ভিনগ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণী বা এলিয়েনদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করতে বড় ধরনের একটি কর্মসূচি চালু হতে যাচ্ছে। এ প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য ধ্বংসাত্মক হতে পারে—বিজ্ঞানীদের এমন সতর্কবার্তার পরও যুক্তরাষ্ট্রে চালু হতে যাওয়া এই কর্মসূচির নাম ‘মেসেজিং এক্সট্রাটেরেসট্রিয়াল ইনটেলিজেন্স’ বা এমইটিআই। ২৭ ডিসেম্বর দ্য ইনডিপেনডেন্ট অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো মহাকাশে এমন বার্তা পাঠানো যাতে ভিনগ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীরা সেই বার্তা বুঝতে পারে। এমইটিআই ২০১৮ সাল থেকে বার্তা পাঠানোর কাজ শুরু করবে। ভিনগ্রহের প্রাণীরা মানুষের সঙ্গে কবে নাগাদ যোগাযোগ করবে, তার অপেক্ষা না করে এই কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষই আগ বাড়িয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করবে। যার মধ্য দিয়ে ভিনগ্রহের প্রাণীদের মানুষের সংস্পর্শে আসার সুযোগ তৈরি হবে।
তবে বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন যে এ ধরনের বার্তা পাঠানো মানবজাতির জন্য ভয়ংকর হতে পারে। এ ধরনের বার্তা দেওয়া হলে আমাদের অস্তিত্ব সম্পর্কে সতর্ক হবে এলিয়েনরা। এটা আমাদের পুরোপুরি ধ্বংসের কারণ হতে পারে। এই সতর্কবার্তা দেওয়া বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছেন জগদ্বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী স্যার স্টিফেন হকিংও। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘এ ধরনের বার্তা পাঠানো হলে তা আমাদের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।’
চলতি বছরের শুরুর দিকে স্টিফেন হকিং বলেছিলেন, এলিয়েনদের পাঠানো যেকোনো ধরনের বার্তায় সাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের ‘সতর্ক’ হওয়া উচিত। যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে, তবে তা হবে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের সঙ্গে আদিবাসী আমেরিকানদের প্রথম সাক্ষাতের মতো; যা মোটেই প্রীতিকর ছিল না।
মহাকাশে এ ধরনের বার্তা পাঠানো যাবে কি যাবে না বা বার্তা পাঠালেও কী ধরনের বার্তা পাঠানো যাবে, সে ব্যাপারে কোনো বিধিবিধান নেই। এর অর্থ এমইটিআই বা অন্য কোনো সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান চাইলেই কোনো আপত্তি ছাড়াই এ কাজ করতে পারে।
তবে এমইটিআইয়ের পেছনে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা বলছেন, তাঁদের এ প্রচেষ্টা যদি সফল হয়, তবে এলিয়েনদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে ‘জানা ও তথ্য ভাগাভাগি’ করার পথ হিসেবে এটি ব্যবহার করা হবে।
কীভাবে মহাবিশ্বের দূরবর্তী স্থানে বাস করা বুদ্ধিমান প্রাণীদের জন্য বোধগম্য বার্তা তৈরি করা যায়—এমইটিআইয়ের দলটি এখন সে ব্যাপারে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করবে। মৌলিক গাণিতিক ও বৈজ্ঞানিক ধারণার ভিত্তিতে সম্ভবত তৈরি করা হবে প্রাথমিক বার্তা। কাজ শুরু করতে ১০ লাখ ডলারের তহবিল গঠনের আশা করছে সংগঠনটি। এর কিছু অর্থ ব্যয় হবে ভবন নির্মাণ বা মহাবিশ্বে বার্তা পাঠাতে শক্তিশালী ট্রান্সমিটার ভাড়া নেওয়ার জন্য।
এর আগেও বিজ্ঞানীরা মহাকাশে বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করেছেন। তবে সেসব বার্তা ভিনগ্রহের প্রাণীদের কাছে পৌঁছেছে কি না, সেটি নিশ্চিত নয়। তবে বেশির ভাগ বিজ্ঞানীরই ধারণা, এ বিষয়ে আমরা এখন পর্যন্ত ব্যর্থ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.