আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দৃশ্যমান হবে পদ্মা সেতু। এ লক্ষ্যে জোরেশোরে কাজ চলছে। এরই অংশ হিসেবে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় আসছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। ইতিমধ্যে চীন থেকে রওনা হয়েছে চার হাজার টন ক্ষমতার ফ্লোটিং ক্রেন। আগামী নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের দিকে এটি মাওয়ায় পেঁৗছার কথা। পদ্মা সেতুর কর্মযজ্ঞে ব্যবহৃত এটিই সবচেয়ে বড় যন্ত্র। ১৭ অক্টোবর এক হাজার টন ওজনের একটি ভ্রাম্যমাণ ক্রেন মাওয়ায় পেঁৗছেছে। দুই হাজার কিলোজুল ক্ষমতার হ্যামারও মংলা থেকে রওনা হয়ে গত শনিবার বিকেলে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় পেঁৗছে। জার্মানির এই হ্যামার আগেই সমুদ্রপথে ১৭ অক্টোবর মংলা বন্দরে আসে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের (মূল সেতু) নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের গতকাল রোববার সমকালকে জানান, ১২ অক্টোবর চীনের জোহাও থেকে চার হাজার টন ওজন ধারণক্ষমতার ফ্লোটিং ক্রেনটি মাদার ভেসেলে করে সমুদ্রপথে রওনা হয়েছে। আগামী নভেম্বরের মধ্যে এটি মাওয়ায় পেঁৗছে যাবে। বিশাল এই ক্রেন দিয়ে পদ্মা সেতুকে দৃশ্যমান করা হবে। এক স্প্যান পরিমাণ (১৫০ মিটার) সুপারস্ট্রাকচার ক্রেনে তুলে নিয়ে পিলারের মধ্যে স্থাপন করা হবে। এক স্প্যান সুপারস্ট্রাকচারের ওজন প্রায় দুই হাজার ৯০০ টন।
সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, দুটি পিলারের ওপর স্প্যান গার্ডার বসানো এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই স্প্যান বসানোর পরই বহু কাঙ্ক্ষিত সেতুর আকৃতি স্পষ্ট হবে। এভাবে একের পর এক মোট ৪১টি পিলারের ওপর ১৫০ মিটার দীর্ঘ ৪১টি স্প্যান বসবে। এর পরই শতভাগ দৃশ্যমান হবে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাওয়া কুমারভোগের পদ্মার তীরে ট্রাস ফেব্রিকেশন ইয়ার্ডে সেতুর উপরিভাগের সুপারস্ট্রাকচার (স্প্যান) জয়েন্টের কাজ চলছে। চীন ও বাংলাদেশের শ্রমিকরা জয়েন্ট,
সেকশন, গার্ডার, টপকর্ড ও বটমকর্ড অংশের কাজ নিয়ে এখন মহাব্যস্ত।
এ পর্যন্ত দুটি স্প্যান এসেছে চীন থেকে। সেগুলো মাওয়া অংশে ওয়ার্কশপে জয়েন্ট দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অপরটির কাজও চলছে পুরোদমে। সেতুর নকশা পরিকল্পনা অনুযায়ী উপরের অংশে সোনালি রঙের দুটি স্প্যানের মধ্যে ৩৪টি জয়েন্ট হবে। এরই মধ্যে চারটি জয়েন্টের কাজ শেষ হয়েছে। একেকটি জয়েন্টের ওজন ৪৮ থেকে ৬০ টন। সেতুর প্রতিটি পিলারে ৬টি করে মোট ২৪০টি পাইল থাকবে। দুই প্রান্তে আরও ১২টি করে ২৪টি পাইল থাকবে। ইতিমধ্যে নদীতে কয়েকটি পিলার দৃশ্যমান হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ চলছে। এ ছাড়া নদীর দুই পাশের সংযোগ সড়কের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
সেতু কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানায়, জাজিরা অংশে সংযোগ সড়কের কাজ এগিয়েছে ৭৭ শতাংশ। মাওয়া অংশে কাজ বাকি আছে মাত্র ১ শতাংশ।
সংশ্লিষ্ট আরও একটি সূত্র জানায়, আসন্ন শুষ্ক মৌসুমে নদী শাসনের কাজ শুরু হবে। এর কর্মপরিকল্পনা পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাছে জমা দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কর্মপন্থা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। অনুমতি পাওয়ার ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে মাওয়া প্রান্তে নদী শাসনের কাজ শুরু হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.