ঢাকার উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশাকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে এ হত্যা মামলার একমাত্র আসামি দর্জি ওবায়দুল খান। ছয় দিনের রিমান্ড শেষ হওয়ার একদিন আগে গতকাল ওবায়েদুলকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। দুপুরে মহানগর হাকিম আহসান হাবিবের কামরায় জবানবন্দি দেয় ওবায়দুল। জবানবন্দি গ্রহণের পর তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দিতে ওবায়দুল বলেছে রিশাকে সে ভালোবাসতো। রিশাকে বারবার প্রেমের প্রস্তাব দিলেও সে তা প্রত্যাখ্যান করে। এতে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় ওবায়দুলের। প্রেমে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়ে ২২শে আগস্ট রিশাকে হত্যার পরিকল্পনা করে সে। পরিকল্পনা অনুসারে হাতিরপুলের একটি দোকান থেকে ছুরি কিনে নেয় ওবায়দুল। পরে ছুরিটি তার বাসায় রেখেছিল। ঘটনার দিন ২৪শে আগস্ট ওই ছুরি নিয়ে রিশার স্কুলের পাশে অবস্থান নেয় ওবায়দুল। স্কুল শেষে দুপুর ১২টার দিকে ওভারব্রিজে উঠার পর রিশার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় ওবায়দুলের। ওই সময় ছুরি দিয়ে রিশার পেটে আঘাত করে ওবায়দুল। পর পর দুটি আঘাতের একটি রিশার পেটে ও অন্যটি বাম হাতে লাগে। রিশাকে গুরুতর আহত করে সে দ্রুত পালিয়ে যায়। জবানবন্দির বিষয়টি মানবজমিনকে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেন। তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয় ওবায়দুল। আদালতে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জবানবন্দি দিয়েছে সে। প্রেমে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়েই রিশাকে হত্যা করে বলে স্বীকার করেছে ওবায়দুল। তার আগে রিশা হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো ছুরিটি উদ্ধার করে পুলিশ। রিমান্ডে এ বিষয়ে তথ্য দেয়ার পর গত শুক্রবার গভীর রাতে কাকরাইলের রাজস্ব ভবনের পাশের একটি ড্রেন থেকে বাঁটসহ প্রায় এক ফুট লম্বা ছুরিটি উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে ছুরিটি শনাক্ত করেন বিক্রেতা মোহাম্মদ হোসেন। তিনি পুলিশকে জানান, ছুরিটি ওবায়দুল তার দোকান থেকে ক্রয় করেছিল। গত ২৪শে আগস্ট উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশাকে ছুরিকাঘাত করে ওবায়দুল। তাৎক্ষণিকভাবে পার্শ্ববর্তী একটি হাসপাতালে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। তিন দিন পর ঢামেক হাসপাতালের আইসিইউ’তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রিশা। এ ঘটনায় রিশার মা তানিয়া হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় রাজধানীর ইস্টার্ন মল্লিকার বৈশাখী টেইলার্সের কাটিং মাস্টার ওবায়েদুলকে আসামি করা হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.