শহরে যেখানেই অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, সেখানেই দ্রুতগতিতে ছুটে যাচ্ছে সে। হাঁটার সময় ওজনের কারণেই কেঁপে উঠছে মাটি, বৃষ্টির মতো ছুটে আসা বুলেট তার ধাতব শরীরে লেগে নিষ্ক্রিয় ঢিলের মতো খসে পড়ছে। এ দৃশ্য কল্পনা করতে গেলে প্রথমেই মনে পড়বে হলিউডের বিখ্যাত ছবি রোবোকপের নায়কের ছবি। অথবা মনে পড়তে পারে মানবজাতিকে রক্ষায় ভিনগ্রহ থেকে আসা টার্মিনেটর কিংবা ট্রান্সফরমারদের নাম। হলিউডে নির্মিত বিশ্বজুড়ে সাড়াজাগানো রোবোকপ চলচ্চিত্র কিংবা ‘টার্মিনেটর’ ও ‘ট্রান্সফরমার’ সিরিজের চলচ্চিত্রগুলোয় সংশ্লিষ্ট ছিলেন ডিজাইনার ভিতালি বুলগারভ। এবার তাঁর ডিজাইনেই দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কোম্পানি তৈরি করেছে এমনই একটি দ্বিপদী রোবট। হলিউডের বিখ্যাত পরিচালক জেমস ক্যামেরনের অ্যাভাটার চলচ্চিত্রে যে ধরনের রোবট দেখানো হয়েছিল, এর গঠন অনেকটা সে রকমই। এটি হাঁটতে পারে, ওজনের কারণে কেঁপে ওঠে মাটি। চার মিটার (১৩ ফুট) লম্বা এবং দেড় টন ওজনের রোবটটি তৈরি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার হ্যানকুক মেরি টেকনোলজি। এটি তৈরিতে সংশ্লিষ্ট ৩০ প্রকৌশলী গত মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো রোবটটি পরীক্ষা করেন। হ্যানকুক মেরির চেয়ারম্যান ইয়াং জিন-হো বলেন, ‘আমাদের এই রোবট বিশ্বের প্রথম দ্বিপদী রোবট, যা চরম বিপজ্জনক এলাকায়, যেখানে মানুষ অরক্ষিত অবস্থায় যেতে পারে না, সেখানে গিয়ে কাজ করতে পারবে।’ তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পে এখন পর্যন্ত তিনি ২৭ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছেন। রোবটটির পরীক্ষা-সংক্রান্ত একটি ভিডিও-ও ছেড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে দেখা যায়, মেথড-টু নামের এই রোবটের বুকে বসে একজন প্রকৌশলী হাত-পা নড়াচড়া করছেন এবং সে অনুযায়ী রোবটটিও তাঁর হাত-পা নাড়ছে। ধাতব হাত দুটির একেকটির ওজন ১৩০ কেজি। রোবটের ডিজাইনার ভিতালি বুলগারভ তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘এই রোবট তৈরির পর আমরা বুঝতে পারছি, বাস্তব পৃথিবীর সমস্যাগুলো সমাধানে এর প্রয়োগ করা যাবে।’ তবে তিনি জানিয়েছেন, রোবটটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়ে গেছে। এর শক্তি সরবরাহ হচ্ছে বৈদ্যুতিক তারের মাধ্যমে এবং হাঁটার সময় টলমল করে। কাজেই আরও কাজ বাকি আছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.