মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটান্স এ আসরে পেয়েছিল সবচেয়ে বড় লজ্জার হার। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৪৪ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল, যা বিপিএল’র ইতিহাসে সর্বনিম্ন। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে ৫০-এর নিচে অলআউট হওয়ার এটি নবম ঘটনা। অথচ সেই খুলনাই এখন পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। ৬ ম্যাচে পাঁচ জয়ে তাদের অর্জন ১০ পয়েন্ট। আজ ফের সেই রংপুরের মুখোমুখি হচ্ছে খুলনা। অন্যদিকে খুলনাকে লজ্জা দেয়া রংপুরের অবস্থাও দারুণ। ৫ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে তালিকার তৃতীয় স্থানে। আজ জিতলেই দ্বিতীয় স্থানে থাকা ঢাকাকে টপকে ছুঁয়ে ফেলবে শীর্ষে থাকা খুলনাকে। তাই ম্যাচটি খুলনার জন্য শুধু শীর্ষস্থান ধরে রাখাই নয়, নিজেদের লজ্জা ভোলানোর মিশনও। আজ শেষ হচ্ছে বিপিএল চতুর্থ আসরের চট্টগ্রাম পর্ব। শেষদিনে দুপুর ১টায় প্রথম খেলায় খুলনা টাইটান্সের মুখোমুখি হবে রংপুর রাইডার্স। খুলনার সাফল্যের অন্যতম নায়ক দলের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কখনও বল হাতে কখনও ব্যাট হাতে এই অলরাউন্ডার দলকে জয় উপহার দিচ্ছেন। রাজশাহী ও চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে শেষ ওভারে হারতে থাকা ম্যাচে বল হাতে ছিনিয়ে নেন অবিশ্বাস্য জয়। এরপর ঢাকা ও বরিশালের বিপক্ষে ব্যাট হাতে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন। এবার ৬ ম্যাচে ১টি ফিফটিতে করেছেন ১৫৭ রান। তারপরই আছেন বিদেশি রিকি ওয়েলস। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪ ম্যাচে ১০৫ রান। বাকি কোন ব্যাটসম্যানই এখন পর্যন্ত তিন অংকের রান করতে পারেনি। আরিফুল হক ৭৯, ক্যারিবীয় ক্রিকেটার নিকোলাস পুরান ৭১, ওপেনার হাসানুজ্জামান ৬৪, ও দলের সিনিয়র ক্রিকেটার শুভাগত হোম ৬ ম্যাচে মাত্র ৫৮ রান করেছেন। যে কারণে শীর্ষে থাকলেও ভীষণ দুশ্চিন্তায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তিনি বলেন, ‘টানা জিতছি বলে হয়তো ব্যাটিংয়ের খারাপ দিকটা চোখে পড়ছে না। আমাদের টপ অর্ডারের ব্যাটিংটা ভালো হচ্ছে না। এখানে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। আশা করছি তারা দ্রুত উন্নতি করবে। না হলে বড় ম্যাচে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে।’ ব্যাটিং নিয়ে চিন্তা থাকলেও বোলিং নিয়ে খুশি অধিনায়ক। দলের পক্ষে পেসার শফিউল ইসলাম নিয়েছেন সর্বোচ্চ ১৩ উইকেট। এরপর মধ্যে দুই ম্যাচেই ৪ উইকেট করে তুলে নিয়েছিলেন। শফিউল এখন বিপিএল’র দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। পাকিস্তানি জুনায়েদ খানও দারুণ বোলিং করেছেন ৬ ম্যাচে একবার চার উইকেটসহ নিয়েছেন ১০টি উইকেট। এছাড়াও আরও দুই পেসার কেভিন কুপার ও মো. শরীফ নিয়েছেন ৬ টি করে উইকেট। বলা চলে খুলনার পেসাররাই সফল। আর স্পিনারদের মধ্যে অধিনায়ক রিয়াদেরই সর্বোচ্চ শিকার ৭টি উইকেট। তবে বল হাতে ব্যর্থ আরেক স্পিনার শুভাগত হোম। তার শিকার মাত্র ১টি উইকেট। খুলনার বোলিং শক্তিকেই বেশি এগিয়ে রাখলেন প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্সের সেরা ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন। তিনি বলেন, ‘খুলনা দারুণ খেলছে। বিশেষ করে ওদের বোলাররা বেশ ভাল করছে। আর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদতো অসাধারণ খেলছেন। তিনি একাই জয়-পরাজয়ে পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন।’ রংপুরের ব্যাটিংয়ে অন্যতম শক্তি এখন আফগানিস্তানের মো. শাহজাদ ও মিঠুন। পাঁচ ম্যাচে শাহজাদ করেছেন ১৭৯ রান। দুই দুই বার ম্যাচ জিতিয়ে হয়েছেন ম্যাচ সেরা। আর মিঠুনের সংগ্রহ এক ফিফটিতে ১৩৪ রান। বোলারদের মধ্যে সফল তিন স্পিনার। সোহাগ গাজী নিয়েছেন ৯টি উইকেট। পাকিস্তানের তারকা শহীদ আফ্রিদিও ৯টি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়াও আরাফাত সানিও শিকার ৫টি উইকেট। সমান সংখ্যক উইকেট নিয়ে পেসারদের মধ্যে সফল রুবেল হোসেন। দলের আত্মবিশ্বাস নিয়ে মিঠুন বলেন, ‘আমরা খুলনাকে একবার ৪৪ রানে অলআউট করেছিলাম। কিন্তু এই ঘটনা বারবার ঘটেনা। আমাদের মাঠে সেরা খেলাটাই খেলতে হবে। আমাদের ব্যাটিং-বোলিং ভালো। আমার নিজেরও চেষ্টা থাকবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.