ছোট শিশুরা হাতের কাছে যা পায় তা-ই মুখের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। কোনো জিনিস মুখের ভেতরে ঢোকার পর ধীরে ধীরে তা খাদ্যনালি, পাকস্থলী ও নাড়ি অতিক্রম করে পায়ুপথ দিয়ে বেরিয়ে যাবে, এটাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু বস্তুটি এই স্বাভাবিক গতিপথে না গিয়ে কখনো শ্বাসনালিতে ঢুকে বাতাস চলাচল বন্ধ করে দিতে পারে এবং শিশুর আকস্মিক করুণ মৃত্যু হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ৩ থেকে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা আচমকা এ ধরনের বিপদের শিকার হয়। কেননা, এ বয়সে তাদের চিবানোর ক্ষমতা, খাদ্যনালি ও শ্বাসনালির স্নায়বিক বোঝাপড়া সুদৃঢ় হয়ে ওঠে না। এর ফলে এ বয়সী বাচ্চাদের মুখের ভেতর থেকে কোনো বস্তু অতি সহজেই শ্বাসনালিতে ঢুকে যেতে পারে। শ্বাসনালিতে এগুলোর প্রবেশের কারণে মৃত্যু এড়াতে পারলেও ধীরে ধীরে তা ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি ও জটিলতা সৃষ্টি করে। এ ধরনের আকস্মিক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় ১. শিশুদের ছোট ছোট খেলনা দেবেন না। বড় আকারের খেলনা দিতে হবে, যাতে তা মুখের ভেতরে বা অন্য কোনো ছিদ্র পথে ঢোকাতে না পারে। ২. জোর করে খাওয়াবেন না, জোরাজুরিতে খাবারের অংশবিশেষ হঠাৎ শ্বাসনালিতে ঢুকে যেতে পারে। ৩. ছোট ছোট জিনিস যা ঘরেই থাকে যেমন ওষুধ (বড়ি/ক্যাপসুল), ছোট ব্যাটারি, জেমস ক্লিপ, কলম বা বল পয়েন্টের মাথা বা পেছনের দিক, গাড়ির ভাঙা ছোট অংশ ইত্যাদি শিশুর নাগালের বাইরে রাখুন। এ ছাড়া আমাদের খাবারদাবারের অংশ যেমন বরই, বরইয়ের আঁটি, জাম, আঙুর, খেজুর, খই, মুড়ি, কাঁঠালের বিচি, নারকেলের টুকরা, বাদাম, চকলেট, ছোলা ইত্যাদিও শিশুর নাগালের বাইরে রাখতে হবে। কখনোই আদর করে বা খেলাচ্ছলেও এসব ছোট জিনিস শিশুর হাতে বা মুখের ভেতরে দেবেন না। ৪. খেলার সময় যদি হঠাৎ বাচ্চার কাশি শুরু হয়, শ্বাসকষ্ট বা দমবন্ধ হয়ে আসছে বলে মনে হয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে মুখের ভেতরে কিছু ঢুকে আছে কি না, তা দেখুন এবং জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নিন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.