মিসরে ভিন্নমত দমনের চেষ্টায় নিরাপত্তা বাহিনী গত এক বছরে কয়েকশ মানুষকে গুম করে তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। আজ বুধবার লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ তথ্য জানিয়েছে।
অ্যামনেস্টির নতুন প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুম হওয়াদের মধ্যে শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী এবং বিক্ষোভকারী রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেরই বয়স ১৪ বছরেরও কম।
নিরাপত্তা বাহিনীর বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া অনেকেই অভিযোগ করছে, তাদের চোখ বেঁধে হাতকড়া পরিয়ে মাসের পর মাস আটকে রাখা হয়েছিল।
তবে মিসর সরকার গুম করে নির্যাতনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, ২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাতাহ আল সিসির নেতৃত্বাধীন সামরিক অভ্যুত্থানে মোহাম্মদ মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে মিসরে এক হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং ৪০ হাজারের বেশি মানুষকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০১২ সালে মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ক্ষমতায় আসেন মুরসি।
অ্যামনেস্টির মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক সংবাদদাতা ফিলিপ লুথার বলছেন, প্রেসিডেন্ট সিসি ও তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাগদি আবদুল গাফ্ফারের অধীনে মিসরে গুম ‘রাষ্ট্রীয় নীতির প্রধান হাতিয়ার’ হয়ে উঠেছে। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে আবদুল গাফ্ফার তাঁর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
এ ব্যাপারে মাগদি আবদুল গাফ্ফার বলেছেন, মিসরের নিরাপত্তা বাহিনীকে দেশটির আইন মেনেই তাদের তৎপরতা চালাতে হয়।
স্থানীয় বেসরকারি সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চারজনকে আটক করা হচ্ছে। জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) নেতৃত্বে সশস্ত্র নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বাড়ি বাড়ি হানা দিয়ে তুলে নিয়ে যাচ্ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, কায়রোয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরের ভেতর এনএসএর কার্যালয়ে কয়েকশ মানুষকে আটকে রাখা হয়েছে।
লুথার বলেছেন, ‘এই প্রতিবেদনে নিরাপত্তা বাহিনী ও বিচার বিভাগের যোগসাজশের অভিযোগও তুলে ধরা হয়েছে। এই বিচার বিভাগের কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মকাণ্ড ঢাকতে মিথ্যা বলতেও প্রস্তুত এবং নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এর মাধ্যমে তাঁরা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাহচর্য দিচ্ছে।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.