বন্দরে পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় স্ত্রীকে নির্যাতনের পর ১৪ মাস বয়সের এক শিশুকন্যাকে গলাটিপে হত্যা করেছে পাষণ্ড পিতা। গতকাল ভোরে পিচকামতাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ শিশুকন্যা নুসরাত জাহান নুরীর লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এলাকাবাসী জানান, উপজেলার মুছাপুর ইউপির পিচকামতাল গ্রামের শাহজালাল মিয়ার ছেলে নাজমুল মিয়ার সঙ্গে ৮ বছর আগে একই গ্রামের মৃত আলী মিয়া মুন্সীর মেয়ে মুসলিমা আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে নুরতাজ (৫) ও নুসরাত জাহান নুরী (১৪ মাস) দুটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। ছোট মেয়ে নুসরাত জাহান নুরীর জন্মের পর থেকে নাজমুল পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দিতে গিয়ে মুসলিমার সংসারে চলে কলহ। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়াঝাটি নিত্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ওই মেয়েকে গোপনে বিয়ে করে রূপগঞ্জের বরপা এলাকায় ভাড়া বাসা নিয়ে বসবাস করতো নাজমুল। এ খবর পেয়ে মুসলিমা আক্তার দুই শিশুকন্যাকে সঙ্গে নিয়ে বরপা থেকে গত মঙ্গলবার বিকালে নাজমুলকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে রাতভর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। বুধবার ভোর ৫টার দিকে নাজমুল ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে মারধরের পর ঘুমন্ত শিশুকন্যা নুরসাত জাহান নুরীকে গলাটিপে হত্যা করে পালিয়ে যায়। মুসলিমা আক্তার জানান, দুই শিশুকন্যাকে ফেলে রেখে পরকীয়ার একপর্যায়ে স্বামী নাজমুল গোপনে বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করে আসছিল। সেখান থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারধর ও ঘুমন্ত শিশুকে হত্যা করে। এ সময় আমি চিৎকার শুরু করলে লোকজন ও আমার মা বাড়ি থেকে ছুটে এসে নাজমুলকে ধরার চেষ্টা করে। নাজমুল আমার মাকেও মারধর করে হাত ভেঙে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। পুলিশ আসার খবর পেয়ে আমার শ্বশুর ও শাশুড়ি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিশুটির লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহত শিশুর মা মুসলিমা বাদী হয়ে মামলা করেছে। ঘটনার পর বাড়ির সবাই পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.