সাউথ কোরিয়া এমন একটি গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে যার গতি হবে প্রায় শব্দের সমান। শব্দের গতি যেখানে ঘণ্টায় ৭৬৮ মাইল, সেখানে নতুন এই ট্রেন ছাড়িয়ে যাবে ঘণ্টায় ৬২০ মাইল গতির সীমা।
মেইল অনলাইন জানিয়েছে, নিম্নচাপ পরিবেশে ‘হাইপার-টিউব ফরম্যাটে’ পরিচালিত ট্রেনটির এমন অবিশ্বাস্য গতির বিষয়ে এমন আশাবাদই ব্যক্ত করেন সিউল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানের সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন (ঘণ্টায় ২৬৮ মাইল) চৌম্বকীয় শক্তিকে কাজে লাগিয়ে চালানো ‘ম্যাগনেটিক লেভিটেশন ট্রেনের’ চেয়ে যা ছুটবে দ্বিগুণ গতিতে।
এই অতিদ্রুতগতিসম্পন্ন প্রায়-সুপারসনিক ট্রেনের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ‘খুব বেশি দূরের নয়’, বলেন কোরিয়া রেইলরোড রিসার্চ ইন্সটিটিউট, এমন ট্রেন তৈরিতে আশাবাদী সাউথ কোরিয়া এতে ভ্রমণের সময় ব্যাপক হারে কমে আসবে বলে জানায়।
কোরিয়া রেইলরোড রিসার্চ ইন্সটিটিউট জানায়, আগামী তিন বছর হানইয়াং ইউনিভার্সিটিসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট নানা প্রতিষ্ঠানের সাথে তারা কাজ করবে। হাইপার-টিউপ ফরম্যাটের সাথে সংশ্লিষ্ট নানা প্রযুক্তির কার্যকারীতা তারা গবেষণা করবেন বলে জানান। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, চীন এই আধুনিক প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব গ্রহণের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, যাদেরকে টেক্কা দিতে চায় সাউথ কোরিয়া।
হাইপারলুপায় বাস্তবতায় আরও এক ধাপ অগ্রগতির মাস কয়েক পরেই সাউথ কোরিয়ার এমন ঘোষণা। ইতিমধ্যেই লাস ভেগাসের মরুঞ্চলে ‘ডেভলুপের’ প্রথম টিউব সফলভাবে স্থাপিত হয়েছে, যা হতে চলেছে প্রথম পূণাঙ্গ হাইপারলুপ সিস্টেম। লস এ্যাঞ্জেলেসভিত্তিক কোম্পানি হাইপারলুপ ওয়ান হাইপারলুপ ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের বিকাশে কাজ করছে।
এই মাসের শুরুতে দুবাই কর্তৃপক্ষও হাইপারলুপ ওয়ানের সাথে একটি চুক্তির ঘোষণা করে, যার বলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে আবুধাবিতে এমন একটি লাইন নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। এছাড়াও ব্রিটেনের লন্ডন, এডিনবুরা, কার্ডিফ ও লিভারপুলও এই প্রযুক্তিকে অচিরেই আলিঙ্গণ করতে পারে।
হাইপারলুপ পদ্ধতি দূরবর্তী গন্তব্যে যাতায়াতে প্রস্তাবিত হাইপারলুপ পদ্ধতিতে ঘণ্টায় ৭৪০ মাইল গতিতে যাওয়া সম্ভব। ২০১৩ সালে এলন মাস্ক প্রকাশ করেন যে, এতে লস অ্যাঞ্জেলেস (এলএ) থেকে সান ফ্রান্সিসকোর ৩৮০ মাইল দুরুত্ব ৩০ মিনিটেই পারি দেওয়া সম্ভব। প্লেনে করে যেখানে সময় লাগে ১ ঘণ্টা।
এই প্রক্রিয়ায় একটি দীর্ঘ টিউবকে বায়ুশূণ্য করা হয়। আবহাওয়ার তারতম্য এবং ভূমিকম্প থেকে রক্ষায়ও নেয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। ক্যাপসুলের মতো আকৃতির আসনে যাত্রীরা বসার সুযোগ পান। যার টিকিট মূল্য হবে ২০ ইউএস ডলারের মতো। এলএ থেকে সানফ্রান্সিসকো পর্যন্ত একটি লাইন নির্মাণে খরচ হবে ১৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার। তবে সমালোচকদের দাবি তা শত বিলিয়নের ঘরে পৌছাবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.