দিলারা জামান। একজন শক্তিমান অভিনয়শিল্পী। অভিনয়ের প্রতিটি শাখায় যার রয়েছে দাপুটে বিচরণ। এখনকার গ্ল্যামারাস অভিনেত্রীদের দেখে তরুণ প্রজন্মের যেমন চোখ জুড়িয়ে যায়, দিলারা জামানের সোনালী অতীতও অনেকটা সেরকমই ছিল। পর্দার প্রিয় এই মুখ এখনও কাজ করছেন বিরামহীন। এ সময়ে বেশি ব্যস্ত টিভি পর্দাতেই। একসময় চলচ্চিত্র কিংবা মঞ্চ নাটকের কাজ থাকলেও এখন সেসব ব্যস্ততা থেকে বিরত রয়েছেন তিনি। বুধবার যখন কথা হচ্ছিল তখন হিমেল আশরাফের পরিচালনায় ‘গুগল সব জানে’ শিরোনামের একটি ধারাবাহিকে শুটিং নিয়ে ব্যস্ত দিলারা জামান। শুটিংয়ের ফাঁকে তিনি বলেন, এখন তো বেশি একটা কাজ করছি না। অভিনয়টা রক্তে মিশে আছে বলে নিয়মিত করা হচ্ছে। এই ধারাবাহিকটির গল্প বেশ দারুণ। আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। নির্মাণশৈলীও ভালো হচ্ছে। বলতে পারেন ভালো একটি প্রোডাকশনের কাজ চলছে। এ ধারাবাহিক ছাড়াও বর্তমানে ‘ফুল আর কাটা’, ‘থ্রি সিস্টার্স’ সহ বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করছেন দিলারা জামান। তাছাড়া একখন্ডের নাটকের কাজ তো রয়েছেই। বেশ কয়েকদিন আগেই দুটি খন্ড নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। পাশাপাশি প্রথমবারের মতো ‘প্রযতেœ’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যরে চলচ্চিত্রের কাজ করেছেন এ অভিনেত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসলে আমি অনেক কাজই করি। কিন্তু ভুলে যাই। সব মনে রাখতে পারি না। এই স্বল্পদৈর্ঘ্যরে ছবিটিতে কাজ করেছি সেটাও ভুলে গেছি। মনে করতে পারছি না। এদিকে সম্প্রতি একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন দিলারা জামান। এর নাম ‘হালদা’। অনুদানের এ ছবিটি পরিচালনা করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা তৌকীর আহমেদ। এ প্রসঙ্গে দিলারা জামান বলেন, ছবিটিতে কাজ করে বেশ ভালো লেগেছে। অনেকদিন পর একটি ভালো গল্পের চলচ্চিত্রে অভিনয় করলাম। তৌকীরও খুব যতœ নিয়ে বানিয়েছে। আশা করছি দর্শকেরও ভালো লাগবে। দীর্ঘদিন ধরে টিভি নাটকে কাজ করছেন দিলারা জামান। এখনকার কাজ আর তার সময়ের কাজের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য। কাজে নতুনত্ব এসেছে। সবকিছুই বদলে গেছে। আগের মতো নেই কিছুই। দিলারা জামান বলেন, এখনকার নাটকের কাজ অনেক বদলে গেছে। নতুনত্ব এসেছে। বিশেষত যেসব প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে সেটা আগে ছিল না। এই পরিবর্তনটাই বেশি লক্ষ্যণীয়। আর এর ফলে অনেক ভিন্নতাও এসেছে নাটকে। প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে নাটকে পরিবর্তন এসেছে। তবে কি মান বেড়েছে? এ প্রসঙ্গে দিলারা জামান বলেন, এখন তো অনেক চ্যানেল। কাজের সংখ্যাও অনেক। সব নাটক তো আর ভালো হচ্ছে না। কিছু ভালো কিছু খারাপ হবেই। এত চ্যানেলের ভিড়ে এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে এটা বলতে পারি, চ্যানেল বাজেট কমিয়ে দিয়েছে। ভালো নাটক করতে গেলে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন সেটা নেই। তাছাড়া এজেন্সির মাধ্যমে নাটক নির্মাণ হচ্ছে। তাদের পছন্দেই শিল্পী বাছাই করা হয়। এজেন্সি যাদের নিতে বলে তাদের দিয়েই কাজ করছেন নির্মাতা। এটা বড় একটা সমস্যা। তবে এর চেয়েও সমস্যা হলো, চ্যানেল বাজেট যেমন কম দিচ্ছে তেমনিই সময়ও বেঁধে দিচ্ছে। এত স্বল্প সময়ের মধ্যে কি কাজ করা সম্ভব? আমরা তো চাই ভালো একটি নাটক দর্শককে উপহার দিতে। কিন্তু বাজেট ও সময়ের কথা চিন্তা করলে ভালোটা আর হয়ে ওঠে না। এদিকে দেশীয় টিভি চ্যানেলে ডাবকৃত বিদেশী সিরিয়াল বন্ধের দাবিতে এফটিপিওর আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে দিলারা জামান বলেন, দেখুন শুধু ডাবকৃত সিরিয়াল নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে না। তাদের কয়েকটি দাবির মধ্যে এটি একটি। আর আমি এসব নিয়ে তেমনটা ভাবছি না। ভালোটা তারাই জানেন। এফটিপিওর একাধিক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ হয়েছে বর্তমানে অনেক শুটিং হাউস বন্ধ আছে। যেখানে একসময় নিয়মিত নাটক নির্মাণ হতো। ডাবকৃত বিদেশী সিরিয়াল প্রচারে আসার পর থেকে এ সমস্যা। এ বিষয়ে দিলারা জামান বলেন, আমি তো সেটা ভালো বুঝি না। তারা নাটকের বোদ্ধা। তারাই ভালো জানেন। নিশ্চয়ই বৃহত্তর স্বার্থেই এ আন্দোলন হচ্ছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.