ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলে নিউজিল্যান্ডের কাছে সিরিজ হারের ব্যবধান ৬-০। তবে এই ছয় ম্যাচে বাংলাদেশ কখনোই জেতার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেনি, তা নয়। এক-দুবার চকিতে ঠিকই উঁকি দিয়ে গেছে সম্ভাবনা। কিন্তু ধরে রাখা যায়নি। সাকিব আল হাসানের বিশ্লেষণে এই ব্যর্থতার একটাই কারণ-দল হিসেবে জ্বলে না ওঠা। ‘যখন আমরা দল হিসেবে ভালো করেছি, তখন সবাই যেভাবে অবদান রাখতে পেরেছি, এবার হয়তো সেভাবে পারছি না। এ কারণেই এমন ফল’-বে ওভালে কাল শেষ টি-টোয়েন্টির পর বলছিলেন সাকিব। সিরিজজুড়েই খেলোয়াড়েরা বলছেন, বিদেশে এসে এমন কন্ডিশন পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু যে কন্ডিশন বাংলাদেশ দলের কাছেই এত ভালো মনে হচ্ছে, স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের কাছে সেটা কেমন? সাকিবও মনে করিয়ে দিলেন, ‘এই কন্ডিশনে আমরা হয়তো আরেকটু ভালো করতে পারতাম। তবে ওদের কন্ডিশনে ওরা অনেক ভালো দল। এটা মেনে নিতেই হবে।’ ছয় বছর পর এবার নিউজিল্যান্ডে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে এল বাংলাদেশ দল। উইকেট যতই বন্ধুভাবাপন্ন মনে হোক, জল-হাওয়ার সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ারও একটা ব্যাপার থাকে। তারপরও সাকিবের বিশ্বাস, ‘ট্যাকটিক্যাল, টেকনিক্যাল-সবদিক থেকেই ওরা নিজেদের কন্ডিশনে আমাদের চেয়ে অনেক ভালো। তবে আমরা আমাদের সেরাটা খেলতে পারলে আরও বেশি জেতার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারতাম।’
টপ অর্ডারে বড় ইনিংস, কিছু ভালো জুটি, উইকেট পতনের জোয়ারে বাঁধ দেওয়ার সামর্থ্য-সেরা খেলা খেলতে পারলে এসব এমনিতেই হয়ে যেত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে একটাও বড় জুটি গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত ইনিংসগুলোও মাঝারি গণ্ডির সীমানা ছাড়াতে পারেনি। সাকিবের ভাষায়, ‘এটাই আমাদের সমস্যা ছিল। পুরো সিরিজে আমরা তেমন কোনো জুটি গড়তে পারিনি। এমন হলে রান তাড়া করাটা কঠিন হয়ে যায়।’
সিরিজে নিজের বোলিংয়ে সন্তুষ্ট হলেও ব্যাটিং নিয়ে অতৃপ্তি আছে সাকিবেরও। কাল তো মাশরাফির বলে কেন উইলিয়ামসনের সহজ একটা ক্যাচও ফেললেন। এসব নিয়ে আত্মসমালোচনাও শোনা গেল তাঁর মুখে, ‘তামিমের ক্যাচটা অনেক কঠিন ছিল, তবে আমারটা সহজ ক্যাচই ছিল। কোনো অজুহাত দিয়ে লাভ নেই। তবে ইচ্ছে করে তো কেউ ক্যাচ মিস করতে চায় না। ফিল্ডিং পুরো দলের চেহারা ফুটিয়ে তুলতে পারে। ওদের আর আমাদের ফিল্ডিং দেখলেই বুঝতে পারবেন পার্থক্য কেমন ছিল।’
১২ জানুয়ারি থেকে বেসিন রিজার্ভে প্রথম টেস্ট। আজ ওয়েলিংটনে গিয়ে কাল থেকেই পুরোদমে টেস্টের প্রস্তুতিতে নেমে পড়বে বাংলাদেশ দল। আর সবার মতো সাকিবও বুঝতে পারছেন, সফরের কঠিনতম অংশটি সবে শুরু হচ্ছে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আর যাই হোক টেস্ট খেলাটা সহজ হবে না, ‘টেস্টের উইকেট সম্পূর্ণ আলাদা হবে। আমাদের কাজটা এর চেয়েও অনেক বেশি কঠিন হবে।’
টি-টোয়েন্টিতে মুশফিকুর রহিমের অভাবটা বড় বেশি উপলব্ধি করেছে বাংলাদেশ দল। তবে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট কাটিয়ে টেস্টে ফেরার জন্য প্রস্তুত টেস্ট অধিনায়ক। সাকিবেরও আশা, ‘উনি আমাদের ব্যাটিংয়ের অন্যতম ভরসা। তাঁর না থাকাটা স্বাভাবিকভাবেই আমাদের জন্য বড় মিস। আশা করি, উনি টেস্টে খেলবেন এবং ভালো খেলবেন।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.