তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিকদের মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলায় এক বছরে পাঁচজন সাক্ষী হাজির করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এ মামলায় সাক্ষী ১০৪ জন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীর দাবি, রাষ্ট্রপক্ষের ব্যর্থতার কারণে সাক্ষী হাজির করতে পারছেন না। তবে রাষ্ট্রপক্ষের পাল্টা অভিযোগ, জেরার নামে আসামিপক্ষ অহেতুক সময় নষ্ট করছে। মামলাটি ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন আছে। আজ থেকে চার বছর আগে তাজরীন ফ্যাশনসে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১১ জন পোশাকশ্রমিক নিহত হন।
এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু ঠিকমতো সাক্ষী হাজির করতে না পেরে একাধিকবার সময় নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, গত এক বছরে ১০৪ জনের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ মাত্র কয়েকজন সাক্ষীকে হাজির করেছে। রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করতে পারছে না। আসামিপক্ষের আরেক আইনজীবী এ টি এম গোলাম গাউছ বলেন, আসামিপক্ষও আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করে। ২৯ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য আছে।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি খন্দকার আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটির বিচার নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে যথেষ্ট আন্তরিক। তিনি বলেন, আসামিপক্ষ সাক্ষীকে জেরার নামে সময়ক্ষেপণ করে থাকে। এ কারণে মামলার বিচারকাজ বিলম্ব হচ্ছে।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সাতটার দিকে সাভারের আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তুবা গ্রুপের তৈরি পোশাক কারখানা তাজরীন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১১ জন পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু হয়। আহত হন ১০৪ জন শ্রমিক। ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি।
অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন তাজরীন ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন, তাঁর স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার, প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী এম মাহবুবুল মোর্শেদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুলাল, স্টোর ইনচার্জ হামিদুল ইসলাম, সিকিউরিটি সুপারভাইজার আল-আমিন, ইনচার্জ আনিসুর রহমান, স্টোর ইনচার্জ আল-আমিন, কারখানা ম্যানেজার আবদুর রাজ্জাক, প্রোডাকশন ম্যানেজার মোবারক হোসেন মঞ্জু, কোয়ালিটি ম্যানেজার শহিদুজ্জামান, সিকিউরিটি গার্ড রানা ওরফে আনারুল ও লোডার শামীম মিয়া। তাঁদের মধ্যে শেষের চারজন পলাতক এবং অন্যরা জামিনে আছেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.