সোনা, হীরাখচিত পোশাক আমরা দেখেছি। কিন্তু এলইডি বাতি কিংবা খুদে যন্ত্রখচিত পোশাকও যে হতে পারে তা ব্রিটিশ ডিজাইনার হুসেইন চ্যালায়ান গত দশকেই করে দেখিয়েছেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে ‘প্যারিস ফ্যাশন উইক’-এর রানওয়েতে আবারও পোশাক ও প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটালেন হুসেইন। তাঁর এই নতুন প্রযুক্তির পোশাক, পরিধানকারীর মানসিক চাপ মেপে তা পর্দায় দেখাতে পারে। হুসেইনের মতে, ফ্যাশনে ইতিমধ্যে সবকিছুই হয়ে গেছে। একমাত্র প্রযুক্তিই ফ্যাশনজগতে নতুন কিছু যোগ করতে পারে। হুসেইন চ্যালায়ানের ২০১৭-এর বসন্ত সংগ্রহের ফ্যাশন শোতে পাঁচজন মডেল চোখে স্মার্ট চশমা এবং কোমরে স্মার্ট বেল্ট পরে হাঁটেন। ক্যাটওয়াক করেন। যিনি পরেছেন তাঁর মানসিক চাপ পরিমাপ করে চশমা আর বেল্ট সেই তথ্য পর্দায় দেখায়। ফ্যাশন শোতে ব্যবহৃত পোশাক তৈরিতে সাহায্য করেছে সেমি-কনডাক্টর প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ইনটেল। ইনটেলের ‘কুরি মডিউল’ চিপ তথ্য নিয়ন্ত্রণ ও বাছাই করতে সাহায্য করে। তিনটি সেন্সরের সাহায্যে বায়োমেট্রিক ডেটা সংগ্রহ করে স্মার্ট চশমা। প্রথম ও দ্বিতীয় সেন্সরে মস্তিষ্কের তরঙ্গ এবং হৃৎকম্পনের তারতম্য ধারণ করা হয়। তৃতীয় সেন্সরটি মূলত মাইক্রোফোন, যা শ্বাসপ্রশ্বাসের শব্দ থেকে তথ্য নেয়। সব সেন্সর থেকে পাওয়া তথ্য মিলিয়ে মানসিক চাপ নির্ণয় করে তা পরিমাপ করে স্মার্ট চশমা। এরপর সে তথ্য তারহীন ব্লুটুথ সংযোগের মাধ্যমে স্মার্ট বেল্টে পাঠানো হয়। বেল্টে যুক্ত ক্ষুদ্র প্রজেক্টরের সাহায্যে পর্দায় মানসিক চাপের ছবি ফুটে ওঠে। ফ্যাশন শো নিয়ে হুসেইন বলেন, শ্বাসপ্রশ্বাসই এই প্রদর্শনী নিয়ন্ত্রণ করেছে। সবকিছুরই যে কারণ থাকতে হবে তা তো নয়। গত দশকেই ক্ষুদ্রাকৃতির চিপ এবং অ্যানিমেট্রনিকসের সাহায্যে এমন এক ধরনের পোশাক হুসেইন প্রদর্শন করেছিলেন, যাতে ১৫ হাজার এলইডি (লাইট এমিটিং ডায়োড) যুক্ত ছিল। পোশাক পরে হাঁটার সময় পোশাকের এলইডি বাতিগুলো ইলেকট্রনিক পর্দা তৈরি করে যা প্রয়োজন অনুযায়ী ছবি ফুটিয়ে তুলতে পারত। সময়ের হিসাব মাথায় রাখলে বেশ অভিনব উদ্ভাবন ছিল সেটি। তথ্যসূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.