ছোট পৌরসভা, সমস্যা অনেক। রাস্তাঘাট শ্রীহীন। এর মধ্যেই এলো বড় গাড়ি। আর সেকারণেই মেয়রের গাড়ি বিলাস নিয়ে আলোচনার ঝড় বইছে আখাউড়ায়। কথা উঠেছে পৌরসভার তহবিল শূন্য করে কেনা হয়েছে এই বিলাসবহুল গাড়ি। সরকারি টাকায় গাড়ি আর ব্যক্তিগত উদ্যোগে মেয়রের বাড়ি। এ আলোচনায় মুখর এখন আখাউড়ার মানুষ। পৌর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন-মিতসুবিসি স্পোর্টস জিপটি কেনা হয়েছে ৭০ লাখ ৩০ হাজার টাকায়। এই অর্থ যোগান হয়েছে পৌরসভার রাজস্ব তহবিল থেকে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে গাড়ির মডেল ও দামের অনুমতি পেয়েই গাড়ি ক্রয় করা হয়েছে। ২০১৫ সালের আগেই অনুমোদন মিলেছিল গাড়ি কেনার। এতদিন সেটি কেনা হয়নি। পৌরসভার অন্যসূত্র জানিয়েছে- পৌর তহবিলে প্রায় ৮১ লাখ টাকা ছিল। এর মধ্যে ৭০/৭৫ লাখ টাকা খরচ করে কেনা হয় এ গাড়িটি। আখাউড়ায় কালো রংয়ের এই গাড়িটি নিয়ে আসা হয় ৪ঠা জানুয়ারি। এই গাড়িদর্শনে চোখ কপালে উঠে পৌর নাগরিকদের। এক দর্শনীয় বন্তুতে পরিণত হয় পৌর মেয়রের গাড়ি। সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে আলোচনাও। আর পৌর কর্মচারীরা দুশ্চিন্তায় পড়েন তাদের বেতন জুটবে কিনা তা নিয়ে। তবে পৌর সচিব মো. ফারুক বলেছেন- ফান্ড শূন্য হয়নি। কোনো সমস্যা হবে না। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া গাড়ি কেনার সুযোগ নেই। মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, এর তদন্ত হয়েছে। তারা বিভিন্ন ডাটা নিয়েছে। এরপরই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আখাউড়া পৌরসভাকে গাড়ি কেনার অনুমতি দিয়েছে। আখাউড়া পৌরসভা দ্বিতীয় শ্রেণির। এমন ক্যাটাগরির জন্য এই বাজেটের গাড়ি প্রযোজ্য কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আখাউড়া পৌরসভার আয়তনও খুব বেশি নয়। এর উত্তরে আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন, দক্ষিণে মোগরা ইউনিয়ন, পূর্ব দিকে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন এবং পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। বাসা বাড়ির সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। ছোট এই পৌরসভায় সমস্যার কমতি নেই। নাগরিকদের অভিযোগ, রাস্তাঘাট ভাঙ্গাচুরা। পানি সরবরাহ নেই। সড়কে বিদ্যুতায়ন নেই। নেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা। নাগরিকদের এমন গুরুত্বপূর্ণ সেবার দিকে নজর না দিয়ে মেয়রের বিগ বাজেটে গাড়ি কেনার সমালোচনাই করছেন পৌরনাগরিকরা এখন। সেবা না থাকলেও কর আদায় কড়াকড়ি। অন্যান্য পৌরসভার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি কর আদায় করার অভিযোগ রয়েছে এই পৌরসভায়। প্রতি কাঁচা ঘরের জন্য বাৎসরিক কর দিতে হয় ১২৮ টাকা, আধাপাকা বিল্ডিংয়ের এক রুমের জন্য ২৫০ টাকা আর পাকাঘরের এক রুমের জন্য ৩৪০ টাকা। বাড়তি করের যন্ত্রণাতেও ক্ষুব্ধ পৌর নাগরিকরা। এদিকে পৌর শহরের রাধানগর এলাকায় সপ্তাহ দিন আগে শুরু হয়েছে মেয়রের ৭ তলা বাড়ির নির্মাণ কাজ। এ নিয়েও আলোচনা আছে। যদিও মেয়রের ঘনিষ্ঠরা বলছেন- তার প্রবাসী ভাইয়ের পাঠানো অর্থে বাড়ি হচ্ছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.