সুন্দরবনের কাছে বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে কারিগরি, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত ত্রিমাত্রিক ক্ষতির মুখে পড়বে দেশ। তাই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশের স্বার্থবিরোধী এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ সোমবার প্রকৌশলীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব)-এর এক গোলটেবিল বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
‘প্রসঙ্গ : রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’ শীর্ষক সভায় এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে দেশের পরিবেশ, অর্থনীতি কিংবা কারিগরি দিক কতটা ক্ষতির মুখে পড়বে এমন নানা প্রসঙ্গ উঠে আসে বক্তাদের আলোচনায়।
শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, দেশের জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন রয়েছে তবে তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়ে নয়।
সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই তারা জনগণ ও দেশের কথা ভাবে না।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, ‘আমার দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে রামপালের ব্যাপারে আমরা কোনো কম্প্রোমাইজ কখনোই করি না, করব না এবং ভবিষ্যতে আমরা করতেও দেব না। যে কোনো প্রকারে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এবং আগামীতে তথাকথিত একটা নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসার জন্য তাদের সমস্ত কৌশলগুলো তারা নির্ধারণ করেছে। যারা তাদের এই অনৈতিক কাজটি করতে সাহায্য করেছিল সর্বোতভাবে তাদের স্বার্থকেই তারা বজায় রাখছে।’
সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘এটির স্থান পরিবর্তন কেন আমরা করছি না। আমরা রামপাল থেকে সরিয়ে আমাদের পূর্ব সীমান্তে নিয়ে যাই না কেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি জিঘাংসা ঝেড়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে, আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খোলা মনে বিষয়টা বিবেচনা করে দেখেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘রামপালের বিরুদ্ধে যারা বলে, তারা নাকি ভারতবিরোধী। আমার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশে যদি সুলতানা কামাল, খুশী কবির, আনু মুহাম্মদ আর এম এম আকাশ ভারতবিরোধী হয়ে যায় তাহলে ধরে নিতে হবে যারা ক্ষমতায় আছেন সে রকম কয়েকশ মানুষ ছাড়া প্রতিটি মানুষই ভারতবিরোধী।’
অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, বিভিন্ন ধরনের কারিগরি তথ্য উপস্থাপন করে এই রামপাল প্রকল্পকে জাস্টিফাই করার একটা চেষ্টা চলছে।
অন্য বক্তারা বলেন, কারিগরি অর্থনীতি ও পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার পাশাপাশি রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে তার দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাবে জন্ম নিতে পারে বিকলাঙ্গ শিশুও। তাই নির্মাণ বন্ধে ইউনেসকোর দেওয়া পরামর্শকে আমলে নেওয়ার দাবি জানান বক্তারা।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.