প্রকাশ্যে কার্যক্রম চালাতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হচ্ছেন ইসলামী ছাত্রী সংস্থার সদস্যরা। এ কারণে নতুন কৌশলে গোপনে কার্যক্রম চালাচ্ছেন সংস্থার সদস্যরা। বর্তমানে ফেসবুকের বিভিন্ন পেইজ খুলে তারা কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে দেশের শীর্ষ এক গোয়েন্দা সংস্থা। এ সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিবেদনও পাঠিয়েছেন তারা। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামী ছাত্রী সংস্থার সদস্যরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখতে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মহিলা/ছাত্রীদের নিজ দলে ভেড়ানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করছেন। ফেসবুকের ‘ইসলামী ক্লাব ফর গার্লস পেজ’ এবং ব্লাড রোজ নামে পেইজ ব্যবহার করে এসব কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা। এছাড়া ফেসবুকের বাঁশের কেল্লা, রেডিসঙ্গী.কম, চেতনায় দীপ্তপথ, রেডিও মুন্না. কম, রেডিওস্বদেশ.নেট এবং কিউবাইবিডি. কম পেইজ ব্যবহার করে সরলমনা মহিলা ও ছাত্রীদের বিভ্রান্ত করছে। ইসলামী ছাত্রী সংস্থার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৮ই জুলাই ইসলামী ছাত্রী সংস্থার সভানেত্রী মোছাঃ নিপা খাতুনকে জিহাদি বইসহ গ্রেপ্তার করে চারঘাট থানা পুলিশ। এরপর থেকে হিফজুল কোরআন আদর্শ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা মোসাঃ নাজমা ইসলাম ছাত্রী সংস্থার সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। রাজশাহী কলেজে হিসাব বিজ্ঞান শেষ বর্ষে পড়াশোনা করছেন তিনি। তার স্বামী সুমন ২০১৩ সালের হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর আর বাড়িতে ফেরেননি। এরপর থেকে ছাত্রী সংস্থার ব্যানারে তৎপর নাজমা ইসলাম। বর্তমানে সক্রিয় ইসলামী ছাত্রী সংস্থার কর্মীদের মধ্যে রয়েছে- মোসাঃ মরিয়ম বেগম, মোসাঃ সুরজান, মোসাঃ রোকসানা বেগম, ফারজানা আক্তার (মুন্নি) এবং উম্মে মামুরা জাকিয়া ফেরদৌস। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে বিশেষ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, গত ৪ঠা আগস্ট রাজশাহী মহানগরস্থ সাহেব বাজার শিবগঞ্জ সুইটস মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের উপরে ছাত্রী মেসে নাজমা ইসলামের রুমে একত্রিত হয়ে গোপন মিটিং করেন। এ মিটিংয়ে তারা ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন। বিশেষ প্রতিবেদন মন্তব্যে বলা হয়েছে, রাজশাহী জেলায় ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদে নারী সমাজকে সম্পৃক্ত, উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করতে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার কর্মীরা সক্রিয় রয়েছে। রাজশাহী জেলাসহ সারা দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের ‘ইসলামী ক্লাব ফর গার্লস পেজ’, ব্লাড রোজ, বাঁশের কেল্লা, রেডিসঙ্গী.কম, চেতনায় দীপ্তপথ, রেডিও মুন্না. কম, রেডিওস্বদেশ.নেট এবং কিউবাইবিডি. কম পেইজ ব্যবহার করে জামায়াত- শিবিরের নেতাকর্মীরা সক্রিয় ও তৎপর রয়েছে। বিশেষ প্রতিবেদনে সুপারিশে বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ার এসব পেজগুলো ব্লক করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া যায়। পাশাপাশি এসব পেইজ গোয়েন্দা নজরদারি ও পর্যবেক্ষণে রাখতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়া যায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এরই মধ্যে বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.