টনি ডায়েস। দেশীয় শোবিজের জনপ্রিয় একটি নাম। একসময় রুচিশীল ও মার্জিত অভিনয়শৈলী দিয়ে দর্শক মন জয় করেছেন নিয়মিত। ১৯৯৪ সাল থেকে চারশরও বেশি নাটক, সিরিয়াল আর টেলিফিল্মে কাজ করেছেন টনি ডায়েস। তবে এ মুহূর্তে পর্দায় নেই তিনি। ২০০৯ সালে স্ত্রী প্রিয়া ডায়েস ও একমাত্র মেয়ে অহনাকে নিয়ে আমেরিকায় চলে যান তিনি। তখন থেকেই সেখানে স্থায়ীভাবে থাকছেন। সব মিলিয়ে এখন কেমন আছেন টনি ডায়েস? সম্প্রতি মুঠোফোনে মানবজমিনের সঙ্গে সেসব নিয়ে কথা হয় তার। তিনি বলেন, এখানে বেশ ভালো আছি। একদম নিশ্চিন্তে আছি। কোনো আতঙ্ক নেই, লোডশেডিং, পানির সংকট কিংবা ট্রাফিক জ্যাম-এসবও নেই। সবমিলিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আমি খুবই ভালো আছি। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর থেকে আমেরিকান হোন্ডা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন। দীর্ঘদিন ধরেই পর্দায় নেই এ অভিনেতা। তবে নিয়মিত খোঁজখবর নেন দেশীয় শোবিজের। মাঝে মধ্যে সময় পেলে দেশের নাটকগুলো দেখারও চেষ্টা করেন। কখনও কি ইচ্ছে করে আবার লাইট ক্যামেরা অ্যাকশনের মাঝে ফিরে আসতে? টনি ডায়েস বলেন, অভিনয় তো রক্তে মিশে আছে। কিন্তু ফিরতে চাইলেও ফেরা হবে না। আর মিস করার কথা বলছেন? আগেই একটু বলে রাখি আমি সবসময়ই যে কোনো কিছু নিয়ে গবেষণা করি। আমার সে গবেষণায় আগামী পাঁচ বছর পর কী হবে তা থাকে। বাংলাদেশের শোবিজ অঙ্গনে একজন ভালো পারফরমার খুব তাড়াতাড়ি জায়গাটি ধরতে পারে। জনপ্রিয়তাও অর্জন করে। কিন্তু পাঁচ বছর পর ওই শিল্পীর অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না। একই রকম থেকে যায়। আমি এখন কাজ করি না। কিন্তু মিডিয়ার অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ আছে। দেখছি তো। তাদের আগে যেমন ছিল এখনও তা-ই। কোনো পরিবর্তন আসেনি। মিডিয়া থেকে এখন দূরে থাকলেও সময় পেলে টুকটাক নাটক দেখেন টনি ডায়েস। আগের চেয়ে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্যও করেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে বলেন, দেশের নাটকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তবে আমার কাছে যেটা বেশি লক্ষণীয় তা হলো- কারিগরি দিক। টেকনিক্যালি আমাদের নাটকের মান অনেক এগিয়ে গেছে। তবে একটা ব্যাপার শুনে খুব হতাশ হই। এখন নাকি শুটিং সেটে গিয়ে স্ক্রিপ্ট পায় শিল্পীরা। কোনো রিহার্স্যাল ছাড়াই শুটিং শুরু হয়। বিষয়টি আমাকে অবাক করে। সম্প্রতি টনি ডায়েস অভিনীত চলচ্চিত্র ‘পৌষ মাসের পিরিত’ দেশের পাশাপাশি আমেরিকাতেও মুক্তি পেয়েছে। গত ৯ই অক্টোবর ড্রামা সার্কেল-এর আয়োজনে নিউইয়র্কের জ্যামাইকা মাল্টিপ্লেক্স সিনেমাসে চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার হয়। আর ডালাসে শিকাগো বায়োস্কোপ এবং বাংলা গ্রুপ আয়োজিত শো হবে ১৬ই অক্টোবর বিকাল ৩টায় রিচার্ডসন শহরের ফান এশিয়ানা থিয়েটারে। এ প্রসঙ্গে টনি ডায়েস বলেন, আমার খুব ভালো লাগলো যে, ‘পৌষ মাসের পিরিত’ চলচ্চিত্রটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রিমিয়ার হলো। বিশেষ করে জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, এস্টোরিয়া, এহলমার্টস, ওজন পার্ক, ব্রুকলিন এসব এলাকাগুলোতে প্রচুর বাংলাদেশি থাকেন। আমরা এখানকার বড় থিয়েটারে গিয়ে প্রায় হিন্দি অথবা ইংরেজি ছবি দেখছি। কিন্তু কেউ এখানে বাংলাদেশের ছবি দেখার সুযোগ পাচ্ছি না। শুধু আমাদের চলচ্চিত্রকে দোষারোপ করে যাচ্ছি যে, আমাদের ছবি ভালো হচ্ছে না। আমাদের দেশের সংস্কৃতি যদি এদেশে আনা যায় তাহলে অনেক এগিয়ে যাবে। এই যেমন ‘পৌষ মাসের পিরিত’ ছবিটির প্রিমিয়ারের সময় এখানকার অসংখ্য বাঙালি ছেলে, মেয়ে কাছে এসে প্রশংসা করেছে। তারা চায় বাংলাদেশের অন্য ছবিগুলোও আমেরিকায় আসুক। প্রযোজকরা বিষয়টি নিয়ে ভাববেন এমন প্রত্যাশাই করছি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.