অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া কাপ হকির জন্য জোড় প্রস্তুতি নিয়েই ঢাকায় এসেছে ওমান। নেদারল্যান্ডসে চার মাসের কন্ডিশনিং ক্যাম্প, পাকিস্তানের সিরিজ টুর্নামেন্টে তাদের কাজে আসলো না। প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে ১১-০ গোলে হারের পর গতকাল বাংলাদেশের কাছে তারা হেরেছে ১০-০ গোলের বড় ব্যবধানে। মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে এদিন ওমানের জালে প্রথমার্ধেই সাত গোল দিয়েছিলো স্বাগতিকরা। দ্বিতীয়ার্ধে আরও তিনটি। দুই অর্ধমিলে ১০-০ গোলের বড় জয়ে বেক্সিমকো অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া কাপ হকির পুল ‘এ’র চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রোমান-রাব্বীরা। শক্তিশালী ভারতকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করা বাংলাদেশ ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আগামীকাল মুখোমুখি হবে পুল ‘বি’র রানার্সআপ চাইনিজ তাইপের। বাংলাদেশের কাছে হেরে পুল ‘এ’র রানার্সআপ হওয়া ভারতের খেলবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে। গতকাল হংকংকে ১৪-০ গোলে উড়িয়ে পুল পাকিস্তান পুল ‘বি’র চ্যাম্পিয়ন আর চীনের সঙ্গে ২-২ ড্র করে চাইনিজ তাইপে রানার্সআপ হয়। ‘ভারতেরে শক্তিশালী ডিফেন্সের বিপক্ষে ফিল্ডগোল করতে পারবো না, তাই ওই ম্যাচে পেনাল্টি কর্নারের ওপর মনোযোগী হয়েছিলাম। আজ খেলেছি সম্পূর্ণ অন্যরকম কৌশলে, এ ম্যাচে পেনাল্টি কর্নারের চেয়ে লক্ষ্য ছিলো বেশি। তাতে আমরা সফল হয়েছি’- ওমানকে গোল বন্যায় ভাসিয়ে বলছিলেন দলের হেড কোচ কাওসার আলী। সেমিফাইনাল নিয়ে তিনি বলেন, আমরা সেমিফাইনালে চাইনিজ তাইপেকে প্রত্যাশা করেছিলাম। তাই হয়েছে। এখন আমরা ফাইনালে কথা ভাবতেই পারি। ফাইনালে নিয়ে এই কোচ বলেন, আমাদের সঙ্গে খেলার পর ভারত পরের ম্যাচেগুলো অনেক ভালো খেলেছে। পাকিস্তানও প্রত্যেক ম্যাচে উন্নতি করেছে। দুই দলের খেলায় হকির বনেদি ভাব ফুটে উঠেছে। ফাইনাল দুই দলের একটির সঙ্গে হবে, সেখানে একটা অঘটন ঘটাতে চাই আমরা। তবে গতকালের ম্যাচ সেরা মহসিন বলেন, ভারতের সঙ্গে কঠিন ম্যাচ জেতার পর ওমানকে বড় ব্যবধানে হারিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হলো চ্যাম্পিয়ন হওয়া। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতোই খেলে চলেছে বাংলাদেশ। এদিন ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে এগিয়েও যায় রোমানরা। রাব্বীর বাড়ানো বল গতিময় হিটে লক্ষ্যে পৌঁছে দেন মাহবুব। সপ্তম মিনিটে আশরাফুলের বাড়ানো বল থেকে নিখুঁত ফ্লিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এরশাদ। দশ মিনিট পর সার্কেলের জটলার মধ্যে স্কোরলাইন ৩-০ করেন মহসিন। একটু পর রোমান সরকারের তৈরি করে দেয়া সুযোগ আলতো টোকায় রাব্বী লক্ষ্যভেদ করলে বড় জয়ের পথে ছুটতে থাকে বাংলাদেশ। ২০তম মিনিটে প্রথম পেনাল্টি কর্নার পায় বাংলাদেশ। রাব্বীর পুশ নাঈমের স্টপ থেকে আশরাফুলের হিট ঠিকানা খুঁজে পায়। ২৯তম মিনিটে মহসিনের ফ্লিকে স্কোরলাইন হয় ৬-০। ৩৩তম মিনিটে দ্বিতীয় পেনাল্টি কর্নার থেকেও গোল আসে। এবার রাজু আহমেদের পুশ রাব্বীর স্টপ থেকে গোল করেন পেনাল্টি কর্নার স্পেশালিস্ট আশরাফুল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান একটু কমানোর সুযোগ পেয়েছিল ওমান। কিন্তু গোলরক্ষক ইয়াসিন আরাফাতে দারুণ দৃঢ়তায় ফিরিয়ে দেন দু’টি আক্রমণ। প্রথমার্ধের সাত গোলে জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় পরের পর্বে বাংলাদেশের খেলার গতি কমে। ৫৩তম মিনিটে সার্কেলের ভিতর থেকে মহসিন দলকে অষ্টম গোল এনে দেন। আট মিনিট পর রাজু-নাঈম-আশরাফুলের কম্বিনেশনে পেনাল্টি কর্নার থেকে স্কোরলাইন ৯-০ করে আশরাফুল; মেরিনার ইয়াংসের এই ডিফেন্ডারের গোল হলো সাতটি। শেষদিকে রাব্বীর দ্বিতীয় গোলের পর গ্রুপ সেরা হওয়ার উৎসবে মাতে বাংলাদেশ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.