টিভি নাটকে জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের মধ্যে রুনা খান অন্যতম। দক্ষ অভিনয়শৈলীর মাধ্যমে অসংখ্য দর্শকের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন তিনি। শুধু টিভি পর্দায়ই নন, মঞ্চেও সরব এ অভিনেত্রী। নিয়মিত কাজ করছেন সেখানেও। তবে পর্দায়ই দর্শক পরিচিতি তার। টিভি ও মঞ্চের পাশাপাশি রুনা খান নিয়মিত অভিনয় করছেন চলচ্চিত্রেও। গেল বছরই ‘ছিটকিনি’ ও ‘কালো মেঘের ভেলা’ নামের দুটো ছবির কাজ শেষ করেছেন রুনা খান। সেগুলো এখন মুক্তির অপেক্ষায়। এদিকে সমপ্রতি আরও দুটি ছবির কাজ শুরুর অপেক্ষায় এ অভিনেত্রী। একটি হলো জনপ্রিয় অভিনেতা তৌকীর আহমেদের পরিচালনায় ‘হালদা’ এবং অন্যটি বদরুল আনাম সৌদের ‘গহীন বালুচর’। দুটি চলচ্চিত্রেই ভিন্নধর্মী দুটি চরিত্রে দেখা যাবে রুনা খানকে। এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। সেসঙ্গে আরো যোগ করে রুনা খান বলেন, এ দুটি ছবির কাজ নিয়েই এখন আমার যত ভাবনা। সব প্রস্তুতি নেয়া হয়ে গেছে। আমি খুব আশাবাদী ‘হালদা’ ও ‘গহীন বালুচর’-এর কাজ নিয়ে। সব ঠিক থাকলে ডিসেম্বরেই দুটোর শুটিং শুরু করবো। এদিকে চলচ্চিত্রের প্রস্তুতি ছাড়াও রুনা এ মুহূর্তে বেশকিছু ধারাবাহিকে অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত। এর মধ্যে গতকাল থেকে তিনি ‘প্রেসিডেন্ট সিরাজ-উদ-দৌলা’ নামের একটি নাটকের শুটিং শুরু করেছেন। এটি পরিচালনায় রয়েছেন রায়হান খান। এছাড়া রুনা খান আরো অভিনয় করছেন অভিনয় ‘সংসার’, ‘সংগ্রাম’, ‘দহন’, ‘লাইফ ইন অ্যা মেট্রো’ ধারাবাহিকগুলোতে। নাটকের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পথচলা রুনা খানের। সে জায়গা থেকে এ মাধ্যমটির প্রতি ভালোবাসাটাও অন্যরকম। তাছাড়া নিজেকে পরিপূর্ণ নাটকের মানুষ বলেই মনে করেন রুনা খান। তাই নাটকের কোনো সমস্যা হলে অন্যদের সঙ্গে তিনিও এগিয়ে আসেন। সংহতি জানান তাদের সঙ্গে। বর্তমানে টিভি নাটকে চলছে বড় একটি সংকট। আর সে সংকট অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে সমপ্রতি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে একাধিক ‘বাংলায় ডাবকৃত বিদেশি সিরিয়াল’ প্রবেশের ফলে। এ নিয়ে নাট্যাঙ্গন উত্তাল হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আন্দোলনের ডাক এসেছে। আগামীকাল সে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নাটকের সব শিল্পী-কলাকুশলী সমবেত হবেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। এতে অংশ নিতে উপস্থিত হবে রুনা খানও। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি নিজেকে নাটকের মানুষই মনে করি। যেহেতু এ মাধ্যমটির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আছি তাই সবকিছু নাটককে ঘিরেই। এর ভালোর জন্য যদি সবাই কোনো কিছু করে আমিও তাতে অংশ নেবো। সে জায়গা থেকে এ আন্দোলনের সঙ্গে আমিও আছি। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে বর্তমান নাটক প্রসঙ্গে রুনা খান আরও বলেন, এখন অনেক চ্যানেল হয়েছে। সে সঙ্গে কাজও বেড়েছে। নাটক নির্মাণ হচ্ছে প্রচুর। আর এ বিষয়ে আমি পজিটিভ ধারণাই করি। চ্যানেল বাড়ায় ও কাজের পরিমাণও বৃদ্ধি পাওয়ায় কোনটা ভালো কোনটা খারাপ তা চোখে পড়ে। আর আমি বলবো এখন নাটকের মান আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে। মান ভালো হলেও দর্শক কমেছে। এমন কথাই অনেকে বলেন। আর সেটার কারণ নাকি অতিমাত্রায় বিজ্ঞাপন প্রচার। এ বিষয়ে কি মনে করেন রুনা খান? তিনি বলেন, দেখুন বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে তো আমি কিছু বলতে পারবো না। কারণ, বিজ্ঞাপন না হলে চ্যানেল অচল হয়ে যাবে। তবে এটা সত্যি, আমাদের চ্যানেলগুলোতে যে নাটক প্রচারকালীন অধিক বিজ্ঞাপন প্রচার হয়। যা দর্শককে বিরক্ত করতে বাধ্য করে। কিন্তু এ বিষয়ে আমি কিছু বলে খুব একটা লাভ হবে না । বিজ্ঞাপন নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও দর্শক ফেরাতে কি করণীয় সেটা নির্দিষ্ট করে ঠিকই বলেছেন রুনা খান। তিনি বলেন, এটা চ্যানেল কর্তৃপক্ষের হাতে। তারা যদি নাটক প্রচারকালীন বিজ্ঞাপনটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে তাহলে আর কোনো ঝামেলা থাকবে না। তবে এর জন্য সবাই একটা সিস্টেমের মধ্যে আসা উচিত। চ্যানেল, বিজ্ঞাপনী সংস্থা সবার এগিয়ে আসতে হবে। আর এই সিস্টেমটা যদি হয়ে যায় তাহলে দর্শকের জন্য অনেক উপকার হবে বলে মনে করি আমি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.