রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনকারী সেই পুলিশ কর্মকর্তাদের আটক করেছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সেদেশের সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের নির্যাতনের অভিযোগ অন্তহীন। এরই একটি ঘটনার ভিডিও চিত্র ছড়িয়ে পড়ে সম্প্রতি। তাতে দেখা যায়, নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা রোহিঙ্গা মুসলিম পুরুষদের জড়ো করে বসিয়ে রেখেছে সারিবদ্ধভাবে। গ্রামের অন্য পুরুষ সদস্যরা দু’হাত মাথার পেছনে নিয়ে আত্মসমর্পণের ভঙ্গিতে এগিয়ে আসছেন সামনে। তারা নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের কাছে আসতেই তাদেরকে প্রহার করা হয়। লাথি মারা হয়। সারিবদ্ধভাবে বসানোর পরও তাদেরকে লাথি মারা হয়। পা দিয়ে পেষা হয়। রাইফেলের বাঁট দিয়ে প্রহার করা হয়। এ দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করেন অন্য এক নিরাপত্তা রক্ষাকারী সদস্য। তা মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় মিয়ানমার প্রথমবারের মতো এ অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে। তারই অংশ হিসেবে ওই নির্যাতন অভিযানে পুলিশের যেসব সদস্য অংশ নিয়েছিল তাদের কমপক্ষে ৪ জনকে আটক করেছে তারা। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে বলা হয়, প্রথমে নির্যাতনের ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে ইউটিউবে। রোহিঙ্গা এক ব্লগার এটি পোস্ট করেন। পরে তা বেশকিছু সামাজিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এরই ফল ধরে ওই পুলিশ সদস্যদের আটক করা হয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বার বারই রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করছে। কিন্তু পর্যবেক্ষকরা মনে করেন এমন নির্যাতনের ফুটেজ অস্বাভাবিক নয়। এতে ফুটে উঠেছে রোহিঙ্গাদের নির্যাতিত হওয়ার বাস্তবতা। তারা নিয়মিত এমন নির্যাতনের মুখে পড়েন। ৯ই অক্টোবরে সীমান্তে একটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলায় ৯ নিরাপত্তা রক্ষী নিহত হন। এ জন্য সরকার রোহিঙ্গাদের দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। এ সময়ে অসংখ্য নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। সন্তানের সামনে পিতাকে, পিতার সামনে সন্তানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এসব নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো জাতিসংঘে রিপোর্ট দিয়েছে। কিন্তু টনক নড়েনি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের। তারা উল্টো সেনাবাহিনীর নির্যাতনকে ঢেকে রাখার উপায় অবলম্বন করেছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.