রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে একটি ও নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা নয়টিসহ ১০টি মামলায় জামিন পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
নাশকতা, দুর্নীতি ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের ১২টি মামলায় বুধবার আদালতে হাজিরা দিতে যান তিনি।
প্রথমেই খালেদা জিয়া মহানগর দায়রা জজ আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় হাজিরা দেন। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়ার জন্য দিন ধার্য ছিল। পরে একই আদালতে বিশেষ ক্ষমতা আইনের আট মামলায় খালেদার জামিন আবেদনের শুনানি হয়।
প্রথমে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন নাশকতার অভিযোগে দারুস সালাম থানায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের আটটি মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করা হয়। একই আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ করা মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে পূর্বশর্তে জামিন আবেদন করা হয়।
বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলাগুলোর শুনানিতে আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, গত বছরের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট হরতাল-অবরোধের ডাক দেয়। খালেদা জিয়াকে তার দলীয় কার্যালয়ে অবরুদ্ধ রাখা হয়। এ মামলাগুলোয় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। খালেদা জিয়া ঘটনাস্থলে ছিলেন না। অথচ বিশেষ ক্ষমতা আইনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে।
শুনানি শেষে বিচারক মো. কামরুল হোসেন মোল্লা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় খালেদার জামিন আবেদন মঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন।
নাশকতার অপর আট মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করে সবক’টি (৯টি) মামলায় ১০ অক্টোবর অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন।
এরপর খালেদা বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির দুর্নীত মামলায় হাজিরা দিতে যান। এ মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল। দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে হাজিরা দেন খালেদা জিয়া।
তার আইনজীবীরা অভিযোগ গঠন শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করলে বিচারক হোসনে আরা বেগম তা মঞ্জুর করেন। এ মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
সেখান থেকে খালেদা জিয়া যান নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানিতে। দুপুর সোয়া ১টার দিকে তিনি ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে হাজির হন। এ মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল।
খালেদা জিয়ার পক্ষে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। এ মামলায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, মামলাটি চলবে কি চলবে না, এ নিয়ে আপিল বিভাগে একটি আবেদন শুনানির অপেক্ষায় আছে। তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি মুলতবি রাখা হোক।
এর বিপরীতে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। নিরাপত্তার বিষয় আছে। তিনি রাজনৈতিক অনেক কাজে ব্যস্ত থাকেন। তাকে হাজির করা বা তিনি হাওয়া হয়ে যাওয়া খুবই দুরূহ কাজ। তাই শুনানি শুরু হোক।
শুনানি শেষে বিচারক খালেদা জিয়ার পক্ষে দ্বিতীয় দফায় করা সময় আবেদন মঞ্জুর করেন। এ মামলার অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির দিন ১৬ আগস্ট ধার্য করা হয়।
এরপর খালেদা জিয়া যান ঢাকার সিএমএম আদালতে। সেখানে রাজধানীর দারুস সালাম থানার আরেকটি নাশকতার মামলায় জামিন চান তিনি। ঢাকার মহানগর হাকিম নুরুন নাহার ইয়াসমীন এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন।
এসব মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আবদুল্লাহ আবু, মোশাররফ হোসেন কাজল, মীর আহমেদ আলী সালাম, তাপস কুমার পাল, ওমর ফারুক আসিফ প্রমুখ।
আসামিপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী, জয়নাল আবেদীন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, খোরশেদ আলম প্রমুখ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.