স্বপ্নপূরণের হাতছানি ছিল বাংলাদেশের সামনে। সেই পথে দারুণভাবে এগিয়েও যাচ্ছিল আশরাফুল-রোমানরা। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার তিন সেকেন্ড আগের গোলে গুঁড়িয়ে গেলো স্বপ্ন। বাংলাদেশকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে বেক্সিমকো অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়ান কাপ জিতে নিলো ভারত। দু’বার এগিয়ে গিয়েও বাংলাদেশ হয়তো গোল ধরে রাখতে পারেনি, তবে দু’বার পিছিয়ে পড়েও ম্যাচে ফিরে প্রমাণ দিয়েছে নিজেদের হার না মানা মানসিকতার। ফাইনালে হারলেও টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক রোমান সরকার। ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছে ভারতের কনজেংবাম সিং। তবে সব ছাপিয়ে এটি হয়ে উঠল আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে দারুণ উপভোগ্য এক ফাইনাল। যার প্রতিটি পরতে থাকল উত্তাপ, উত্তেজনা, গোলের শিহরণ। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সেরা হলো ভারত। ২০০১ সালে প্রতিযোগিতাটির প্রথম আসরে শিরোপা জিতেছিল তারা। রানার্সআপ হওয়া বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বে আশরাফুলের হ্যাটট্রিকসহ চার গোলে ৫-৪ ব্যবধানে হারিয়েছিল ভারতকে। সম্ভাবনা জাগিয়েও গ্রুপ পর্বের ফলের পুনরাবৃত্তি করতে পারেননি কাওসার আলীর শিষ্যরা। ভারতকে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানকে ১০-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে পুল ‘এ’ চ্যাম্পিয়ন হয়। এরপর ৬-১ গোলে চাইনিজ তাইপেকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে গতকাল শুরু থেকে বাংলাদেশের রক্ষণে চাপ দিতে থাকে ভারত। তবে খেলার ধারার বিপরীতে বাংলাদেশই এগিয়ে যেতে পারত। আশরাফুল ইসলামের হিটে রোমান সরকারের ফ্লিক লক্ষ্যে থাকেনি। দুই মিনিট পর প্রথম পেনাল্টি কর্নায় কাজে লাগাতে পারেনি ভারতও। প্রচণ্ড তাপের কারণে অষ্টাদশ মিনিটে কুলিং ব্রেকের পর কনজেংবাম সিংয়ের ফ্লিক ফিরিয়ে বাংলাদেশের ত্রাতা হন গোলরক্ষক ইয়াসিন আরাফাত। ২০তম মিনিটে প্রথম পেনাল্টি কর্নায় কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। রাব্বীর পুশ নাঈম থামান। আশরাফুলের হিট প্রতিহত হওয়ার পর রোমানের হিট ঠিকানা খুঁজে পেলে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে গ্যালারি। তবে পরের মিনিটে শিভাম আনন্দের রিভার্স হিট ভারতকে সমতায় ফেরায়। শেষ দিকে রাব্বীর আশরাফুলের হিট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৩৫তম মিনিটে দারুণ এক গোলে স্কোরলাইন ২-১ করে নেয় বাংলাদেশ। সবুজ রহমানের পুশে ফ্লিক করে লক্ষ্যভেদ করেন মোহাম্মদ মহসিন। ৪৫তম মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে হারদিক সিং ভারতকে সমতায় ফেরানোর পাঁচ মিনিট পর রক্ষণ ও গোলরক্ষকের ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে কনজেংবাম দলকে এগিয়ে নেন। ৫৮তম মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে দলকে সমতায় ফেরার স্বস্তি এনে দেন আশরাফুল। যথারীতি রাব্বীর পুশ নাঈম স্টপ করার পর নিখুঁত হিটে লক্ষ্যভেদ করেন এই পেনাল্টি কর্নার স্পেশালিস্ট। কিন্তু দুই মিনিট পর কনজেংবামের ফিল্ড গোলে স্কোরলাইন ৪-৩ করে নেয় ভারত। দারুণ উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে আশরাফুলের হিট ফেরার পর মাহবুব ফিরতি হিটে ৬৪তম মিনিটে সমতায় ফেরান বাংলাদেশকে। খেলা শেষের তিন সেকেন্ড আগে শিভাম স্কোরলাইন ৫-৪ করার পর পরই শিরোপা জয়ের আনন্দে ভাসে ভারত। গতকাল ওমানকে ২-১ গোলে হারিয়ে চীন পঞ্চম আর চাইনিজ তাইপেকে ১৮-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে তৃতীয় হয়েছে পাকিস্তান।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.