রুবেল হোসেনকে কখনো দেখা যায় মাহমুদউল্লাহ, শুভাশিস রায়ের সঙ্গে। কখনো তামিম ইকবাল, মুমিনুল হকের সঙ্গী হিসেবে। কখনোই কেন্দ্রীয় চরিত্র নন। টিম হোটেল, রিকার্টন রোডের ন্যানদোজ রেস্টুরেন্ট কিংবা অন্য কোথাও—সর্বত্রই কারও না কারও ছায়া হয়ে আছেন তিনি। অথচ নিউজিল্যান্ডে এসে এভাবে বেকার ঘুরে বেড়ানোর কথা নয় রুবেলের। তিনিও একজন পেসার, তাঁরও ইচ্ছে হয় গতিময় উইকেটে সামর্থ্য দেখাতে। এই রুবেলই কিনা টেস্ট খেলাটাকে ছেড়ে দিয়েছেন ভাগ্যের হাতে! দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন—কথা প্রসঙ্গেই করা এমন প্রশ্নের জবাবে পরশু তাঁর উত্তর ছিল, ‘ভাগ্যে থাকলে খেলব।’ তা ভাগ্যে আপাতত রুবেলের খেলার সুযোগ নেই বলেই মনে হচ্ছে। দ্বিতীয় টেস্টের একাদশ কাল পর্যন্ত ঠিক না হলেও কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে যেন প্রথম টেস্টের পেস আক্রমণের ওপরই বেশি নির্ভর করতে চান। ‘রুবেলকে না খেলানোর যুক্তি কী’ এমন প্রশ্নের জবাব একটু কঠোরভাবেই দিয়েছেন হাথুরুসিংহে, ‘এ নিয়ে কোনো যুক্তি দেওয়ার প্রয়োজন নেই আমার। দলের জন্য যেভাবে ভালো মনে হয় আমি সেভাবেই কাজ করি।’
টেস্টে রুবেলকে না নেওয়ার যে কারণ জানা যাচ্ছে তা হলো তাঁর পক্ষে লম্বা সময় ধরে বোলিং করা সম্ভব নয়। আর এই ধারণাটা ছড়িয়েছে রুবেলের কারণেই। ২০১৫-এর এপ্রিলে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ২২ ওভার বল করলেও সর্বোচ্চ স্পেল ছিল ৭ ওভারের। জানা গেছে, অধিনায়ক বোলিং দিতে চাইলেও রুবেলই নাকি একটানা বেশি ওভার বল করতে চাননি ওই টেস্টে।
কোচের কাছ থেকে বিষয়টি আরও পরিষ্কারভাবে জানা যেত। কিন্তু ওই কথার পর প্রসঙ্গটা আর তোলাই গেল না। প্রথম টেস্টে খেলা তিন পেসারের পারফরম্যান্সে হাথুরুসিংহে এতটাই সন্তুষ্ট যে অন্য কিছু ভাবার প্রয়োজনও দেখছেন না, ‘প্রথম টেস্টে আমাদের পেস আক্রমণ ছিল একদমই নবীন। মাত্র দুই টেস্টের অভিজ্ঞতা ছিল তাদের। একজন তো গত তিন বছরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটই খেলেনি। তারপরও প্রথম ইনিংসে তারা খুব ভালো বল করেছে। আর দ্বিতীয় ইনিংসে যা হয়েছে সেটার জন্য তো বোলাররা দায়ী নয়। ম্যাচ হেরেছি ব্যাটিংয়ের কারণে।’
বাংলাদেশের পেসারদের জন্য এই কন্ডিশনে একটাই সমস্যা দেখছেন কোচ। তা-ও রুবেলের যে সমস্যার কথা বলা হচ্ছে সেটাই—টানা বল করার শারীরিক সামর্থ্যের অভাব, ‘তাদের বোলিং ইতিহাস ঘাঁটলে দেখবেন, এ রকম বোলিং তারা করেনি। এক দিনে ১৮ ওভার বল করে পরদিন আবার ১৫ ওভার বল করা, এ রকম বোলিংয়ে তারা অভ্যস্ত নয়।’ বাংলাদেশের পেসারদের জন্য এ ক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনটাই হতে পারে বড় অনুপ্রেরণা। কোচও তাই বললেন, ‘পেসারদের জন্য বোলিং করার এটাই সেরা কন্ডিশন।’
হ্যাগলি ওভালে রুবেল কি পাবেন নিজেকে প্রমাণের সুযোগ?
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.