চলচ্চিত্রের সময়টা ভালো যাচ্ছে না বলেই কি গুণী অভিনেত্রীরা এক এক করে চলচ্চিত্র থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। শাবনূর, পূর্ণিমা, পপি কেউই এখন আর নিয়মিত বড় পর্দায় কাজ করছেন না। সেই তালিকায় যোগ হয়েছিলেন সিমলাও। ইন্ডাস্ট্রির কথা ভাবলে কষ্ট লাগে। কাজ করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু সেই পরিচিত মুখগুলো কোথায়! প্রয়াত শহীদুল ইসলাম খোকন ভাই ছিলেন আমার অভিভাবক। তার মাধ্যমেই আমার চলচ্চিত্রে আসা। আজ তিনিও আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন। -কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সিমলা। অনেক দিন ধরেই চলচ্চিত্রে অনিয়মিত তিনি। সবশেষ তরুণ নির্মাতা রুবেল আনুশের ‘নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প’ ছবিতে কাজ করেন। এ ছবি নিয়েও কম বিতর্কে জড়াতে হয়নি তাকে। এদিকে তার মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় কাজেও মনোযোগ দিতে পারেননি সিমলা। ‘নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প’ ছবি নিয়ে জানতে চাইলে সিমলা বলেন, ছবির কাজ শেষ হয়েছে। তবে ছবিটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নানান অনিয়ম ছিল। আমি প্রথম থেকে চেয়েছি নির্দিষ্ট সময়ে ছবিটি শেষ করতে। কিন্তু সঠিক সময়ে ছবি না শেষ করে পরিচালক ও প্রযোজক অতিরিক্ত সময় দাবি করেন। আমি তারপরও ছবির কাজ শেষ করেছি। গল্পটির জন্যই কষ্ট করে ছবির কাজ শেষ করেছি। গল্পটি অন্য ছবি থেকে ভিন্ন। আমি চরিত্র ভেবে কাজ করি। আশা করি, দর্শকের ভালো লাগবে। মাঝে নিজের ঘাড়ের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন সিমলা। চলতি বছরের মার্চ মাসে ঢাকায় ফিরেই তিনি রুবেল আনুশের ‘নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প’ চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করেন। বর্তমানে এ ছবির সম্পাদনার কাজ চলছে। ‘ম্যাডাম ফুলি’ খ্যাত এই অভিনেত্রী নিজের জীবনের প্রথম চলচ্চিত্রেই অর্জন করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। সেটাও ১৯৯৯ সালের কথা। এরপর আরও বেশকিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে সেগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করলেও ‘ম্যাডাম ফুলি’র মতো আকাশছোঁয়া সাফল্য পায়নি। তবে সিমলা ভক্তদের জন্য সুখবর হলো দীর্ঘ সময় পর আবারও ‘ম্যাডাম ফুলি টু’ নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন তিনি। এটি নির্মাণ করবেন আশিকুর রহমান। চলচ্চিত্রটি নিয়ে সিমলা বলেন, চলচ্চিত্রের সার্বিক অবস্থা ভালো না। তাই চলচ্চিত্রের কাজটা শুরু হতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে খুব শিগগিরই এ চলচ্চিত্রের কাজ শুরু হবার কথা রয়েছে। পরিচালক আশিকুর রহমান বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া রয়েছে। তিনি ফিরলেই নতুন এর কাজ চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছেন। ‘ম্যাডাম ফুলি টু’ ছবিতে নায়ক এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে সিমলা চান, ম্যাডাম ফুলির সেই সিমলা দর্শকের নিকট যে খ্যাতি অর্জন করেছিল সেটি যেন ‘ম্যাডাম ফুলি টু’ চলচ্চিত্রেও সমানভাবে অক্ষুণ্ন থাকে। সিমলা অভিনীত গত বছরে শুটিং শুরু করা ‘নাইওর’ নামে আরেকটি চলচ্চিত্রের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চলচ্চিত্রটির কাহিনী লিখেছেন পরিচালক রাশিদ পলাশ। সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেছেন আদনান আদীব খান। এখানে সিমলার বিপরীতে প্রথমবারের মতো অভিনয় করেছেন আনিসুর রহমান মিলন। এ চলচ্চিত্রটি নিয়ে সবশেষে সিমলা বলেন, এ চলচ্চিত্রের প্রযোজক একজন মেয়ে। তার কিছুদিন আগে বিয়ে হয়েছে। তাই এ কাজটি শেষ করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে এর বেশিরভাগ কাজ শেষ করেছি আমি। আর কদিন সময় দিলে এর কাজও শেষ হবে। এ চলচ্চিত্রটি নিয়েও আমি বেশ আশাবাদী। চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়েও কথা হয় সিমলার সঙ্গে। এ বিষয়ে সিমলা বলেন, শিল্পী হিসেবে অভিনয়টুকুই শিখেছি আমি। চলচ্চিত্রে নাম লেখানোর পর অন্য কোনো কাজ আর করিনি। আমি এই পেশায়ই থাকতে চাই এবং ভালো কিছু কাজ করতে চাই। চলচ্চিত্রের এই নিভু নিভু অবস্থার উন্নতি হোক এটাই আমার চাওয়া থাকবে। অভিনেত্রী হিসেবে বিভিন্ন চরিত্রে কাজ করে যেতে চাই।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.