও আমাদের সহিত কোনো সাক্ষাৎ না করিয়াই চলিয়া গেলেন তিনি। লজ্জায় তো মরিয়া যাইতে ইচ্ছা করিয়াছিল!
হে গণতন্ত্রের কবি
যা-ই হোক, এই সব ভাবিয়া চিন্তা করিয়া কী হইবে! আপনি যেহেতু আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হইয়াই গিয়াছেন, সেহেতু আমাদের আর দুশ্চিন্তা কী? আমরা আপনাকে আপন ভাইয়ের মতোই মনে করি। আর আপনার সঙ্গে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে অনেক মিল আমার। নারীদের প্রতি আমাদের ভালোবাসার কমতি নাই। তা ছাড়া লজ্জা-শরম বলিয়া ব্যাপারটাও আমাদের সঙ্গে যায় না। উল্টাপাল্টা কথা বলিতেও আমাদের তুলনা হয় না। তাই আশায় বুক না বাঁধিয়া আর কী করিব!
আর কথা বাড়াইলাম না। শ্রদ্ধেয় মেলানিয়া ভাবিকে আমাদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাইবেন। বাংলাদেশে আসিলে অবশ্যই দেখা না করিয়া যাইবেন না! আপনার সর্বাঙ্গীণ সুস্থতা কামনা করি।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির পক্ষ হইতে
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ
বিশিষ্ট কবি ও প্রেমিক
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.