মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ম্যাট নিকোলস ভুলটা করে বসলেন। ডাউন দ্য উইকেট এসে অফ সাইডে খেলার চেষ্টা করেও পারলেন না। ব্যাটের কানায় লেগে মিরাজের বল ভেঙে দিল তাঁর স্টাম্প। প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ২ রান দূরে দাঁড়িয়ে আক্ষেপে মাথা নাড়তে নাড়তে ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটলেন ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলা এই ব্যাটসম্যান। আউট হওয়ার আগে আসল কাজটি করে গেছেন নিকোলস। টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষ বেলায় বাংলাদেশের ২৮৯ রানের জবাবে স্কোরবোর্ডে ২৫৬ তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসা নিউজিল্যান্ডের লিডটা নিশ্চিত করেছেন তিনি। প্রথমে টিম সাউদিকে সঙ্গে নিয়ে ৩০ রানের জুটি গড়লেন তিনি। সাউদি ফেরার পর নিল ওয়াগনারের সঙ্গে গড়লেন ৫৭ রানের জুটি। টেল এন্ডারদের সঙ্গে নিয়ে নিকোলসের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংই নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ সাড়ে তিন শ ( ৩৫৪) ছাড়িয়েছে। দল পেয়েছে ৬৫ রানের লিড। চতুর্থ দিন সকালে বাংলাদেশের বোলিংটা খুব ভালো হয়নি। কামরুল ইসলাম ও রুবেল হোসেন দুজনেই বল করেছেন কিছুটা এলোমেলো। অল্প সময়ের মধ্যে তাঁরা বাউন্ডারিও দিয়েছেন একটু বেশি। ক্যাচও পড়েছে। দিনের তৃতীয় আর কামরুলের দ্বিতীয় ওভারেই দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়িয়ে সাউদির ক্যাচ ফেলে দেন মিরাজ। তবে মিরাজই সাকিব আল হাসানের বলে কভারে সাউদির ক্যাচ ধরে তাঁকে ফেরান। আউট হওয়ার আগে সাউদি করেন ১৭ রান। তাসকিন নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন। পেসারদের মধ্যে তাসকিনের বলই আজ সকালে বারবার কাঁপিয়েছে নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের। তাঁর বলে ক্যাচ পড়েছে একটি। নিল ওয়াগনারের ব্যাট ছুঁয়ে যাওয়া বলটি গালিতে ফেলে দেন নাজমুল হোসেন। যদিও তার পরের বলেই ওয়াগনারকে এলবিডব্লু দিয়েছিলেন আম্পায়ার পল রেইফেল। কিন্তু ডিআরএসে সেটি বাতিল হয়ে যায়। টেলিভিশন রিপ্লেতে দেখা গেছে বলটি পড়েছিল লেগস্টাম্পের মিলিমিটার খানিক বাইরে। নিকোলস ৯৮ রান করেছেন ২৩৭ মিনিট উইকেটে থেকে, ১৪৯ বল খেলে। ১২টি বাউন্ডারিতে ইনিংসটি সাজিয়ে নিকোলসের সেঞ্চুরি ছুঁতে না পারাটা দুর্ভাগ্যজনকই। তাঁর সঙ্গে ৫৭ রানের জুটিতে ওয়াগনারের অবদান ২২। যদিও ২৬ রান করে ওয়াগনার যেভাবে আউট হলেন, সেটি ভেবে নিজেদের ভাগ্যবান ভাবতেই পারে বাংলাদেশ। সাকিবের বলে দ্বিতীয় রানের জন্য দৌড়াতে গিয়ে নুরুল হাসানের প্রত্যুৎপন্নমতি উইকেটকিপিংয়ের শিকার হন ওয়াগনার। থ্রো ধরার জন্য একটু এগিয়ে গিয়েছিলেন উইকেটকিপার নুরুল। থ্রোটা ধরে পেছনের দিকে তাকিয়ে স্টাম্প ভাঙেননি। বলটা ছুড়ে দেন পেছনে। যদিও খালি চোখে দেখা গেছে ওয়াগনার ক্রিজের ভেতরেই ছিলেন। কিন্তু টেলিভিশন রিপ্লেতে দেখা যায় ওয়াগনার ব্যাট মাটিতে না ছুঁইয়েই ক্রিজের ভেতরে গেছেন। স্টাম্পে বল লাগার মুহূর্তে তাঁর পা-ও ছিল শূন্যে। এই রান আউটেই থামে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। বাংলাদেশের সেরা বোলার সাকিবই। ৫০ রানে ৪ উইকেট পেয়েছেন তিনি। মেহেদী মিরাজ ও কামরুল ইসলাম দুজনেই নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। ১ উইকেট তাসকিনের।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.