আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায় প্রতিবেশী সেনেগালের সেনা প্রবেশ করেছে। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে পরাজিত সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া জামেহকে পশ্চিম আফ্রিকান নেতারা ক্ষমতা ত্যাগের শেষ সুযোগ দিয়েছেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তিনি প্রেসিডেন্ট কার্যালয় ত্যাগে রাজি হননি। আবার জাতিসংঘ সমর্থিত আঞ্চলিক বাহিনীও তাকে এখন পর্যন্ত উৎখাত করেনি। তবে ডেডলাইন শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত থামতে বলা হয়েছে সেনাবাহিনীকে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। খবরে বলা হয়, ইকনোমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোওয়াস) নামে পশ্চিম আফ্রিকান দেশগুলোর একটি জোট আদামা ব্যারোর পক্ষে লড়ছে। গাম্বিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বৃহস্পতিবার তিনি সেনেগালে শপথ নিয়েছেন। গত মাসে তিনি নির্বাচনে জয়ী হন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার বৈধতা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কিন্তু পরাজিত সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রথমে পরাজয় মেনে নিলেও পরে ক্ষমতা ত্যাগে অস্বীকৃতি জানান। তাকে বোঝাতে আফ্রিকান নেতারা চেষ্টা করলেও তিনি অনড় থাকেন। গায়ানার প্রেসিডেন্ট আলফা কোন্দের নেতৃত্বে সর্বশেষ সমঝোতা আলোচনা শুক্রবার সকালে শেষ হওয়ার কথা। ইকোওয়াস কমিশনের চেয়ারম্যান মার্চেল আলাইন ডি সুজা বলেছেন, কন্দের সঙ্গে বৈঠক বিফল হলে, সামরিক পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি বলেন, মধ্য দুপুর পর্যন্ত মি. জামে দেশত্যাগে রাজি না হলে, আমরা সত্যিই সামরিক হস্তক্ষেপ করবো। ইকোওয়াস আরও বলেছে, বৃহস্পতিবার গাম্বিয়ায় প্রবেশের পর সেনেগালের সেনারা কোনো প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়নি। মি. জামেহকে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর দেয়া প্রাথমিক ডেডলাইন অতিক্রান্ত হওয়ার পর সেনেগাল ও পশ্চিম আফ্রিকান দেশগুলোর সেনাবাহিনী গাম্বিয়ায় প্রবেশ করে। তারা ভারী অস্ত্রে সজ্জিত ও সম্পূর্ণ যুদ্ধের পোশাকে ছিল। ঘানার বাহিনীও ছিল এই জোটবাহিনীতে। সেনেগালের সেনাবাহিনী আফ্রিকার সবচেয়ে সেরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সুশৃঙ্খল বাহিনী। সেনেগালে অবস্থানরত প্রেসিডেন্ট ব্যারো বলেছেন, সামরিক অভিযান শেষ না হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি নিজ রাজধানী বানজুলে ফিরবেন না। পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর সামরিক পদক্ষেপে সমর্থন রয়েছে জাতিসংঘের ১৫ সদস্যবিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদের। তবে পরিষদ জোর দিয়ে বলেছে, রাজনৈতিক সমাধান হওয়া উচিত অগ্রাধিকার। সেনেগাল সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল আবদু এনদিয়ায়ে বিবিসিকে বলেছেন, গাম্বিয়ায় অবস্থানরত তার বাহিনী প্রয়োজন পড়লে লড়াই করবে। তার ভাষ্য, ‘এটি ইতিমধ্যে যুদ্ধে পরিণত হয়েছে। যদি আমরা কোনো প্রতিরোধের মুখে পড়ি, তাহলে আমরা লড়বো। যদি কেউ সাবেক প্রেসিডেন্টের পক্ষে লড়েন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়বো।’ তবে তিনি বলেন, ইকোওয়াসের প্রধান লক্ষ্য গাম্বিয়ায় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা ও নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা গ্রহণে সহায়তা করা।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.