বাংলাদেশে এখন পাঁচজন গ্র্যান্ডমাস্টার। দেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছিলেন নিয়াজ মোরশেদ ১৯৮৭ সালে। সর্বশেষ গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব। শেষ নর্মটা পান ২০০৮ সালে। জিএম হওয়ার পাইপলাইনে এখন কোনো দাবাড়ু নেই। এখন দেশে আন্তর্জাতিক মাস্টার আছেন তিনজন। এঁদের মধ্যে সবচেয়ে সক্রিয় মিনহাজউদ্দিন আহমেদ সাগর ও আবু সুফিয়ান শাকিল। এঁদের পূর্বসূরি জিল্লুর রহমান চম্পক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার দু’জন রানী হামিদ ও শামীমা আক্তার লিজা। পুরুষ ফিদে মাস্টার ১৪ জন, মহিলা ৬ জন। রেটেড খেলোয়াড় ৯৫৩ জন। এই হচ্ছে বাংলাদেশের দাবাড়ুদের পরিসংখ্যান! নিয়মিত টুর্নামেন্ট হচ্ছে না বলে রেটিংও বাড়ছে না দাবাড়ুদের। তবে এই অবস্থার পরিবর্তন চায় বর্তমান ফেডারেশন। সে লক্ষ্যে পাঁচ গ্র্যান্ডমাস্টারের মধ্যে তিন জনকেই মাসিক ভাতা দিচ্ছে ফেডারেশন। এদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে কোচিংয়ের জন্য। জুনিয়রদের কোচিং দিয়ে গড়ে তুলবেন তারা। বাংলাদেশে বেশ ক’জন রয়েছেন আন্তর্জাতিক মাস্টার, ফিদে মাস্টার ও ক্যান্ডিডেট মাস্টার। তাই এবার সেই জুনিয়রদের মানোন্নয়নের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে ফেডারেশন। কোচিংয়ে নিয়োগ করা হয়েছে গ্র্যান্ড মাস্টার নিয়াজ মোরশেদ, জিয়াউর রহমান ও এনামুল হোসেন রাজীবকে। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মাস্টার মিনহাজ উদ্দিন আহমেদ সাগর, আবু সুফিয়ান শাকিল, খন্দকার আমিনুল ইসলাম, শেখ নাসির আহমেদ ও মেহেদী হাসান পরাগকে নিয়ে এক মাস আগে থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন জিয়া। দু’দিন হলো ১৫ জন ফিদে মাস্টার ও ক্যান্ডিডেট মাস্টারদের নিয়ে কাজ করছেন রাজীব। আর উঠতি বয়সী দাবাড়ুদের নিয়ে কাজ করবেন দেশের প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার নিয়াজ মোরশেদ। এজন্য এই তিন গ্র্যান্ডমাস্টারের প্রত্যেককে মাসিক এক লাখ টাকা করে বছরে ৩৬ লাখ টাকা দেবে ফেডারেশন। তিনমাস করে বছরে তিনবার এই চুক্তি নবায়ন করা হবে। তবে বাকি দুই গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাত বিন সাত্তার ও মোল্লা আবদুল্লাহ আল রাকিব দাবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেই বলেই তাদের যুক্ত করতে পারেনি ফেডারেশন। দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন শামীম বলেন, ‘আমাদের অনেক আন্তর্জাতিক মাস্টার, ফিদে মাস্টার রয়েছে। কিন্তু তাদের মান এগুচ্ছে না। রেটিংও বাড়ছে না। তাই আমরা দাবাড়ুদের মানোন্নয়নের জন্য প্রথমবার এমন উদ্যোগ নিয়েছি।’ এদিকে হকি, ব্যাডমিন্টন ও সাঁতারের পর এবার বিসিবি’র কাছে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা চাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে দাবাও। শামীমের কথা, ‘খুব শিগগিরই আমাদের সভাপতি বেনজির আহমেদ সাহেব বিসিবি’র সভাপতির সঙ্গে অর্থ পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে কথা বলবেন। আমাদের এক কোটি ৩৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। আশা করি বিসিবি আমাদের সহযোগিতা করবে।’ ফেডারেশনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশের সর্বশেষ গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব। তার বিশ্বাস তৃণমূলে কাজ করলে খুব শিগগিরই নতুন গ্র্যান্ডমাস্টার পাবে বাংলাদেশ। তবে গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়ার মতে ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি টুর্নামেন্ট খেলতে হবে দাবাড়ুদের। ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি বেশি বেশি আন্তর্জার্তিক টুর্নামেন্ট খেলাতে পারলেই কাঙ্ক্ষিত ফল পাবে ফেডারেশন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.