প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগে দিল্লি সফরের আগ্রহ দেখিয়েছেন। ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় তিনি তাঁর এ আগ্রহের কথা জানান। গতকাল শনিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে দেখা করেন তিনি। শেখ হাসিনা ও আকবরের মধ্যে আলোচনার পর সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এহসানুল করিম প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দুই দেশের কর্মকর্তারা আলোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি চূড়ান্ত করবেন। আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা না হলেও ১৮ ডিসেম্বর তিন দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। আকস্মিকভাবে গত বুধবার সফরটি পিছিয়ে দিতে ভারতকে অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ। সাক্ষাৎকালে এম জে আকবর প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে ভারতের সরকার ও জনগণ অধীর অপেক্ষায় আছে। নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনা দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন এবং সহযোগিতার দিগন্ত প্রসারিত হয়েছে। দুই দেশের সহযোগিতার জন্য অনেক ক্ষেত্র আছে, এ ক্ষেত্রে জলবিদ্যুৎ ও বিদ্যুতের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সমস্যা থাকতে পারে। তবে তা বন্ধুত্ব ও সহযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করবে না। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের ‘ন্যূনতম ছাড় না দেওয়ার নীতি’র কথা টেনে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে তৎপরতা চালাতে দেওয়া হবে না। এম জে আকবরের সঙ্গে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর গৌরবময় অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের পরপরই ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর দেশে ফিরে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। কেননা, বিশ্বের কোনো মিত্র শক্তিই যুদ্ধজয়ের পরপরই দেশে ফিরে যায়নি।’ দুই দেশের পানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জলাধার নির্মাণের বিষয়ে দুই নেতা আলোচনা করেন। ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতেই এসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনার ভূমিকাকে ঐতিহাসিক হিসেবে উল্লেখ করেন। সদিচ্ছা থাকলে যেকোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব বলেও মত দেন তিনি। হাঙ্গেরিতে ওয়ার্ল্ড ওয়াটার সামিটে যাওয়ার পথে তুর্কমিনিস্তানের আশগাবাদ বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানের একটি ফ্লাইটের জরুরি অবতরণের প্রসঙ্গটি তোলেন এম জে আকবর। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানান।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.