দুর্নীতির দায়ে প্রেসিডেন্টের পদ হারানো দিলমা রুসেফের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন মাইকেল তেমের। এবারে তার বিরুদ্ধেও উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। এই অভিযোগ তুলেছেন গত সপ্তাহে পদত্যাগ করা একজন মন্ত্রী। বলেছেন, দুর্নীতিতে জড়িত হওয়ার জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করেছেন তেমের। এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তেমের। বিবিসির খবরে বলা হয়, মাইকেল তেমেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা ওই সাবেক মন্ত্রী হলেন মার্সেলো ক্যালেরো। তিনি সংস্কৃতিমন্ত্রীর পদ থেকে গত সপ্তাহে ইস্তফা দেন। ক্যালেরো জানিয়েছেন, অন্য এক মন্ত্রীকে ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক চুক্তিতে সহায়তা করার জন্য তাকে বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট তেমের। ঐতিহাসিক সালভাদর ডিস্ট্রিক্টে একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণের একটি প্রকল্প ছিল। ওই প্রকল্পের অনুমোদন করে দেয়ার কথা তাকে বলেছিলেন তেমের। তবে মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করা ক্যালেরো ওই পরিকল্পনা ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন। তেমের তার বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও এটা স্বীকার করে নিয়েছেন যে তিনি ক্যালেরোর সঙ্গে ওই প্রকল্প নিয়ে কথা বলেছিলেন। দিলমা রুসেফের অভিশংসনের পর ব্রাজিলকে দুর্নীতিমুক্ত করার শপথ নিয়ে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন রুসেফের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল তেমের। তবে দুর্নীতির অভিযোগে একে একে তার মন্ত্রিসভার তিন সদস্যকে হারান তিনি। এবারে অভিযোগ সরাসরি তার বিরুদ্ধেই। এই স্ক্যান্ডালের সঙ্গে জড়িত সরকারের একজন সেক্রেটারি গেডেল ভিয়েরা লিমা। তিনি সালভাদরের বাহিয়াতে একটি জমি কিনেছেন। সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী ক্যালেরো দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ওই জমিকে ঐতিহাসিক স্থান বিবেচনায় কোনো ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে ভেটো দেন। ক্যালো পুলিশকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট তেমের ও অন্য একজন মন্ত্রী তাকে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ওই স্থাপনা নির্মাণের অনুমোদন দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। তেমেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার আগেই এ সপ্তাহের শুরুতে লিমার ওই ঘটনার জন্য একটি তদন্ত শুরু হয়। লিমাকে বরখাস্ত করার জন্যও চাপ দেয়া হয় তেমেরকে। তবে তেমের জানিয়েছেন, লিমা স্বপদে বহাল থাকবেন। বিবিসির দক্ষিণ আমেরিকার প্রতিনিধি ড্যানিয়েল গ্যালাস বিশ্লেষণীতে লিখেছেন, মাইকেল তেমের মাত্র ছয় মাস হলো দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তার বৈধতা নিয়ে এখনো অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন রয়েছে। আর এই ছয় মাসের মধ্যেই এটা তার সরকারের দ্বিতীয়বারের মতো বড়সড় দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা। এবারে তিনি নিজেই অভিযুক্ত। অভিযোগকারী মার্সেলো ক্যালেরো পেশাগতভাবে একজন কূটনীতিক এবং মূলধারার রাজনীতিতে বাইরের একজন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ক্যালেরো তার সঙ্গে হওয়া কথোপকথনকে ভুল বুঝছেন এবং এসব কথোপকথনে কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগের বিষয় ছিল না। তবে সমালোচকরা পাল্টা প্রশ্ন করছেন, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট কেন তার একজন প্রধান মিত্রের ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক চুক্তিকে সামনে নিয়ে আসবেন? কিছুদিন আগেই মাইকেল তেমেরের উসকানিতে অভিশংসিত হওয়া প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফকে নিয়ে ব্রাজিলের বিরোধী দল এখনো বেদনাহত। তারা এরই মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট তেমেরের দায়িত্ব অবসানের আহ্বান জানাতে শুরু করেছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.